.jpg)
ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021

সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
.jpg)
ঝরঝরি ট্রেইল | Jorjori…
02/05/2021

ধুপপানি ঝর্ণা | Dhuppani…
16/04/2021
02/05/2021
16/04/2021
02/05/2021
16/04/2021
ব্রিটিশ শাসন আমলে এই বাংলার কৃষকরা ব্রিটিশদের চক্রান্তের শিকার হয়ে নীল চাষ শুরু করেন। যে সকল নীল চাষী তাদের কথা না শুনে নীল চাষে অস্বীকার করে তাদের উপর ব্রিটিশ সরকার পৈশাচিক নির্যাতন চালাতো। মেহেরপুরের ভাটপাড়া নীলকুঠি ও সাহারবাটি নীলকুঠির মধ্যে আমঝুপি নীলকুঠি (Amjhupi Neelkuthi) সেই নির্যাতনের সাক্ষ্য বহনকরে আজও ইতিহাসের পাতায় অমলিন হয়ে আছে। মেহেরপুর জেলা থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়া মেহেরপুর সড়ক বা ঢাকা মেহেরপুর সড়কের কাছেই আমঝুপি নীলকুঠির অবস্থান।
আমঝুপি নীলকুঠিতে দেশীয় স্থাপত্যের সাথে ইউরোপীয় স্থাপত্য বিশেষ করে ব্রিটিশ স্থাপত্যেরীতির সংমিশ্রণ ঘটেছে। ১৮০০ দশকে প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে এই ভবনটি নীলকুঠি হিসেবে ব্যবহৃত হলেও পরবর্তীতে এখানে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অফিস চালু করা হয়। ইতিহাস বলে, মোঘল সেনাপতি মানসিংহ এবং নবাব আলীবর্দি খাঁর স্মৃতি বিজোড়িত এই আমঝুপিতেই পলাশীর পরাজয়ের নীলনকশা রচিত হয়েছিল। কথিত আছে, এই নীলকুঠিই ইংরেজ সেনাপতি ক্লাইভ লয়েড ও মীলজাফরের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের শেষ বৈঠক হয়েছিল। যার পরের গল্প ফলাফল সিরাজ-উদ-দৌলার পতন। বাঙালিদের স্বাধিনতা হারিয়ে পরাধীনতা গ্রহণ। তারপর সেই যে অত্যাচার শুরু হল সেই অত্যাচারের রক্তেই একদিন এখানে আমঝুপিতে নীলকুঠি গড়ে উঠল।
কাজলা নদীর পাশে অবস্থিত নীলকুঠিতে প্রবেশের জন্য দুইটি রাস্তা আছে। কুঠি ভবনটির দৈর্ঘ্য ১৫ মিটার, প্রস্থ ১০ মিটার ও উচ্চতা প্রায় ৮ মিটার। ৭৭ একরের বেশী জায়গাজুড়ে অবস্থিত নীলকুঠি কমপ্লেক্সের মাঝখানে আছে ১৫ কক্ষ বিশিষ্ট মূল ভবন। এসব কক্ষ ব্যবহৃত হতো বৈঠকখানা, সংগীত, নৃত্যগীত এবং আমোদ-প্রমোদ করার জন্য। এর সাথে রয়েছে চারটি সাজঘর ও পরিচারকদের কোয়ার্টার। পশ্চিম দিকে অবস্থিত পরিচারকদের ও সাহায্যকারীদের বসবাসের দালান যা বর্তমানে কুঠিবাড়ির নিরাপত্তাকর্মী ও তত্বাবধায়কের বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
হল ঘর নীলকুঠির কক্ষগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ। কাঠের মেঝে যুক্ত অর্ধগোলাকার এই কক্ষের এক কোনায় একটা ফায়ার প্লেস। কক্ষটির সামনের দেয়ালের উপরিভাগে টাঙানো বড় একটি মহিষের মাথা। এর দুপাশে আরো অনেকগুলো ঘর। এর কোনটিতে বসত নাচের আসর। কোনটায় ঝাড়বাতির আলোর নীচে লুন্ঠিত হত বাঙ্গালী নারীর সতীত্ব। কোনটাতে চলতো নীলচাষীদের উপর অমানুষিক নির্যাতন। জানা যায় এটি ছিল জলসা ঘর। কুঠিবাড়ির ভেতরে আজও রয়ে গেছে ইংরেজদের ব্যবহার করা চেয়ার, টেবিল, খাট, মহিষের শিং ইত্যাদি। কাজলা নদীর ওপর পর্যন্ত সম্প্রসারিত সেতু, শানবাধানো বসার আসনবেষ্টিত ঘাট নিঃসন্দেহে এই কুঠির সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক ও ব্যাতিক্রমী বৈশিষ্ট্য।
উপমহাদেশে নীলচাষের অবসানের পর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলে ১৯৭২ সালে প্রথম বাংলাদেশ সরকার আমঝুপি নীলকুঠি সংরক্ষণের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
কিভাবে যাবেন?
মেহেরপুর জেলা সদর থেকে বাস কিংবা স্থানীয় যেকোন পরিবহণ ব্যবস্থায় সরাসরি আমঝুপি নীলকুঠিতে যেতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগে।
কোথায় থাকবেন?
রাত্রিযাপনের জন্য জেলা পরিষদের ডাকবাংলো, সার্কিট হাউজ, পৌর হল এবং ফিন টাওয়ারসহ বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়া গাংনী উপজেলার পলাশীপড়া সমাজকল্যাণ সমিতির রেস্ট হাউজে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
কোথায় খাবেন?
মেহেরপুরে খাবারের জন্য বেশকিছু হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। তবে অবশ্যই আমের মৌসুমে মেহেরপুরে গেলে পাকা আম খেতে ভুল করবেন না। এছাড়া মেহেরপুর শহরে “সাবিত্রী” নামের মিষ্টির স্বাদ চেখে দেখতে পারেন।