ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
প্রত্নতত্ত্বের নিদর্শন দেখতে যারা আগ্রহী তারা বাংলাদেশে নরসিংদীর বেলাবো উপজেলায় অবস্থিত উয়ারী ও বটেশ্বর (Wari and Bateshwar) নামের দুই গ্রামব্যপী বিস্তৃত প্রত্নতাত্তিক স্থান ঘুরে আসতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা অনুযায়ী এটি প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো। তবে, ২০০০ খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কৃত কিছু প্রত্ন নিদর্শনের কার্বন-১৪ পরীক্ষার প্রেক্ষিতে উয়ারীর বসতিকে খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০ অব্দের বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় অবস্থিত উয়ারী বটেশ্বর গ্রাম দুটি তৎকালীন সময়ে নদী বন্দর ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল।
সর্বপ্রথম ১৯৩৩ সালে শ্রমিকরা মাটি খননকালে একটি কলসী পান এবং এতে বঙ্গভারতের প্রাচীনতম রৌপ্যমুদ্রা ছিল। ১৯৫৫ সালে স্থানীয় শ্রমিকরা ত্রিকোণাকৃতি ও এক মুখ চোখা ভারী দুটি লৌহপিন্ডের সন্ধান পায়। এরপর বিভিন্ন সময়ে উয়ারী বটেশ্বর হতে নানা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন যেমন বিষ্ণুপট, পাথরের গুটিকা, লৌহ কুঠার, বল্লম, ব্রোঞ্জের পাত্র ইত্যাদি আবিষ্কৃত হয়। গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্যসুত্র-প্রাগৈতিহাসিক হাতিয়ার, জনপদ, নগরায়ণ, বাণিজ্য, প্রযুক্তি, স্থাপত্য, অলঙ্কার, মুদ্রা, দর্শন ও শিল্পকলার নিদর্শনে ভরপুর উয়ারী-বটেশ্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে অনন্য তাৎপর্য মণ্ডিত প্রত্ন-ভাণ্ডার। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় অবস্থিত উয়ারী-বটেশ্বর ছিল একটি নদী বন্দর ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র। মনে করা হচ্ছে, টলেমী বর্ণীত সৌনাগড়াই ই উয়ারী-বটেশ্বর। ভারতীয় উপমহাদেশের আদি-ঐতিহাসিক কালের অনেক নগর এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়া ও ভূমধ্যসাগর অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল উয়ারী-বটেশ্বরের।
প্রত্নতাত্ত্বিক খননে উয়ারীতে পাওয়া গেছে চারটি মাটির দুর্গ-প্রাচীর। আরো পাওয়া গেছে প্রাচীন বন্দর, রাস্তা, র্পাশ্বরাস্তা, পোড়ামাটির ফলক, পাথরের পুঁতি, মুদ্রাভান্ডারসহ উপমহাদেশের প্রাচীনতম রৌপ্যমুদ্রা, স্বল্প মূল্যবান পাথরের গুটিকা, কাচের গুটিকা, রৌদ্রমুদ্রা, উচ্চমাত্রায় টিনমিশ্রিত ব্রোঞ্জ নির্মিত নবযুক্ত পাত্র। উত্তরভারতীয় মসৃণ কালো মৃৎপাত্র প্রভৃতি নির্দশনগুলোকে প্রত্মতাত্ত্বিকরা খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০ অব্দ থেকে খ্রিস্টীয় প্রথম শতক র্পযন্ত সীমায় ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করেছেন। উয়ারী গ্রামে একটি অস্থায়ী জাদুঘর প্রদর্শনীরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। উয়ারী বটেশ্বর গ্রাম দুটি থেকে পাওয়া উল্লেখযোগ্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে জীবাশ্ম কাঠের তৈরি ও পাথরের তৈরি প্রাগৈতিহাসিক যুগের হাতিয়ার, তাম্র প্রস্তর যুগের বসতি চিহ্ন, উত্তরাঞ্চলীয় চকচকে মাটির পাত্রের টুকরা, আয়তনের দুর্গ প্রাচীর ও পরিখা, বিভিন্ন প্রকার পুতি, লোহার হাতিয়ার, পুতির তৈরি কাঁচামাল, লোহার ধাতুমল প্রভৃতির কথা উল্লেখ করা যায়।
কিভাবে যাবেন?
রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান ও সায়েদাবাদ থেকে বিভিন্ন পরিবহণের বাস সরাসরি ঢাকা-নরসিংদী রুটে যাতায়াত করে। এছাড়া কমলাপুর বা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন হতে ট্রেনে নরসিংদী ভ্রমণ করা যায়। আবার মহাখালী থেকে ভৈরবগামী বিআরটিসি বাসে জনপ্রতি ১০০ টাকা ভাড়ায় দুই ঘণ্টায় ভৈরবের মরজাল বাসস্ট্যান্ডে যাওয়া যায়। সেখান থেকে লোকালে জনপ্রতি ৩০ টাকা বা ১২০-১৫০ টাকায় সিএনজি রিজার্ভ নিয়ে সরাসরি উয়ারী বটেশ্বর যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন?
উয়ারী বটেশ্বরে একটি সরকারী ডাকবাংলো আছে। এখানে থাকার জন্য এর চেয়ে ভাল ও সুন্দর জায়গা পাওয়া যাবে না। ডাকবাংলোটি বুকিং দিতে নন-রুমের জন্য ৫০০ টাকা এবং এসি রুমের জন্য ১২০০ টাকা খরচ করতে হবে। আর কেয়ারটেকারের সাথে কথা বলে খাবারের ব্যবস্থা করা যায়।