মিঠামইন হাওর | Mithamoin Haor 13/01/2022


PC:


হাওর, নদী আর মিঠাপানির জলাভূমির বৈচিত্র্যময় ভূপ্রকৃতির জন্য বিখ্যাত কিশোরগঞ্জ। চারদিকে শুধু থৈ থৈ পানির রাজ্য আর সবুজ শ্যামলিমা। বর্ষাকালে হাওরগুলো যেন শৈল্পিক রূপ লাভ করে। তখন দুচোখে শুধু দিগন্তজোড়া সাগরসম অথৈ পানির বিস্তৃতি লক্ষ করা যায়। আবার কোথাও কোথাও মাথা চারা দিয়ে উঠে একটি দুটি সবুজ বৃক্ষ, দ্বীপের মত ভাসমান একটি দুটি কিংবা একগুচ্ছ বসতবাড়ি।

 

নিকলি, অষ্টগ্রাম, ইটনা হাওরের হাওরের পাশাপাশি এখানকার আরেকটি দৃষ্টিনন্দন হাওর হচ্ছে মিঠামইন হাওর (Mithamoin Haor), যা মিঠামইন উপজেলায় অবস্থিত। মিঠামইন এর উত্তরে ইটনা ও আজমিরিগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে অষ্টগ্রাম উপজেলা, পূর্বে বানিয়াচং ও অষ্টগ্রাম, পশ্চিমে করিমগঞ্জ ও নিকলী উপজেলা। এটি মূলত একটি প্রাচীন জনপদ অঞ্চল। মিঠামইন আরো কয়েকটি নামেও পরিচিত- মিঠামন, মিটামইন বা মিটামন বলে অনেকে একে উচ্চারণ করে থাকে। ধারণা করা হয় পার্শ্ববর্তী এলাকায় একসময় প্রচুর মিষ্টি বা মিঠা রসের খাগড়া গাছের বন ছিলো বলে একে এই নামে ডাকা হয়।

 

মিঠামইনের হাওরে ভ্রমণ ছাড়াও দেখার মত আছে ঐতিহ্যবাহী নানা স্থাপনা, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ

 

মালিকের দরগা


মিঠামইন থেকে ট্রলার যোগে ঘাগড়া। সেখান থেকে আবার ট্রলার যোগে মালিকের দরগা যেতে হয়। আবার আসার সময় মালিকের দরগাহ থেকে ট্রলার দিয়ে ঘাগড়া। ঘাগড়া থেকে আবার ট্রলার যোগে মিঠামইনের উদ্দ্যেশে রওনা দিতে হয়। সময় লাগে ১ ঘন্টা ৪০ মিনিট। শুকনো মৌসুমে মিঠামইন থেকে টেম্পু দিয়ে ঘাগড়া অথবা মটর সাইকেলে মালিকের দরগা যাওয়া যায়।

 

মিঠামইন হাওর দিল্লির আখড়া


কিশোরগঞ্জ থেকে বাস বা সিএনজি করে চামড়া ঘাট। চামড়া ঘাট থেকে ট্রলার দিয়ে যেতে হয় দিল্লির আখড়ায়।

 

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়ি


মিটামইনের কামালপুর গ্রামে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাড়িতে কাটিয়ে আসতে পারেন কিছুটা সময়।

 

এছাড়াও আছে অনেক বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। মিঠামইন উপজেলার গায়ের মহিলাদের হাতে তৈরি বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রি এখানকার ঐতিহ্য বহন করছে চলছে। এ ছাড়াও এ অঞ্চলে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী অনেক খেলাধুলা, যেমন, নৌকা বাইচ, লাঠি খেলা ইত্যাদি। নৌকা বাইচ হবে এমন একটা সময়ে গেলে হয়তো এই বাংলার ভিন্ন এক ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় হবে আপনার। মিঠামইন বাজারের কাঠমহাল এখানকার ঐতিহ্যের আরেক নিদর্শন।

 

মিঠামইন হাওর কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে করে কিশোরগঞ্জ সদরে যেতে পারেন। ট্রেনে করেই সুবিধা। ঢাকা থেকে এগারো সিন্দুর প্রভাতি ট্রেন বুধবার ব্যতীত সপ্তাহের অন্যদিন গুলোয় কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এটি সকাল ৭.১৫ মিনিটে ছেড়ে যায় এবং সাড়ে তিন ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন কিশোরগঞ্জে। সদরে নেমে সি এন জিতে করে চলে আসবেন চামড়াঘাটে। চামড়াঘাট থেকে মিঠামইনের উদ্দেশ্যে স্টীমার রয়েছে। চাইলে রিজার্ভ ও করতে পারেন। সময় লাগবে দেড় ঘণ্টা প্রায়।

 

কোথায় থাকবেন?

মিঠামইন বাজারে অবস্থিত হোটেল আল-কামাল ও হোটেল সিকদার আবাসিকে মান অনুযায়ী ৪০০ থেকে ১২০০ টাকায় রুম ভাড়া করতে পারবেন। এছাড়া যদি থাকতে চান তাহলে উপজেলা পরিষদের ডাক বাংলোতেও রাত্রিযাপনের সুযোগ রয়েছে।

 

মিঠামইন হাওর​ কোথায় খাবেন?

মিটামইন বাজারের স্থানীয় খাবার হোটেলে হাওরের বিভিন্ন তাজা মাছের পদ পাবেন। উল্লেখযোগ্য খাবার হোটেলের মধ্যে রয়েছে কাচা লংকা, সেলিম রেস্টুরেন্ট ও হোটেল চাঁনপুর।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?