ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
চলন বিল (Chalan Beel) বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল এবং সমৃদ্ধতম জলাভূমিগুলির একটি। দেশের সর্ববৃহৎ এই বিলটি বিভিন্ন খাল বা জলখাত দ্বারা পরস্পর সংযুক্ত অনেকগুলি ছোট ছোট বিলের সমষ্টি। বর্ষাকালে এগুলি সব একসঙ্গে একাকার হয়ে প্রায় ৩৬৮.০০ বর্গ কিমি এলাকার একটি জলরাশিতে পরিণত হয়। বিলটি সংলগ্ন তিনটি জেলা নাটোর পাবনা ও সিরাজগঞ্জ এর অংশ বিশেষ জুড়ে অবস্থান করছে। চলন বিল সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ ও পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলা দুটির অধিকাংশ স্থান জুড়ে বিস্তৃত। এছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ থানার তিন চতুর্থাংশই এ বিলের মধ্যে অবস্থিত।
চলনবিলে বলতে চলমান (চলন্ত) বিলকে বোঝায়। অর্থাৎ যে বিল প্রবাহমান। বিল সাধারণত বদ্ধ থাকে, তবে বাংলাদেশের বৃহত্তম বিল চলনবিলের মধ্য দিয়ে পানি প্রবাহিত হতো। এ বিলের চলমান পানির অংশের পরিধি সঙ্কোচিত হতে হতে এখন এটা বদ্ধ বিলে পরিণত হয়েছে। তবে এই বিলের প্রকৃত সৌন্দর্য দেখতে পাওয়া যায় বর্ষা কালে। চারিদিকে অথই জলরাশি, পরিস্কার জল, গভীর রাতে জেলেদের নৌকা নিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য। বিলটির দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্ত পাবনা জেলার নুননগরের কাছে অষ্টমনীষা পর্যন্ত বিস্তৃত। এ জেলায় চলন বিলের উত্তর সীমানা হচ্ছে সিংড়ার পূর্ব প্রান্ত থেকে ভদাই নদী পর্যন্ত টানা রেখাটি যা নাটোর, পাবনা ও বগুড়া জেলার মধ্যবর্তী সীমানা নির্দেশ করে। ভদাই নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত তাড়াশ উপজেলা ও পাবনা জেলা বরাবর উত্তর-দক্ষিণমূখী একটি রেখা টানলে তা হবে বিলটির মোটামুটি পূর্ব সীমানা। বিলটির প্রশস্ততম অংশ উত্তর-পূর্ব কোণে তাড়াশ থেকে গুমনী নদীর উত্তর পাড়ের নারায়ণপূর পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিমি বিস্তৃত। সিংড়া থেকে গুমনী পাড়ের কচিকাটা পর্যন্ত অংশে এটির দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি, ২৪ কিমি।
চলন বিল গঠনকারী ছোট ছোট বিলগুলো হলো- পিপরূল, পূর্ব মধ্যনগর, লারোর, ডাঙাপাড়া, তাজপুর, নিয়ালা, চলন, মাঝগাঁও, ব্রিয়াশো, চোনমোহন, শাতাইল, খরদহ, দারিকুশি, কাজীপাড়া, গজনা, বড়বিল, সোনাপাতিলা, ঘুঘুদহ, কুরলিয়া, গুরকা, দিক্ষিবিল এবং চিরল। চলন বিলের মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে বেশ কয়েকটি নদী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- করতোয়া, আত্রাই, গুড়, বড়াল, মরা বড়াল, তুলসী, ভাদাই, চিকনাই, বরোনজা, তেলকুপি ইত্যাদি। এছাড়া চলন বিলে পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- চিতল, কৈ, মাগুর, শিং, টাকি, বোয়াল, শোল, ফলই, রম্নই, মৃগেল, চিংড়ি, টেংরা, মৌসি, কালিবাউশ, রিটা, গজার, বৌ, সরপুটি, তিতপুটি, পুঁটি, গুজা, গাগর, বাঘাইর কাঁটা প্রভৃতি জাতের মাছ।
চলন বিল দেখার পরে দেখে নিতে পারেন চলনবিল জাদুঘরটিও। গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর গ্রামে এ জাদুঘর। স্থানীয় শিক্ষক আব্দুল হামিদ ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় নিজ বাড়িতে ১৯৭৮ সালে গড়ে তুলেছেন ব্যতিক্রমী এ সংগ্রশালা। চলনবিলে প্রাপ্ত নানান নিদর্শন, মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম ছাড়াও এখানে আছে অনেক দুর্লভ সংগ্রহ। নাটোর থেকে বাসে গুরুদাসপুর উপজেলায় এসে সেখান থেকে নদী পার হয়ে রিকশায় আসা যাবে খুবজিপুর গ্রামের এই জাদুঘরে।
কিভাবে যাবেন?
চলন বিল উত্তর বঙ্গের নাটোর, সিরাজগঞ্জ এবং পাবনা জেলার মধ্যে আবস্থিত বিধায় আপনি যদি সিলেট, ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে আসতে চান তাহলে আপনাকে আসতে হবে ঢাকা হয়ে। ঢাকা থেকে রাজশাহীর গাড়িতে সিরাজগঞ্জ অথবা নাটোরের কাছিকাটা নামবেন। নাটোরের কাছিকাটা থেকে চলন বিলের দূরত্ব প্রায় ১৩ কিলোমিটার। কাছিকাটা থেকে চাচকৈর বাজার হয়ে খুবজীপুর গ্রামে আসতে পারবেন। খুবজীপুর গ্রাম থেকে নাটোর অংশের চলন বিলের সৌন্দর্য সবচেয়ে ভালভাবে উপভোগ করতে পারবেন। আর হাতে সময় থাকলে চলন বিল জাদুঘর ঘুরে জেনে নিতে পারেন চলন বিলের অজানা বিষয়াদি।
কোথায় থাকবেন?
নাটোরে মুটামুটি মানের কতগুলো আবাসিক হোটেল ও বোডিং রয়েছে। হোটেল ভি.আই.পি এবং হোটেল রুখসানায় সিংগেল কেবিন ২৫০ থেকে ৩০০ ও ডাবল কেবিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়ায় রাত্রিযাপন করতে পারবেন।
কোথায় খাবেন?
উদরপূর্তির জন্য নাটোরে বেশকিছু বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। নিজের পছন্দ মত যেকোন রেস্টুরেন্টে সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার খেতে পারবেন। সমগ্র বাংলাদেশে চলনবিল এবং রানী ভবানী সুস্বাদু মাছের সুনাম ছড়িয়ে আছে। তাই নাটোর ভ্রমনকালে মাছ খাওয়ার এই সুযোগ মিস করা মোটেও ঠিক হবে না। সাথে নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা খেয়ে সাথে করে নিয়েও আসতে পারেন।