ভীমের জাঙ্গাল | Bhimar Jangal 21/01/2022


PC:


ভীমের জাঙ্গাল (Bhimar Jangal) প্রাচীন বা মধ্য যুগের প্রথম দিকে উত্তর বাংলার বরেন্দ্র অঞ্চলে নির্মিত একটি সড়ক ও বাঁধ। এর বিদ্যমান ধ্বংসাবশেষ সিরাজগঞ্জের সীমানার কাছাকাছি থেকে উত্তর-পশ্চিমে শেরপুর অতিক্রম করে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীর ধরে বগুড়া শহরের প্রান্ত ঘেঁষে আরও উত্তর দিকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার গিয়ে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার দামুকদহের বিলে মিশেছে। পরে তা দিনাজপুর জেলার বিরাটনগর ও ঘোড়াঘাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে। অনেকের মতে, এই জাঙ্গাল ঘোড়াঘাট থেকে উত্তরে নীলফামারী জেলার ডোমার পর্যন্ত, আবার কারও কারও মতে, ঘোড়াঘাট থেকে পূর্বে আসামের কামরূপ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

 

প্রত্নতাত্ত্বিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভীমের জাঙ্গালে ৩৬ টি “মাউন্ড” বা গড় রয়েছে। যার মধ্যে গোবিন্দভিটা ও ভাসু বিহার সংরক্ষণ করা হয়েছে। স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী, ভীমের জাঙ্গাল নির্মাণ করেন ভীম নামে এক রাজা যাঁর পরিচয় অজ্ঞাত। তবে অনেকের মতে, তিনি দ্বিতীয় পান্ডব ভীম কিংবা ভগীরথ রাজবংশের অনঙ্গভীম, গজভীম ও রণভীম, এঁদের কোন একজনের সঙ্গে অভিন্ন হতে পারেন। আবার অন্যদের মতে, তিনি ছিলেন বারো শতকের রাজা ভীম, যাঁর পিতৃব্য কৈবর্ত-প্রধান দিব্য পাল রাজবংশের দ্বিতীয় মহীপালএর কাছ থেকে বরেন্দ্র জয় করেছিলেন। দিব্যের (দিব্যোক) পর সিংহাসনে বসেন তাঁর ভাই রুদক এবং রুদকের পর রাজা হন তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র ভীম। তিনি পালবংশীয় রাজা রামপাল কর্তৃক পরাজিত ও নিহত হন। এরূপ বিশ্বাস প্রচলিত আছে যে, সম্ভাব্য পাল আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষাব্যূহ হিসেবে এই ভীমই জাঙ্গালটি নির্মাণ করেন। তবে এই জনশ্রুতি স্বীকৃত তথ্য দ্বারা প্রমাণ সাপেক্ষ।

 

কোন কোন স্থানে এই জাঙ্গাল ১২ মিটার উঁচু ও ৬ মিটার চওড়া। এর উৎপত্তি বা নির্মাণের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি। তবে অনুমিত হয়, বহিঃশত্রুর সম্ভাব্য আক্রমণের বিরুদ্ধে ইতালির বৃত্তাকার দুর্গের মতো প্রতিরক্ষাব্যূহ হিসেবে এই জাঙ্গাল নির্মিত হয়েছিল। এছাড়াও তৎকালীন প্রতি বছর বন্যাপ্লাবিত এই অঞ্চলে প্রাচীন সড়ক হিসেবেও সম্ভবত এটি ব্যবহূত হতো।

 

কিভাবে যাবেন?

বগুড়া শহর হতে সিএনজি বা অটো রিকশা ভাড়া নিয়ে ভীমের জাঙ্গালের বিভিন্ন স্থানে যাওয়া যায়।

 

কোথায় থাকবেন?

বগুড়ায় রাত্রিযাপনের জন্য সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন আবাসনের ব্যবস্থা আছে। বেসরকারী হোটেলের মধ্যে পর্যটন মোটেল, হোটেল নাজ গার্ডেন, মম ইন, সেঞ্চুরি মোটেল, হোটেল সিয়েস্তা, আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল ও নর্থওয়ে মোটেল উল্লেখযোগ্য।

 

কোথায় খাবেন?

বগুড়া শহরে ভাল মানের হোটেল ও রেস্তোরার মধ্যে সাথী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, মায়ের দোয়া হোটেল, অতিথি গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, চাপ কর্নার ও হোটেল সাফিনা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বগুড়ার বিখ্যাত দইয়ের সুনাম রয়েছে বিশ্বজোড়া।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?