ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
ঝরঝরি ট্রেইল | Jorjori…
02/05/2021
ধুপপানি ঝর্ণা | Dhuppani…
16/04/2021
02/05/2021
16/04/2021
02/05/2021
16/04/2021
মৌর্য, সেন, পাল, মোঘল বংশের রাজাদের রাজত্বের স্মৃতিবিজড়িত স্থান এবং বাংলার ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক ও স্থাপত্যের নিদর্শনে ভরপুর পাবনা জেলা। ইতিহাস বলে পাবনার অন্যতম প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র চাটমোহর একদা ছিলো মোঘল-পাঠানদের অবাধ বিচরণভূমি। পাবনা জেলা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে চাটমোহর উপজেলার কেন্দ্রস্থলে প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের অপূর্ব এক নিদর্শন ঐতিহাসিক চাটমোহর শাহী মসজিদ (Chatmohar Shahi Mosque) অবস্থিত। মসজিদ থেকে প্রাপ্ত শিলালিপির তথ্য মতে, ১৫৮১ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট আকবরের শাসনামলে সৈয়দ নেতা আবুল ফতে মোহাম্মদ মাসুম খাঁর অর্থায়নে তারই সহোদর মুহামদ্দ বিন তুর্কি খান কাকশাল চাটমোহরে মসজিদটি নির্মাণ করেন।
মাসুম খাঁ কাবলি সম্রাট আকবরের ৫ হাজার সৈন্যের অধিনায়ক ছিলেন। তার পূর্ব পুরুষ সুলতান হুসাইন শাহ’র আমলে কাবুল থেকে এদেশে এসে চাটমোহর অঞ্চলে জায়গীর লাভ করেন এবং বসবাস শুরু করেন। এখানেই জন্ম হয় মাসুম খাঁ’র। তার পূর্বপুরুষরা কাবুলের খোরাশানের তুরাবতী বংশের কাকশাল গোত্রের সৈয়দ ছিলেন। তার চাচা মীর্জা আজিজ কাকশাল সম্রাটের উজির ছিলেন। মাসুম খাঁ মাত্র কুড়ি বছর বয়সে সম্রাট আকবরের সৈন্যদলে যোগ দেন। সাহসীকতায় তিনি সহসাই পাঁচহাজারী মসনদদার পদে উন্নীত হন। মাসুম খাঁ কাবলি বাংলার বারভূঁইয়াদের বিদ্রোহকালে তাদের দলে যোগ দেন। আকবরের সেনাপতি ও গভর্ণর শাহবাজ খানের সাথে যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে শীতলক্ষা তীরের (গাজিপুর) গহীন অরণ্যে আত্নগোপন করেন। সেখানেই ৪৪ বছর বয়সে তিনি পরলোকগমন করেন।
লাল জাফরী ইটে নির্মিত এই মসজিদটি তিন গম্বুজ বিশিষ্ট। জাফরী ইট বলা হয় কারণ এই ইটগুলো বর্তমান সময়ের ইটের মত মোটা হত না এই ইটগুলো চিকন চিকন হয় বলেই জাফরী বলা হয়। বগুড়ার খেরুয়া মসজিদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ছোট ছোট পাতলা জাফরী ইটের সমন্বয়ে নির্মিত চাটমোহর শাহী মসজিদের দৈর্ঘ্য ৪৫ ফুট, প্রস্থ ২২ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং উচ্চতা ৪৫ ফুট। সম্মুখ ভাগে তিনটি খিলান আকৃতির গেট রয়েছে ও পশ্চিমপাশে এ রকম খিলান আকৃতির আরো দুইটি গেট আছে। মসজিদের অভ্যন্তরে মেহরাবের চারদিকে ইটের কারুকার্য লক্ষণীয়। এ মসজিদের অভ্যন্তরে ছোট ছোট চারটি কুলুঙ্গী রয়েছে। মসজিদের বাইরে এবং ভেতরে দেয়ালগাত্রে জাফরী ইটের সুন্দর কারুকার্য দেখা যায়। অনেকের মতে, এই খিলান পরিকল্পনার মূলে আছে প্রাচীন পারস্যের সাসনীয় স্থাপত্যের প্রভাব। সাসনীয় আমলে ইরানে এ রকম খিলান তৈরীর কৌশল উদ্ভব হয়েছিল। মাসুম খাঁ কাবুলী নির্মিত মসজিদটি’র ভেতরে একটি কালো বর্ণের ফলক ছিলো যা বর্তমানে রাজশাহী বরেন্দ্র মিউজিয়ামে রক্ষিত আছে। ফলকে খোদাইকৃত পার্সী অক্ষরে মসজিদ নির্মাণের ইতিহাসলিপিবদ্ধ আছে। মসজিদের সামনে ইঁদারার মধ্যে কলেমা তৈয়বের শিলালিপি দেখা যায়।
কিভাবে যাবেন?
পাবনা জেলা শহর থেকে বাস বা সিএনজি নিয়ে চাটমোহর উপজেলার ২০০ গজ পশ্চিম দিকে অবস্থিত চাটমোহর শাহী মসজিদ পৌঁছাতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
পাবনা জেলা সদরে রাত্রিযাপনের জন্য হোটেল প্রবাসী ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল মুন, লাকি হোটেল, হোটেল রোহান, হোটেল পার্ক বোর্ডিং ও হোটেল ছায়ানীড় প্রভৃতি আবাসিক হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন?
চাটমোহর উপজেলায় তৃপ্তি হোটেল, স্টার হোটেল, সাইফ হোটেল, স্বাদ রেস্টুরেন্ট সহ আরো কয়েকটি খাবারের হোটেল রয়েছে। এছাড়া পাবনা শহরে চাইনিজ, বাংলা ও ফাস্টফুড খাবারের জন্য ভালো মানের অসংখ্য রেস্তোরাঁ পাবেন।