
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021

ধুপপানি ঝর্ণা | Dhuppani…
16/04/2021
.jpg)
ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
.jpg)
ঝরঝরি ট্রেইল | Jorjori…
02/05/2021
16/04/2021
16/04/2021
02/05/2021
02/05/2021
রাজধানী ঢাকা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গাজীপুরের জয়দেবপুরের ছায়া সুনিবিড় পরিবেশে গড়ে উঠেছে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান (Bhawal National Park)। গাজীপুর জেলা সদর ও শ্রীপুর থানা জুড়ে এ পার্কের বিস্তৃতি। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ৫,০২২ হেক্টর জায়গা জুড়ে পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত দেশের আদলে নিরিবিলি পরিবেশে ভাওয়াল শালবনে এই উদ্যান গড়ে তোলে এবং ১৯৮২ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষিত হয়।
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মূল উদ্ভিদ হলো শাল। প্রায় ২২০ প্রজাতির গাছপালা আছে এ বনে। এর মধ্যে ৪৩ প্রজাতির বিভিন্ন রকম গাছ, ১৯ প্রজাতির গুল্ম, ৩ প্রজাতির পাম, ২৭ প্রজাতির ঘাস, ২৪ প্রজাতির লতা, ১০৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শাল, বহেড়া, আমলকি, হলুদ, আমড়া, জিগা, ভাদি, অশ্বত্থ, বট, সর্পগন্ধা, শতমূলী, জায়না, বিধা, হারগোজা, বেহুলা ইত্যাদি। এ ছাড়া নানান প্রজাতির লতাগুল্ম আছে এ বনে। অন্যান্য বৃক্ষের মধ্যে কাঁঠাল, আজুলি, কুম্ভী, গান্ধী গজারি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। কৃত্রিমভাবে ইউক্যালিপটাস আর রাবারের বনায়ন করা হয়েছে এখানে।
এছাড়াও রয়েছে ৬৪ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী যাদের মধ্যে ১৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫ প্রজাতির পাখি ও উভচর প্রাণী অন্তর্ভুক্ত। বন বিভাগ এই বনে অজগর, ময়ূর, হরিণ ও মেছোবাঘ ছেড়েছে। বনে হাঁটার সময় দেখা মেলবে স্ট্রুর্ক বিলড কিংফিশার বা মেঘ হু, মাছরাঙ্গা, খয়রা গেছো পেঁচা, কাঠ ময়ূর, বন মোরগ, মুরগি। দেখা মিলবে বানর ও মুখপোড়া হনুমানেরও। এত সব প্রাণী একসাথে দেখে আপনি মুগ্ধ না হয়ে পারবেন না।
এখানে পর্যটকদের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি পিকনিক স্পট । স্পটগুলো হলো আনন্দ, কাঞ্চন, সোনালু, অবকাশ, অবসর, বিনোদন। দর্শনার্থীদের আরামের জন্য রয়েছে বকুল, মালঞ্চ, মাধবী, চামেলী, বেলী, জুঁই নামের চমৎকার ও মনোরম কটেজ। এখানে ১৩টি কটেজ ও ছয়টি রেস্টহাউস রয়েছে। পিকনিক স্পট কিংবা রেস্ট হাউস ব্যবহার করতে হলে বন বিভাগের মহাখালী কার্যালয় থেকে আগাম বুকিং দিয়ে আসতে হয়। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস বা বাসে নিয়ে প্রবেশ করতে চাইলে যথাক্রমে ৬০, ১০০ ও ২০০ টাকা প্রদান করতে হয়।
কিভাবে যাবেন?
গাজীপুর সদর থেকে ভাওয়াল গজারির গড় অর্থাৎ ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। জয়দেবপুর চৌরাস্তা পার হয়ে একটু সামনে এগোলেই হাতের ডান দিকে ভাওয়াল গড়ের প্রধান প্রবেশ পথ নজরে পড়বে। ঢাকা থেকে নিজস্ব গাড়ীতে অথবা মহাখালি, বিমানবন্দর বা রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ে দিয়ে ময়মনসিংহগামী যেকোন বাসে ভাওয়াল উদ্যানে যেতে পারবেন। আবার গুলিস্থান থেকে প্রভাতি বা বনশ্রী পরিবহনের বাসে উঠে ন্যাশনাল পার্কের ৩ নাম্বার গেটে নামার কথা বললে সরাসরি ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের প্রধান গেটে নামতে পারবেন। বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
কোথায় থাকবেন?
ঢাকা থেকে ভাওয়াল উদ্যানে সারাদিন ঘুরে বিকাল বা সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসা যায়। এছাড়া রাতে থাকার জন্য ভাওয়াল গজারি গড়ের কাছে আছে সারাহ, সোহাগ পল্লী, স্প্রিং ভ্যালী, ছুটি, নক্ষত্রবাড়ি এবং জল ও জঙ্গলের কাব্যের মতো বেশ কিছু রিসোর্ট। তবে রিসোর্টগুলোতে যেতে চাইলে আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখা ভাল। এছাড়া গাজীপুরে সাধারন মানের অসংখ্য হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন?
ভাওয়াল গড়ের ভিতরে হালকা চা ও নাস্তা খাওয়ার ছোট টঙ্গের দোকান ও ক্যান্টিন রয়েছে। তবে পিকনিক বা কোনও অনুষ্ঠানে বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে কটেজে রানা-বান্না করার সুযোগ আছে।