তাড়াশ ভবন | Tarash Bhaban 20/01/2022


PC: Nafiru Rahman


তাড়াশ ভবন (Tarash Bhaban) বাংলাদেশের পাবনা জেলা সদরের গোলাপপুর এর এ. হামিদ রোডে অবস্থিত একটি বিশেষ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। পাবনা শহরের নান্দনিক সৌন্দর্য আর স্থাপত্যের অনন্য অমর কীর্তি এ ভবনটি তাড়াশের রাজবাড়ী নামেও অনেকের কাছে সুপরিচিত। ১৮০০ শতাব্দীতে পাবনার সবচেয়ে বড় জমিদার বনমালী রায় বাহাদুর তাড়াশ ভবন স্থাপন করেন। তবে বনমালী রায়ের পূর্বপুরুষরা প্রথমে পাবনায় বসবাস করতেন না। এটি বনমালী রায় নিজের জমিদারির অবসর সময় যাপনের জন্য তৈরী করেছিলেন।

 

বগুড়া জেলার চান্দাইকোণার কাছে ‘কোদলা’ গ্রামে একঘর কায়স্থ জমিদার ছিলেন। এই জমিদারই তাড়াশের রায়বংশের পূর্বপুরুষ বাসুদেব। তাড়াশের এই পরিবার ছিল পাবনা জেলার সবচেয়ে বড় জমিদার। বাসুদেব নবাব মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব বিভাগে চাকরি করে প্রতিষ্ঠা করেন রাজবাড়ী। নবাব মুর্শিদকুলি খানবাসুদেবকে ভূষিত করেন ‘রায়চৌধুরী’ খেতাবে। তার এষ্টেট ছিল প্রায় ২০০ মৌজা নিয়ে। এই রায় বংশের বনমালী রায় ও বনওয়ারী লাল রায়ের নির্মাণ ঐতিহ্যবাহী বনমালী ইনস্টিটিউট। জানা যায়, ১৯৪২ সনে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধের আতঙ্কে এ জমিদার পরিবার তাদের পাবনা শহরে নির্মিত ঐতিহাসিক তাড়াশ বিল্ডিং এ আশ্রয় নিয়েছিলেন। পাবনা অঞ্চলের সর্ববৃহৎ জমিদারকর্তৃক নির্মিত তাঁদের অমরকীর্তি পাবনা শহরের তাড়াশ বিল্ডিং আজও তাঁদের স্মৃতি বহন করে দাঁড়িয়ে আছে। আদিতে বনওয়ারী লাল ফরিদপুর থানার ডেমরাতে বসতি স্থাপন করেন এবং কালক্রমে এইস্থানের নাম হয় বনওয়ারী নগর। তাঁদের নির্মিত শহরের ভবনটি তাড়াশ রাজবাড়ী নামেও পরিচিত।

 

দুই তলা বিশিষ্ট তারাশ রাজবাড়ী ভবন ২ টি বৃত্তাকার স্তম্ভের উপর নির্মিত। তাড়াশ ভবনের মূল এতিহ্য হল এর বিশালাকার প্রবেশ তোরণ যা রায় বাহাদুর গেট। প্রাসাদাকার এ ভবনটির সামনে প্রবেশ তোরণের দুপাশে দুটি করে মোট চারটি স্তম্ভ এবং মাঝে বিশালাকৃতির অর্ধবৃত্তাকার খিলানে প্রবেশ পথটি সৃষ্টি করা হয়েছে। এই রাজবাড়ির নির্মাণে ইউরোপীয় রেনেসাঁ রীতির প্রভাব লক্ষ করা যায়। আয়তাকার মূল ভবনের দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট এবং প্রস্থ ৬০ ফুট। ৪টি কোরিনথিয়ান স্তম্ভের উপর দ্বিতল গাড়িবারান্দা এই ভবনকে করেছে আরও আকর্ষণীয়। কথিত রয়েছে, বনমালী রায়ের ২টি হাতি ছিল এবং হাতির প্রবেশ পথে যেন তোরণ বাধা না পায় সেজন্য প্রবেশ তোরণকে এতটা বৃহদাকারভাবে গঠন করা হয়। তাড়াশ রাজবাড়ী বিভিন্ন সময়ে সরকারী দফতর হিসেবে ব্যবহার করে হয়েছে ফলে এই জমিদার বাড়ীটি এখনো বেশ ভালো অবস্থায় রয়েছে।

 

কিভাবে যাবেন?

পাবনার বাইপাস টার্মিনাল হতে সরাসরি তাড়াশ ভবন যে কোন যানবাহনে যেতে পারবেন। রিক্সা কিংবা অটোতে উঠে সরাসরি তাড়াশ জমিদার বাড়ি বা তাড়াশ ভবন বললেই নিয়ে যাবে সেখানে। রিক্সায় যেতে সময় লাগে ১৫মিনিট ও ভাড়া ২৫-৩০ টাকা। অটোতে সময় লাগবে ৭-১০মিনিট ও ভাড়া ১৫ টাকা।

 

কোথায় থাকবেন?

পাবনা জেলা সদরে রাত্রিযাপনের জন্য হোটেল প্রবাসী ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল মুন, লাকি হোটেল, হোটেল রোহান, হোটেল পার্ক বোর্ডিং ও হোটেল ছায়ানীড় প্রভৃতি আবাসিক হোটেল রয়েছে।

 

কোথায় খাবেন?

পাবনা আব্দুল হামিদ রোডে বেশ কিছু খাবার হোটেল রয়েছে এর মধ্যে স্বাগতম হোটেল এন্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, ছায়ানীড়, মিড নাইট মুন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?