ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
মাদারীপুর জেলার আমড়াতলা ও খাতিয়াল গ্রামের মধ্যবর্তী কালকিনি উপজেলায় অবস্থিত সেনাপতির দিঘী (Senapati Lake)। মাদারীপুর জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে সেনাপতি দিঘি অন্যতম। তটভূমিসহ সেনাপতি দিঘির আয়তন ৬০,৭০৩ বর্গমিটার, দৈর্ঘ্য ২৮৮ মিটার ও প্রস্থ ১৫৭ মিটার। গভীরতা গড়ে প্রায় ১০ মিটার। পাড়ের উচ্চতা ১৩.৫ মিটার।
ঐতিহাসিকদের মতে, মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে সুবাদার শায়েস্তা খাঁর নেতৃত্বে মগ জলদস্যুদের বিতারিত করার জন্য তার বড় ছেলে বুজুর্গ উমেদ খাঁ ২৮৮টি নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন। বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে মগ জলদস্যুদের বিতারিত করে তার সেনাবাহিনীর একটি অংশ বাকেরগঞ্জ বর্তমান বরিশাল অঞ্চলে অভিযান চালায়। সেখান থেকে মগ সৈন্যদের বিতারিত করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। ঢাকা যাওয়ার পথে কালকিনি উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান আমড়াতলা ও খাতিয়াল এলাকায় কিছুদিন অবস্থান করেন। ওই সময় পানি ও জলের অভাব মেটানোর জন্য বুজুর্গ উমেদ খাঁর বিশ্বস্ত সেনাপতি ইসলাম খাঁর সেনাবাহিনী এ দীঘিটি খনন করে বলে এর নাম হয় ‘সেনাপতির দিঘি’।
এই দিঘি নিয়ে প্রচলিত আছে বিভিন্ন লোককথা। কথিত রয়েছে, দিঘি খননের পর পানি না ওঠায় সেখানে ঘৌড়দৌড় হয়। ঘৌড়দৌড়ের একপর্যায়ে দিঘির দক্ষিণ দিক থেকে পানি উঠতে শুরু করে এবং মুহূর্তের মধ্যে দিঘিটি পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। আরও কথিত রয়েছে, ওই সময় দিঘির কাছে অনুষ্ঠানাদির জন্য থালা-বাসন চাইলে রাতে তা দিঘির পাড়ে উঠে থাকত। অনুষ্ঠান শেষে সেখানে রেখে গেলে পরদিন সকালে সেখানে আর তা দেখা যেত না। আমড়াতলা গ্রামের কাজী আবদেলের মেয়ের বিয়ের সময় দিঘির কাছে থালা-বাসন চাওয়া হয়। যথারীতি থালা-বাসন দিঘির পাড়ে পাওয়া যায়। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে আবদেল কাজীর স্ত্রী বরু বিবি একটি কাঁসার বাটি ছাইয়ের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিল। পরের দিন ওই গৃহিণী পাগল হয়ে যায় এবং দীর্ঘকাল অসুস্থ থাকার পর তিনি মারা যান। পরবর্তী আর কোন অনুষ্ঠানে থালা-বাসন চাইলে দিঘিতে আর থালা-বাসন ভেসে উঠত না। দিঘির পশ্চিম পাশে যেখানে খাতিয়াল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় তার সামনে প্রকাট এক বটগাছ ছিল। সেই বটগাছে প্রচুর হনুমান বসবাস করত। বটগাছ ও হনুমানকে দেবতা ভেবে হিন্দুরা দিঘিতে গোসল করে এই বটগাছের নিচে এসে পুজো দিত। এখনও হিন্দু-মুসলমান অনেকেই মনে করেন দিঘিটির প্রাণ আছে। রোগ মুক্তির জন্য হিন্দু-মুসলমান মহিলারা দিঘিতে গোসলের মানত করে।
দৃষ্টিনন্দন এই দিঘিটির সংরক্ষণে নেই কোন উদ্যোগ। ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে এর সৌন্দর্য। এক সময় হয়তো বিলীন হয়ে যাবে কালের অতলে। শুধু থেকে যাবে ইতিহাসের পাতায়। সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোন উদ্যোগ গৃহীত হয়নি এ দিঘি সংস্কারে। অথচ দিঘিটি ঘিরে গড়ে উঠতে পারে একটি পর্যটনকেন্দ্র। যা থেকে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিভাবে যাবেন?
মাদারীপুর জেলা থেকে বাসে কালকিনি উপজেলায় পৌঁছে অটোরিকশায় চড়ে মাদারীপুর-পাথুরিয়া পাড় রোড দিয়ে ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সেনাপতি দিঘী দেখতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
কালকিনি উপজেলায় থাকার মত তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। মাদারীপুর শহরে হোটেল মাতৃভূমি, সুমন হোটেল, হোটেল পলাশ, সৈকত হোটেল, হোটেল সার্বিক ইন্টারন্যাশনাল ও হোটেল জাহিদের মত বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন?
কালকিনি উপজেলার কাছে গৌরনদীতে বেশ ভাল মানের কিছু রেস্তোরাঁ আছে।