ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
ঝরঝরি ট্রেইল | Jorjori…
02/05/2021
ধুপপানি ঝর্ণা | Dhuppani…
16/04/2021
02/05/2021
16/04/2021
02/05/2021
16/04/2021
প্রকৃতিকন্যা খ্যাত বাংলদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে প্রতিষ্ঠিত উদ্ভিদরাজির বিরল সংগ্রহশালা বোটানিক্যাল গার্ডেন (Botanical Garden)। বিলুপ্ত ও প্রায় বিলুপ্ত উদ্ভিদরাজিকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে ১৯৬৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ এবং তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওসমান গণির হাত ধরে ২৫ একর জমি নিয়ে বোটাগার্ডেন যাত্রা শুরু করে।
দেশের মূল্যবান উদ্ভিদ প্রজাতি বিশেষ করে বিরল প্রজাতির হার্বজাতীয় ঔষধি ও সুগন্ধি জাতীয় উদ্ভিদ সংরক্ষণের জন্য রয়েছে পট হাউজ নামে বিশেষ সংরক্ষণাগার। ঔষধি জোনে রয়েছে ৪৮ প্রজাতির উদ্ভিদ। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- অশ্বগন্ধা, ব্রাউনিয়া, কর্পুর, আগর, অঞ্জন, অ্যানথেরিয়াম ইত্যাদি। ক্যাকটাস ও অন্যান্য সংবেদনশীল উদ্ভিদ সংরক্ষণের জন্য দুটি বড় গ্রিন হাউজ রয়েছে গার্ডেনটিতে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা বোটানিক গার্ডেনস কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনাল (বিজিসিআই) কতৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বাংলাদেশের প্রথম বোটানিক্যাল গার্ডেনে ১০০০টি বড়, ১২৭৮টি মাঝারি এবং ৪৪৬৭টি ছোট বৃক্ষ সহ প্রায় ৬০০টি বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ফুলের মধ্যে রয়েছে- জেসিয়া, সিলভিয়া, হৈমন্তি, ক্যামেলিয়া, আফ্রিকান টিউলিপ, ট্যাবেবুইয়া, রাইবেলী, অ্যাস্টার, কসমস, ডায়ান্থাস, রঙ্গণ ইত্যাদি। ফলের মধ্যে রয়েছে- স্টার আপেল, আমেরিকান পেয়ারা, কমলা, আঙুর, প্যাসান ফল এবং বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফল। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে- ডেফল, নাগলিঙ্গম, কালাবাস, কারিলিফ, ফলসা, মনহোটা, পেয়ালা, মাক্কি, বনডুবি, লোহাকাট, উদাল, পানবিলাস, অর্জুন, বয়রা, হরতকি, কাটাসিংড়া, টিকমা, প্যাপিরাস, রাইবেলী, স্ট্যাভিয়া, হিং, পেল্টোফোরাম ইত্যাদি।
গার্ডেনের সৌন্দর্য বর্ধন এবং দর্শনার্থীদের অধিক বিনোদনের জন্য বন্য পশু-পাখির প্রতিকৃতি নির্মাণ করে বিভিন্ন দর্শণীয় পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিকৃতির মধ্যে দ্বীপ জোনে দুটি রাজহাঁস ও দুটি সারস (বড় সাদা বক), গেইটের সম্মুখে পাইন গাছের গোড়ায় পশুর রাজা সিংহ, অরকোরিয়া গাছের গোড়ায় শান্ত ভদ্র প্রাণী হরিণ, বাগানের ভেতরের প্রবেশ দ্বারের প্রথম আর্চের সামনে হিংস্র রয়েল বেঙ্গল টাইগার, পাশেই অন্য আর্চের উপর ছানাসহ বাঘের মাসী বিড়াল এবং গেইট সংলগ্ন জোনের কেন্দ্র বিন্দুতে সকল দর্শাণার্থীদের শুভ কামনায় শাবকসহ প্রার্থনারত অবস্থায় দন্ডায়মান রয়েছে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের জাতীয় পশু ক্যাঙ্গারু।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে থেকে একজন দুই বছরের জন্য গার্ডেন কিউরেটরের দায়িত্ব পালন করেন। এই বোটানিক্যান গার্ডেনটি স্নাতক, মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থীদের গবেষণা কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও আশেপাশের অন্যান্য জেলা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রছাত্রীরা উদ্ভিদজগত সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের জন্য বোটানিক্যাল গার্ডেনে আসেন। বিপুল উদ্ভিদরাজি ছাড়াও এখানে আগত দর্শনার্থীদের জন্য আছে বিভিন্ন পশু-পাখির প্রতিকৃতি এবং প্রায় অর্ধশত বিশ্রাম বেঞ্চ।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ বাকৃবির শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রবেশ করতে পারে। সাধারণ দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশের জন্য প্রবেশ কুপন সংগ্রহ করতে হয়। বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রতি সপ্তাহের রবি থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সকল দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। আর সপ্তাহের শুক্রবার ও শনিবার খোলা থাকে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে ময়মনসিংহ জেলা শহরে এসে রিকশা বা অটোরিকশা নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেন যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেলের মধ্যে আমির ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল মুস্তাফিজ, হোটেল সিলভার ক্যাসেল, হোটেল হেরা, হোটেল খাঁন ইন্টারন্যাশনাল, নিরালা রেস্ট হাউস, হোটেল ঈশা খাঁ, হোটেল উত্তরা, তাজমহল ইত্যাদি অন্যতম।
কোথায় খাবেন?
ময়মনসিংহ শহরে প্রেসক্লাব ক্যান্টিনের মোরগ পোলাও চেখে দেখতে পারেন। এছাড়া হোটেল ধানসিঁড়ি ও হোটেল সারিন্দার ভাল মানের খাবারের জন্য বেশ সুনাম রয়েছে।