বাংলাদেশের একসময়ের জমিদার বাড়িগুলো এখন প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। দেশের অন্যান্য জেলার মতো কুড়িগ্রামেও জমিদার বাড়িগুলোর জৌলুস অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। কুড়িগ্রামের জমিদার বাড়িগুলোর মধ্যে ভেতরবন্দ জমিদার বাড়ি (Bhetarbandh Zamindar Bari) অন্যতম। কুড়িগ্রাম জেলা সদর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে এই জমিদার বাড়ি অবস্থিত। এটি নাগেশ্বরী উপজেলার ভেতরবন্দ ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত।

ইংরেজরা যখন এই দেশ শাসন করছিল তখন ভেতরবন্দের সদর দপ্তর ছিল রাজশাহী জেলায়। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের হাত ধরে যখন জমিদারির প্রচলন শুরু হয় তখন ভেতরবন্দ পরগণার সদর দপ্তর নাগেশ্বরী উপজেলার ঈেতরবন্দে স্থানান্তর করা হয়। মূলত তখনই এখানে জমিদারদের শিকড় ছড়িয়ে পড়ে। তবে কোনো জমিদার এবং কাদের জমিদারি আমলে এই জমিদার বাড়ি গড়ে ওঠে সেটা জানা যায় নি।

অন্যান্য জমিদার বাড়ির মত এই জমিদার বাড়ির নির্মাণশৈলিতেও রুচিশীলতার ছাপ পাওয়া যায়। তবে অন্য জমিদার বাড়ির সাথে এই জমিদার বাড়ির পার্থক্য স্থাপত্য উপকরণে। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে ভেতরবন্দ জমিদার বাড়ি ইট-পাথর-চুনের পরিবর্তে কাঠ দিয়ে তৈরি। তবে মূল প্রবেশদ্বার ইট, সুড়কি ও চুন দিয়ে তৈরি। বিশাল বড় প্রবেশদ্বারটি গোলাকার খিলান আকৃতির। খিলানের পাশে রয়েছে লম্বা স্তম্ভ। সময়ের বিবর্তনে জমিদার বাড়ির পলেস্তারা উঠে ইটগুলো যেন উঁকি দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছে। কাঠ দিয়ে নির্মিত ভেতরবন্দ জমিদার বাড়ির প্রায় অর্ধেক অংশ কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে, বর্তমানে টিকে থাকা জমিদার বাড়ির বাকি অর্ধেকাংশে ভেতরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় হিসাবে পরিচালনা করা হচ্ছে।

কিভাবে যাবেন?

কুড়িগ্রাম থেকে সিএনজি কিংবা ইজিবাইকে চড়ে নাগেশ্বরী উপজেলায় ভেতরবন্দ জমিদার বাড়ি যাওয়া যায়।

কোথায় থাকবেন?

কুড়িগ্রাম শহরের ঘোষপাড়া ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের কাছে বিভিন্ন মানের বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল আছে। আবাসিক হোটেলগুলোর মধ্যে হোটেল অর্নব প্যালেস, হোটেল ডিকে, হোটেল স্মৃতি, হোটেল নিবেদিকা ও হোটেল মেহেদী উল্লেখযোগ্য।

কোথায় খাবেন?

কুড়িগ্রামের শাপলা মোড়ে অবস্থিত নান্না বিরিয়ানি বা এশিয়া হোটেলের খাবার বেশ ভালো। সিদল ভর্তা ও তিস্তা নদীর বৈরাতী মাছ কুড়িগ্রামের খুবই জনপ্রিয় খাবার।