ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
ঝরঝরি ট্রেইল | Jorjori…
02/05/2021
ধুপপানি ঝর্ণা | Dhuppani…
16/04/2021
02/05/2021
16/04/2021
02/05/2021
16/04/2021
হাওর, নদী আর মিঠাপানির জলাভূমির বৈচিত্র্যময় ভূপ্রকৃতির জন্য বিখ্যাত কিশোরগঞ্জ। চারদিকে শুধু থৈ থৈ পানির রাজ্য আর সবুজ শ্যামলিমা। বর্ষাকালে হাওরগুলো যেন শৈল্পিক রূপ লাভ করে। তখন দুচোখে শুধু দিগন্তজোড়া সাগরসম অথৈ পানির বিস্তৃতি লক্ষ করা যায়। আবার কোথাও কোথাও মাথা চারা দিয়ে উঠে একটি দুটি সবুজ বৃক্ষ, দ্বীপের মত ভাসমান একটি দুটি কিংবা একগুচ্ছ বসতবাড়ি।
সম্প্রতি হাওরের বুকে গড়ে উঠেছে দৃষ্টি নন্দন সড়ক। সরীসৃপের মতো গভীর হাওরের বুকের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে এই নবনির্মিত সড়ক। ইটনা হাওরে (Itna Upazila) নৌকায় ভাসতে ভাসতে দেখতে পাবেন জেলেদের মাছ ধরা, ঝাঁকে ঝাঁকে পানকৌড়ির এখান থেকে ওখানে ছুটে চলার দৃশ্য। এছাড়াও চোখে পড়বে নানা প্রজাতির পাখি। আর হাওরের বুকে সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য বর্ষায় যেন সমুদ্র সৈকতকেও হার মানায়। ইটনায় দুইটি উল্লেখযোগ্য হাওর অবস্থিত। শনির হাওর ও ধনপুরের হাওর।
ইটনা সদরে অবস্থিত ‘ইটনা শাহী মসজিদ‘ উপজেলার সমস্ত দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। মোগল স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত ইটনা শাহী মসজিদটি একটি বেদির উপর স্থাপিত। এছাড়া আরো আছে ধনপুর ইউনিয়নের কাঠইর গ্রামে রয়েছে ইটনার সূর্য্যসন্তান জমিদার গুরুদয়াল সরকারের বাড়ি। ইটনার জয়সিদ্ধিতে রয়েছে আনন্দ মোহন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আনন্দ মোহন বসুর বাড়ি। বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু সম্পর্কে আনন্দ মোহন বসুর মামা হতেন।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা হতে ট্রেনে কিশোরগঞ্জ: কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশান থেকে সকাল ৭ টা ১৫ মিনিটে এগারোসিন্ধুর ট্রেনে উঠলে দুপুর ১১ টার মধ্যে কিশোরগঞ্জ পৌঁছাতে পারবেন। ট্রেনের টিকেট কাটতে শ্রেনী ভেদে ১২৫ টাকা থেকে ২০০ টাকা লাগবে। এরপর ইজিবাইক (অটো) দিয়ে মাত্র ৫ টাকা ভাড়ায় কিংবা ৫ মিনিট পায়ে হেঁটে আসতে হবে শহরের একরামপুর মোড়ে।
ঢাকা থেকে বাসে কিশোরগঞ্জ: মহাখালী বাস স্ট্যান্ড থেকে কিশোরগঞ্জ গামী “অনন্যা পরিবহন” বা গোলাপবাগ বাস স্ট্যান্ড থেকে কিশোরগঞ্জগামী অনন্যা সুপার কিংবা যাতায়াত বাসে কিশোরগঞ্জের শহরস্থ গাইটাল বাসস্ট্যান্ড চলে আসুন। জনপ্রতি বাস ভাড়া ২০০-২২০ টাকা। মহাখালী থেকে সময় লাগবে ৩ ঘন্টার মত এবং গোলাপবাগ থেকে ৪ ঘন্টার মত। আর গোলাপবাগ থেকে হাওর বিলাস কিংবা উজান ভাটি বাসে আসেন তবে সরাসরি চামটা বন্দর/ চামটা ঘাটে নামতে পারবেন। এক্ষেত্রে কিশোরগঞ্জ শহর থেকে অন্য পরিবহণে আপনাকে চামটা বন্দর আসতে হবে না। তবে কিশোরগঞ্জের কোন বাস সার্ভিসই তেমন ভালনা। তার মধ্যে তুলনামূলক ভাল সার্ভিস ভাল মহাখালীর অনন্যা পরিবহন এবং গোলাপবাগ থেকে যাতায়াত বাস সার্ভিস।
যদি অনন্যা সুপার কিংবা যাতায়াত বাসে কিশোরগঞ্জের গাইটাল বাসস্ট্যান্ড এসে নামেন তবে সেখান থেকে ইজিবাইক দিয়ে শহরের একরামপুর মোড়ে চলে আসুন।
কিশোরগঞ্জ থেকে ইটনা: একরামপুর মোড় হতে সিএনজি কিংবা মহেন্দ্রতে চড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা ভাড়ায় চামটা ঘাট আসতে হবে। একরামপুর থেকে চামটা ঘাটের দূরত্ব বিশ কিলোমিটার। চামটাঘাট থেকে ইটনা যাবার জন্য ট্রলারে পাওয়া যায়। চামটা ঘাট হতে প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে শুরু করে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত নিয়মিত বিরতিতে ইটনার উদ্দেশ্যে ট্রলার ছেড়ে যায়। একইভাবে ইটনা থেকেও প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে শুরু করে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ট্রলার চলাচল করে। ট্রলারে করে ইটনা যেতে ৬০ টাকা ভাড়া লাগে, আর সময় লাগে প্রায় দুই ঘন্টা। বলে রাখা ভাল কিশোরগঞ্জের স্থানীয় মানুষ চামটা ঘাট-কে আঞ্চলিক ভাবে ‘চামড়া ঘাট’ নামে ডাকে।
কোথায় থাকবেন?
পর্যটকদের জন্য ইটনায় বলার মত তেমন ভাল আবাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। কিছু সাধারণ মানের রেস্ট হাউজ রয়েছে। ইটনা জেটি থেকে ডান দিকে ঠাকুর গেস্ট হাউসে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায় থাকার জন্য রুম পেয়ে যাবেন। তবে উপজেলা পরিষদের ডাক বাংলোতেও চাইলে থাকতে পারবেন। এছাড়া ভাল মানের হোটেলে রাত্রি যাপনের জন্য আপনাকে কিশোরগঞ্জ জেলায় ফিরে আসতে হবে। কিশোরগঞ্জ শহরে বিভিন্ন মানের বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে গাংচিল, ক্যাসেল সালাম, রিভারভিউ, উজান ভাটি উল্লেখযোগ্য।
কোথায় খাবেন?
ইটনা বাজারে খাবারের জন্য বেশকিছু হোটেল পাবেন। হাওরের তাজা মাছের বিভিন্ন পদ দিয়ে বেশ ভালোমতই উদরপূর্তি করে নিতে পারবেন। এছাড়া মিষ্টি প্রিয় হলে কিশোরগঞ্জ শহরের মদনগোপাল বা রাজমনী সুইটসের মালাইকারী, একরামপুর ব্রিজের কাছে লক্ষীভান্ডারের রসমালাই টেস্ট করবেন।