ভাওয়াল রাজবাড়ী | Bhawal Rajbari 12/01/2022


PC:


PC:Shah Md Sultan

গাজীপুর জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রায় ৫ একর জায়গার ওপর কালের সাক্ষী হয়ে প্রায় অক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঐতিহাসিক ভাওয়াল রাজবাড়ী (Bhawal Rajbari)। আগের সময়ের মতো জমিদারি নেই, কিন্তু সেই আমলের জমিদারবাড়ীতে এখনো মিশে আছে জমিদারি। বাড়ির আঙিনায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অতীতের গল্পকথা। ভাওয়ালের জমিদারি বিলুপ্ত হলেও রয়ে গেছে সেই জমিদারবাড়ীটি। ভাওয়ালের সেই জমিদারের জমিদারি ঘুরে দেখতে গেলে পাবেন পুরনো স্মৃতির বেমিশাল স্বাদ।

 

এই রাজবাড়ীর সাথে জড়িয়ে আছে ভাওয়াল রাজা সন্ন্যাসী রমেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরীর মৃত্যু ও ১২ বছর পরে আবির্ভাবের কাহিনী। মৃত্যুর পর এক রাজার জীবিত হয়ে ফিরে আসার কাহিনী নিয়ে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ভাওয়াল গড়ের সুউচ্চ এই প্রাসাদ। সেই রাজা হলেন রমেন্দ্র নারায়ণ। যিনি ছিলেন ভাওয়াল রাজবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণের দ্বিতীয় সন্তান। ১৯০১ সালে রাজেন্দ্র নারায়ণ, পরে তার দুইভাই ও ১৯০৭ সালে মা- রানী বিলাসমনীর মৃত্যুর পর রাজা হন রমেন্দ্র নারায়ণ। একই বছর বিভাবতীকে বিয়ে করেন তিনি। ১৯০৯ সালে অসুস্থ হয়ে দার্জিলিংয়ে মারা যান রাজা রমেন্দ্র। তাকে শ্মশানে নেয়ার পর হঠাৎ ঝড় উঠলে রানী বিভাবতী-সহ সবাই মৃতদেহ সৎকার না করে চলে যায়। তখনই প্রশ্ন উঠে বিভাবতীর পতিসেবা নিয়ে। এখানেই ঘটনার শেষ নয়, মৃত্যুর ১২ বছর পর সন্ন্যাসী বেসে রাজা রমেন্দ্র নারায়ণ রায় ফিরে আসেন জয়দেবপুরে। আদালতেও প্রমাণ হয় তিনিই সেই রাজা রমেন্দ্র। কিন্তু রায়ের মাত্র ৩দিন পরেই মারা যান তিনি। আর এর মধ্য দিয়েই বিলুপ্তি ঘটে ভাওয়াল রাজ বংশের।

 

রাজবাড়ীর প্রবেশমুখে প্রশস্ত বারান্দা, এরপর একটি হলঘর। ওপরে ওঠার জন্য আগে শাল কাঠের প্রশস্ত সিঁড়ি ছিল, যা এখন নষ্ট হয়ে গেছে। পশ্চিম দিকে রয়েছে বিশাল দীঘি। নাটমন্দির রয়েছে বাড়ির মধ্যখানে। এটি লম্বালম্বি বড় টিনের ঘর। টিনের ঘরের ঠিক মাঝখানে মঞ্চটির অবস্থান। এখানে বাইজিদের নাচ-গানের আয়োজন করা হতো। রাজবিলাস নামের একটি কামরা ছিল, যা জমিদারের মনোরঞ্জনের জন্য বরাদ্দ থাকত। এ ছাড়া রাজার বিশ্রামাগার হাওয়ামহলও ছিল একই ভবনের নিচতলায়। দক্ষিণ দিকের খিলানযুক্ত উন্মুক্ত কক্ষটি হচ্ছে ’পদ্মনাভি’। মাঝের বড় ঘরটির নাম ‘রানীমহল’। ছোট-বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৩৬০টি কক্ষের ইতিহাস এ জমিদারবাড়ীটির।

 

কীভাবে যাবেন?

দেশের যে কোনো স্থান থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা হয়ে শিববাড়ী মোড় যেতে হবে । ঢাকা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে জমিদারবাড়ি যেতে হয়। রাজবাড়ীতে ভ্রমণের জন্য নিজের কিংবা ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ডান দিকে রাস্তাটি গেছে জয়দেবপুর সদর বরাবর। জয়দেবপুর সদর রেল ক্রসিং পার হয়ে সামান্য সামনে এগিয়ে গেলেই রানী বিলাসমণি স্কুল। এ স্কুলের ঠিক বিপরীত পাশেই ভাওয়াল রাজবাড়ীটি অবস্থিত। আর রাজবাড়ী থেকে ১ কি.মি. উত্তরে এগিয়ে গেলে মিলবে রাজবাড়ী শ্মশান।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?