তেওতা জমিদার বাড়ি | Teota Palace 14/01/2022


PC:


PC:Asif Zaman

তেওতা জমিদার বাড়ি (Teota Zamindar Bari) বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী প্রমীলা দেবীর স্মৃতি বিজড়িত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। কাজী নজরুল ইসলাম ও প্রমীলা দেবীর প্রেমের স্মৃতির সাক্ষী তেওতা জমিদার বাড়ির পাশেই ছিল প্রমীলা দেবীর পিতার বাড়ি। প্রমীলা দেবীর পিতা বসন্ত সেনের ভ্রাতুষপুত্র বীরেন সেনের সঙ্গে কবির সখ্যতার কারণে কবি তাঁদের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত করতে পারতেন। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা জমিদার বাড়িতে কাজী নজরুল ইসলাম প্রমীলা দেবীর রূপে মুগ্ধ হয়ে লিখেছিলেন –

 

                              “তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়
                                      সেকি মোর অপরাধ”

 

মানিকগঞ্জ জেলার ইতিহাস থেকে পাওয়া তথ্য মতে, সপ্তদশ শতকের শুরুতে পাচুসেন নামের দরিদ্র কিশোর তামাকের ব্যবসায় বিপুল অর্থ-সম্পদ অর্জন করে দিনাজপুরের জয়গঞ্জে জমিদারী কিনে পঞ্চানন সেন নামে পরিচিতি লাভ করে। সেসময় মানিকগঞ্জের শিবালয়ের তেওতায় এই জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেন। পরবর্তিতে এখানে জমিদারি প্রতিষ্ঠিত করেন জয়শংকর ও হেমশংকর নামের দুই ব্যক্তি। ভারত বিভক্তির পর তারা দুজনেই ভারত চলে গেলে বাড়িটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। লোকমুখে প্রচলিত তেওতা জমিদার বাড়িটির বয়স প্রায় ৩০০ বছর। প্রায় সাড়ে সাত একর জায়গার উপর ৫৫ কক্ষবিশিষ্ট এই দৃষ্টিনন্দন জমিদারবাড়ির সামনে ১৮৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ৭৫ ফুট উচ্চতার নবরত্ন মন্দিরটি এখনো অক্ষত দেখা যায়।

 

তেওতা জমিদার বাড়ির প্রধান ভবনের উত্তরের ভবনগুলোকে হেমশংকর এস্টেট এবং দক্ষিণের ভবনগুলোকে জয়শংকর এস্টেট নিয়েছিল। প্রতিটি এস্টেটের সামনে নাটমন্দির অবস্থিত, পূর্ব দিকের লালদিঘী বাড়িটি জমিদারদের অন্দর মহল হিসাবে ব্যবহৃত হত। দিঘীতে দুটি শান বাঁধানো ঘাটলা এবং দক্ষিণ পাশে একটি চোরা কুঠুরী বা অন্ধকুপ রয়েছে। উত্তরদিকের ভবনের সামনে ৭৫ ফুট উঁচু ৪ তলা নবরত্ন মঠ রয়েছে। নবরত্ন মঠের ১ম ও ২য় তলার চারদিকে আরো ৪ টি মঠ আছে। প্রায় ৭.৩৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত তেওতা জমিদার বাড়িটি দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে অনেক পর্যটকের আগমন ঘটে।

 

কিভাবে যাবেন?

আরিচার শিবালয়ে অবস্থিত ঢাকা থেকে তেওতা জমিদার বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার। রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে বিআরটিসি, যাত্রীসেবা, পদ্মা লাইনের বাসে চড়ে ৩ ঘন্টা সময়ে আরিচা ঘাট আসতে জনপ্রতি ৭০ থেকে ১০০ টাকা বাস ভাড়া লাগে। আরিচা ঘাট থেকে ২০ – ৩০ টাকা রিকশা ভাড়ায় সরাসরি তেওতা জমিদার বাড়ি যাওয়া যায়।

 

কোথায় থাকবেন?

ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় তেওতা জমিদার বাড়ি দেখে দিনে দিনেই ঢাকা ফেরা যায়। তাছাড়া আসে পাশে থাকার তেমন কোন ব্যবস্থাও নেই। তবে মানিকগঞ্জ শহরে থাকার মত মোটামুটি মানের কিছু আবাসিক হোটেল পাবেন। ফ্যামিলি নিয়ে থাকার মত খুব কমই আছে।

 

চাইলে সরাসরি মানিকগঞ্জ সদর চলে যেতে পারেন বাসে করে। সেখান থেকে বাসে চলে যান উথিলা বাস স্ট্যান্ড, সময় লাগবে ২০-৩০ মিনিট। উথিলা থেকে সিএনজি করে চলে যান আরিচা ঘাট, ভাড়া ৫ টাকা। আরিচা ঘাট থেকে অটো রিক্সায় পদ্মা নদীর পাড় দিয়ে চলে যান ২০-২৫ টাকার ভাড়ায় তেওতা জমিদার বাড়ি। সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন তেওতা নবরত্ন মঠ থেকে। ফিরতি পথে আবার আরিচা ঘাট চলে যান। আরিচা ঘাট থেকে ঢাকায় ফেরার বাস পাবেন। আরিচা ঘাট থেকে শেষ গাড়ি সম্ভবত বিকাল ৫:৩০ টায়।

 

কোথায় খাবেন?

তেওতা তে খাবারের জন্য রয়েছে সাধারণ মানের বেশকিছু হোটেল ও রেস্টুরেন্ট। তবে আরিচা ঘাটে অনেক খাবার হোটেল মিলবে।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?