জাতীয় স্মৃতিসৌধ | National Martyrs' Memorial 04/01/2022


PC:


PC:Shahriar Amin

জাতীয় স্মৃতিসৌধ (National Martyrs' Memorial) বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মৃতি অম্লান করে রাখার উদ্দেশ্যে নির্মিত একটি স্মারক স্থাপনা ও জাতীয় প্রতীক। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অগণিত প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ অর্জন করে স্বাধীনতা। যে সকলের মানুষের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা, সেই সব শহীদদের স্মৃতিতে নিবেদিত স্বারক স্থাপনা জাতীয় স্মৃতিসৌধ। রাজধানী শহর ঢাকা থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে সাভার উপজেলায় এই স্মৃতিসৌধ অবস্থিত।

 

১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে নবীনগরে এই স্মৃতিসৌধের শিলান্যাস করেন। ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্মৃতিসৌধটি নির্মাণের উদ্যাগ গ্রহণ করেন এবং নক্‌শা আহবান করা হয়। ১৯৭৮-এর জুন মাসে প্রাপ্ত ৫৭টি নকশার মধ্যে সৈয়দ মাইনুল হোসেন প্রণীত নকশাটি গৃহীত হয়। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে মূল স্মৃতিসৌধের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে বিজয় দিবসের অল্প পূর্বে সমাপ্ত হয়।

 

২০০২ সালে গৃহীত প্রকল্প অনুসারে অগ্নি শিখা, বিস্তৃত মুরাল এবং একটি গ্রন্থাগার স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়। বিদেশ সফরের সময় বিদেশি রাষ্ট্রপতিরা এখানে শহীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে স্মৃতি হিসাবে গাছ লাগান। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আর্কিটেকচার অধিদপ্তর স্মারক টাওয়ার ব্যতীত প্রকল্পের মাস্টার প্ল্যান এবং প্রাকৃতিক পরিকল্পনা সহ সমস্ত নির্মাণ কাজের আর্কিটেকচারাল ডিজাইন তৈরি করেছে। নির্মাণকাজটি ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়েছিল এবং ১৯৮৮ সালে শেষ হয়েছিল। পুরো নির্মাণ কাজটি জনগণের প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রকের আওতাধীন গণপূর্ত বিভাগ মোট ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন ধাপে স্মৃতিসৌধটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছিল।

 

প্রায় ৩৪ হেক্টর জমির উপর নির্মিত হয় এই স্মৃতিস্তম্ভটি। স্মৃতিস্তম্ভ ও এর প্রাঙ্গণের বাহিরে আরও ১০ হেক্টর জমি জুড়ে ছড়িয়ে আছে সবুজ গাছগাছালি। সাতটি ত্রিভুজ আকৃতির এই মিনারের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাঙ্গালির মুক্তি সংগ্রামের এক একটি ধাপের ভাব ব্যঞ্জনা। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যা শুরু হয়ে একে একে চুয়ান্ন, ছাপ্পান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টি ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়। প্রায় ৩৪ হেক্টর জমির উপর নির্মিত হয় এই স্মৃতিস্তম্ভটি। স্মৃতিস্তম্ভ ও এর প্রাঙ্গণের বাহিরে আরও ১০ হেক্টর জমি জুড়ে ছড়িয়ে আছে সবুজ গাছগাছালি।  কমপ্লেক্সের মধ্যে আছে কৃত্রিম জলাশয়, বাগান এবং ১৯৭১ সালে পাক বাহিনীর নির্মমতার নিদর্শন ঐতিহাসিক বধ্যভূমি ও গণকবর। মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তি সময়ে এই বধ্যভূমি ও গণকবর আবিস্কৃত হয় যা স্মৃতিসৌধের মূল কাঠামোর সাথেই যুক্ত করা হয়েছে।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে স্মৃতিসৌধে যাওয়ার জন্যে বিআরটিসির বাস সার্ভিস রয়েছে। বিআরটিসির বাসে দিয়ে ঢাকার মতিঝিল, গুলিস্তান, শাহবাগ, ফার্মগেট, আসাদগেট, শ্যামলী, গাবতলী থেকে স্মৃতিসৌধ দেখতে যেতে পরবেন। মিরপুর ১২ থেকে তিতাস পরিবহন মিরপুর ১০, মিরপুর ১, গাবতলী হয়ে স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়াও মতিঝিল – গুলিস্তান থেকে বেশ কিছু বাসে করে নবীনগর পর্যন্ত গিয়ে সেখান থেকে সহজে স্মৃতিসৌধ দেখতে যেতে পারবেন। 

 

 

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?