ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
ঝরঝরি ট্রেইল | Jorjori…
02/05/2021
ধুপপানি ঝর্ণা | Dhuppani…
16/04/2021
02/05/2021
16/04/2021
02/05/2021
16/04/2021
PC: Saiful Islam
সুদূর আরব দেশে জন্মগ্রহণ করেও ইসলাম ধর্ম প্রচারে ভারতবর্ষে এসেছিলেন আধ্যাত্মিক সাধক বাবা আদম। উপমহাদেশে সেন শাসনামলে ১১৭৮ সালে ধলেশ্বরীর তীরে মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমে আসেন তিনি। তখন বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জ ছিল বল্লাল সেনের রাজত্বে। ওই বছরই বল্লাল সেনের হাতে প্রাণ দিতে হয় তাঁকে। শহীদ বাবা আদমকে মিরকাদিমের দরগাবাড়িতে দাফনের পর তাঁর মাজারের পাশে ১৪৮৩ সালে নির্মাণ করা হয় বাবা আদম মসজিদ (Baba Adam's Mosque)। এটি ছিল তাঁর মৃত্যুর ৩১৯ বছর পরের ঘটনা। মুন্সিগঞ্জ জেলার মীরকাদিমের দরগাবাড়ী গ্রামে কাফুরশাহ্ কর্তৃক নির্মিত ছয় গম্বুজ বিশিষ্ট বাবা আদম মসজিদ অবস্থিত।
মসজিদটি আয়তাকার ভিত্তি ভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত। উত্তর-দক্ষিণে এর আয়তন ৪৩ ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৩৬ ফুট। চার কোণায় চারটি অষ্ট কোণাকৃতির বুরুজ বা মিনার। পশ্চিম দেয়ালে তিনটি অর্ধবৃত্তাকার অবতল মেহরাব। কেন্দ্রী মেহরাবের পেছন দিকের দেয়াল বাইরের দিকে উদগত। সামনের দেয়ালের ধনুকাকৃতির খিলানবিশিষ্ট তিনটি প্রবেশপথে আয়তাকারে নির্মিত যে সব ফ্রেম আছে তার শীর্ষ দেশে অতি সুন্দর কারুকাজ আছে। প্রধান প্রবেশ পথের দুই পাশে গভীর সমতল কুলুঙ্গী। উপরিভাগ সুন্দরভাবে খাঁজকাটা। ঝুলন্ত শিকল ও ঘন্টার অলংকরণ রয়েছে। মসজিদে কোন বারান্দা নেই। অভ্যন্তর ভাগে আছে গ্রানাইট পাথরে নির্মিত দুইটি স্তম্ভ। অভ্যন্তর ভাগ এই দুইটি স্তম্ভের সাহায্যে পূর্ব পশ্চিমে দুই সারিতে এবং উত্তর-দক্ষিণে তিন সারিতে বিভক্ত। স্তম্ভ দুইটি মাঝ থেকে ৪ (চার) ফুট পর্যন্ত অষ্টকোণাকৃতির এবং এর পর ষোলকোণাকৃতির। এই দুইটি স্তম্ভ এবং চারপাশের দেয়ালের উপর মসজিদের অর্ধবৃত্তাকার ছোট ছোট গম্বুজ ছয়টি স্থাপিত।
গম্বুজ ও মসজিদের অভ্যন্তর-ভাগের মতোই পূর্ব-পশ্চিমে দুই এবং উত্তর-দক্ষিণে তিন সারিতে বিভক্ত। দেয়াল অতিশয় পুরু।প্রধান মেহরাবটি এবং দুই পাশের দুই মেহরাব ও পাশের দেয়াল লতাপাতা, জ্যামিতিক নক্সা ও ও গোলাপফুল, ঝুলন্ত প্রদীপ ও শিকল প্রভৃতি অত্যন্ত সুন্দর পোড়ামাটির চিত্র ফলক দিয়ে অলংকৃত। মসজিদের বাইরের দিক বিশেষ করে সামনের দেয়াল অতি সুন্দর পোড়ামাটির চিত্রফলক দিয়ে অলংকৃত ছিল। কেন্দ্রীয় প্রবেশপথের দুইপাশে কিছু কিছু চিত্রফলকের কাজ এখনও চোখে পড়ে।
১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ঐতিহ্যবাহী বাবা আদম মসজিদটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে আনা হয় এবং ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এই মসজিদের ছবি দিয়ে ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়। বছর জুড়ে দেশ বিদেশের অসংখ্য দর্শনার্থীরা এই মসজিদ দেখতে আসেন।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে সড়ক পথে মুন্সিগঞ্জের দূরত্ব মাত্র ২৩ কিলোমিটার। ঢাকার গুলিস্থান, আবদুল্লাপুর বা মিরপুর থেকে মাওয়াগামী বাসে চড়ে মুন্সিগঞ্জে যাওয়া যায়। মুন্সিগঞ্জ হতে রিকশা নিয়ে ৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই বাবা আদম মসজিদ পৌঁছে যাবেন।
কোথায় থাকবেন?
একদিনে ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জ ঘুরে ফিরে আসা যায়। তবুও রাত্রিযাপনের প্রয়োজনে জেলা সদরে অবস্থিত হোটেল থ্রি স্টার, হোটেল কমফোর্ট সহ বেশকিছু আবাসিক হোটেল পাবেন। মুন্সিগঞ্জের আকর্ষণীয় রিসোর্টের মধ্যে পদ্মা, মাওয়া ও মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
কোথায় খাবেন?
মুন্সিগঞ্জে ভালো মানের খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। মুন্সিগঞ্জের চিত্তর দই, আনন্দর মিষ্টি, খুদের বৌউয়া (খুদের খিচুড়ি) এবং ভাগ্যকুলের মিষ্টি বেশ জনপ্রিয় খাবার।