সোনারং জোড়া মঠ | Sonarong Jora Moth 15/01/2022


PC:


দেশের আনাচে কানাচে এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ঐতিহাসিক নানা প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। কয়েকশত বছর যাবত এই সব স্থাপত্য এখনো ভাব গাম্ভীর্য সমেত দাঁড়িয়ে আছে হারানো কালের স্মৃতি নিয়ে। অষ্টাদশ শতাব্দীর সোনারং জোড়া মঠ (Sonarong Jora Moth) স্থাপনাটি মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে অবস্থিত। নামে জোড়া মঠ হলেও এগুলা মূলত মন্দির। এখানে বড় মন্দিরটি ১৮৪৩ সালে এবং ছোটটি ১৮৮৬ সালে নির্মাণ করা হয়। বড়টি কালী মন্দির এবং ছোটটি শিবমন্দির।

 

মন্দিরের প্রস্থরলিপি অনুসারে, ১৮৩৬ সালে শম্ভুনাথ নামের এক ব্যাক্তি এই মঠ স্থাপন করেন। কথিত আছে, এই মন্দিরেই শ্রী রুপচন্দ্রের শেষকৃত্য সম্পন হয়েছিল। প্রায় ২৪৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট অষ্টভুজাকৃতি সোনারং জোড়া মঠ ভারত উপমহাদেশের সর্বোচ্চ মঠ হিসাবে খ্যাত। চুন সুরকি নির্মিত পুরো দেয়াল বিশিষ্ট এই মঠের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ২১ ফুট এবং বড় মন্দিরের উচ্চতা ১৫ মিটার। মন্দিরের গোলাকার গম্বুজাকৃতি ছাদের শিখরে রয়েছে একটি ত্রিশূল। আর প্রত্যেক মূল উপাসনালয় ঘরের সাথে আছে একটি করে বারান্দা।

 

মঠটি প্রায় ২৪৬ ফুট যা দিল্লীর কুতুব মিনারের (২৪১) চাইতেও উঁচু। অষ্টভুজ আকৃতির এ মঠের দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে ২১ ফুট। ফলে আশ্চর্য স্থাপত্যশৈলীর এই স্থাপনাটিকে ভারত উপমহাদেশের সর্বোচ্চ মঠ বলা হয়। মন্দির দুটির মুল উপাসনালয় কক্ষের সঙ্গের রয়েছে বারান্দা বড় মন্দিরের ১ দশমিক ৯৪ মিটার ও ছোটটিতে ১ দশমিক ৫ মিটার বারান্দা। এছাড়া মন্দিরের সামনের অংশে বেশ বড় আকারের একটি পুকুর রয়েছে।  প্রাচীন এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাটি অযত্নে অবহেলায় এতোদিনেও আপন গরিমায় দাঁড়িয়ে আছে মাথা তুলে। নানা সময় জোড়া মন্দির হতে মূল্যবান নানা জিনিশপত্র চুরি হয়ে যায়। মূল্যবান পাথর, পিতলের কলস, কষ্টি পাথরের শিবলিঙ্গ দুর্বৃত্তরা চুরি করে নিয়ে যায়।

 

অসাধারণ কারুকার্যমণ্ডিত সোনারং জোড়া মঠের সৌন্দর্য কালের বিবর্তনে অনেকটা বিলীন হলেও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে থাকা প্রাচীন এই মঠটি দেখতে দূর দুরান্ত থেকে অনেক দর্শনার্থী ভিড় করে।

 

কিভাবে যাবেন?

সোনারং জোড়া মঠ দেখতে হলে মুন্সিগঞ্জ জেলার সোনারং গ্রামে যেতে হবে। ঢাকার গুলিস্থান, আবদুল্লাপুর বা মিরপুর থেকে মাওয়াগামী বাসে চড়ে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী বা শ্রীনগর যেতে পারবেন। শ্রীনগর বা টঙ্গীবাড়ী থেকে রিকশা, অটোরিকশা নিয়ে সোনারং জোড়া মঠে যেতে পারবেন।

 

কোথায় থাকবেন?

ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় সোনারং জোড়া মঠ দেখে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যায়। প্রয়োজনে রাত্রিযাপনের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরে হোটেল থ্রি স্টার, হোটেল কমফোর্টের মতো সাধারণ মানের হোটেল এবং জেলা পরিষদের ডাক বাংলো ও সার্কিট হাউজের মতো সরকারী আবাসনের ব্যবস্থা আছে। আর বিলাস বহুল রিসোর্টের মধ্যে পদ্মা, মাওয়া ও মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।

 

কোথায় খাবেন?

সোনারং জোড়া মঠ যাবার পথে হালকা খাবারের দোকান পাবেন। আর মুন্সিগঞ্জ শহরের মধ্যে রিভার ভিউ, মারিয়া ফুড ক্যাফে ও মুন্সির ঘরোয়া হোটেলের মতো বেশ কিছু ভালো মানের খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। মুন্সিগঞ্জের জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে চিত্তর দই, আনন্দর মিষ্টি, খুদের বৌউয়া (খুদের খিচুরি) ও ভাগ্যকুলের মিষ্টি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?