আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি | Alamdanga Boddhovumi 09/05/2021


PC:


চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীর নৃশংস গণহত্যার নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙ্গালীদের নির্মমভাবে হত্যা করে এই বধ্যভূমিতে পুঁতে রাখা হত। দেশ স্বাধীন হবার পর এই বধ্যভূমিতে শত শত মানুষের মাথার খুলি ও হাড় পাওয়া যায়।

 

ইতিহাস থেকে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রথমে চুয়াডাঙ্গাকে অস্থায়ী রাজধানী হিসেবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে হিসেবে ১০ এপ্রিল, ১৯৭১ সালে চুয়াডাঙ্গায় শপথ নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ খবর পাকিরা জেনে যাওয়ায় চুয়াডাঙ্গার ওপর নজরদারি বাড়িয়ে দেয় এবং অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে বৈদ্যনাথতলার বর্তমানে মুজিবনগর ১৭ এপ্রিল অস্থায়ী সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। সেই সময় আলমডাঙ্গা স্টেশন বা প্রায়ই লালব্রিজের কাছে ট্রেন থেকে শত শত নারী-পুরুষ নামিয়ে নিয়ে নির্যাতন শেষে হত্যা করে এখানে পুঁতে রাখত পাকপিশাচরা। সে স্মৃতি স্মরণ রেখে বীরাঙ্গনের অন্যতম নেতা সোলাইমান ছেলুনের নেতৃত্বে এখানে বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ ও কমপ্লেক্স করা হয়।

 

২০০৯ সালে নরপশু পাকবাহিনী বাঙালি জাতির ওপর জঘন্যতম এ নির্যাতনের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন কমিটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। আলমডাঙ্গা বধ্যভূমির দেয়াল রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্র- ছাত্রী দ্বারা নকশাকৃত। বধ্যভূমির ভিতরে শহীদের ভাস্কর্য ও মিউজিয়ামে ১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের পর্যায়ক্রমিক ইতিহাসের সচিত্র ছবি স্থান পেয়েছে। ২০১২ সালে নির্মাণ করা হয় এ স্মৃতিস্তম্ভ। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য দর্শনার্থী মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই স্থানে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।

 

কিভাবে যাবেন?

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে পৌঁছে কুষ্টিয়াগামী বাসে আলমডাঙ্গা যাওয়া যায়। আলমডাঙ্গা থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে কালিদাস ইউনয়নের লালব্রিজের কাছেই আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি অবস্থিত। আলমডাঙ্গা পৌঁছে যেকোন স্থানীয় পরিবহনে বা পায়ে হেঁটে আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি পৌঁছাতে পারবেন।

 

কোথায় খাবেন?

আলমডাঙ্গায় হাল্কা চা, নাস্তা বা সাধারণ মানের বাঙ্গালী খাবার খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। তবে ভালমানের খাবারের জন্য চুয়াডাঙ্গা শহরে আসতে হবে। চুয়াডাঙ্গা শহরে কলেজ রোড সংলগ্ন বেশ কিছু উন্নতমানের রেস্তোরাঁ আছে। সুযোগ থাকলে চুয়াডাঙ্গার বিখ্যাত কালিপদের মিষ্টি খেয়ে দেখতে পারেন।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?