শহীদ সাগর বধ্যভূমি | Shaheed Sagar Boddhovumi 20/01/2022


PC:


বাংলাদেশের এক গৌরবময় অধ্যায় হল বাংলার মহান মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় ৩০ লক্ষ্য মানুষ শহীদ হয়েছিলো। বাংলার অনেক জায়গা হয়ে উঠেছিলো বধ্যভূমি। তাদের মধ্যে অন্যতম নাটোর জেলার শহীদ সাগর বধ্যভূমি (Shaheed Sagar Boddhovumi)। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নাটোরের লালপুরে নর্থ বেঙ্গল চিনি কারখানায় সংগঠিত গণহত্যার স্মরণে এই বধ্যভুমিতে নির্মিত হয় স্মৃতিস্তম্ভ। এটি মূলত একটি পুকুরকে কেন্দ্র করে, যার পানি ১৯৭১ সালের ৫ মে জমাট বেঁধে লাল হয়েছিল শহীদদের রক্তে।

 

সেদিনছিল ৫ মে, চারিদিকে থমথমে অবস্থার মধ্যেও মিলের কাজ চলছিল। সকাল ১০-০০ টার দিকে লাল শালু কাপড়ের ব্যান্ড পরা কিছু রাজাকারের সহায়তায় পাক হানাদার বাহিনীর একটি দল অতর্কিতে মিল ক্যাম্পাসের ভিতরে প্রবেশ করে এবং ময়নার যুদ্ধ এবং পাক সেনা কর্মকর্তার হত্যার মিথ্যা অভিযোগে তৎকালীন মিলের প্রশাসক জনাব লেঃ আনোয়ারুল আজিম এবং অন্যান্য কর্মকর্তা, শ্রমিক-কর্মচারীদের ডেকে বর্তমান অতিথি ভবনের সামনের পুকুরের পার্শ্বে ব্রাশ ফায়ারে ৪২ জনকে  নির্মমভাবে হত্যা করে পুকুরের পাড়ে ফেলে চলে যায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর উল্লিখিত পুকুরটি ‘শহীদ সাগর’ হিসেবে নামকরণ হয়। যতদুর জানা যায় ‘শহীদ সাগর’ নামকরণের পূর্বে পুকুরটি ‘গোপাল সাগর’ নামে পরিচিত ছিল।

 

১৯৭৩ সালের ৫ মে শহীদের স্মরণে শহীদ লে. আনোয়ারুল আজিমের স্ত্রী বেগম শামসুন্নাহার শহীদ সাগর স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলেন। আর স্মৃতিস্তম্ভের পিছনে রয়েছে দুঃস্বহ স্মৃতিজড়িত সেই পুকুর| সিঁড়িতে যেসকল যায়গায় বুলেটের গুলিবিদ্ধ হয়েছিল, সেসকল জায়গায় আজ প্রতীকি লাল রঙে শহীদের রক্তের চিহ্ন আছে| স্মৃতিস্তম্ভের পূর্ব দিকে একটি ফুলের বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। ২০০০ সালের ৫ মে শহীদ সাগর চত্বরে একটি স্মৃতি যাদুঘর নির্মাণ করা হয়। প্রতিবছর ৫ মে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে গোপালপুরের শহীদের স্মরণে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল গনহত্যা দিবস পালন করা হয়।

 

কিভাবে যাবেন?

নাটোর জেলা সদর থেকে বাস, সিএনজি বা অটোরিক্সায় চড়ে প্রায় ৩১ কিলোমিটার দূরে নর্থ বেঙ্গল চিনি কারখানায় অবস্থিত শহীদ সাগর পৌঁছাতে পারবেন।

 

কোথায় থাকবেন?

রাত্রিযাপনের জন্য নাটোরের মাদ্রাসা মোড় ও রেলওয়ে ষ্টেশনে হোটেল ভিআইপি, হোটেল মিল্লাত, হোটেল প্রিন্স, হোটেল রাজ, হোটেল রুখসানা ও নাটোর বোর্ডিং সহ বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে।     

 

কোথায় খাবেন?

নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের কাছে অর্পিতা কফি হাউজ ও গোপালপুর বাজারে হালকা খাবার খেতে পারবেন। নাটোর শহরের বনপাড়াতে ওয়ান সেভেন হোটেল, হোটেল ফাইভ স্টার, মোল্লা হোটেল এবং ক্যাফে হট ও চিলির মতো বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। নাটোরের জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে মাছ ও কাঁচাগোল্লা অন্যতম।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?