লাউচাপড়া পাহাড়িকা অবকাশ কেন্দ্র | Lauchapora Paharika Binodon Kendro 19/01/2022


PC:


শহুরে মানুষদের প্রকৃতির খুব কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ ঘটে বছরে খুব কম সময়ই। আর তাই ছুটির দিনগুলোকে একান্ত প্রকৃতির সাথে বিলিন করতে প্রকৃতি প্রেমিরা যেতে পারেন জামালপুরের লাউচাপড়া। বকশীগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে পাকা রাস্তায় ১০ কিলোমিটার উত্তরে এগোলেই ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেঁষে প্রায় ১০ হাজার একর জায়গা জুড়ে বিশাল পাহাড়ি এলাকা যার পুরোটাই গারো পাহাড়। আর এই গারো পাহাড়ের কোলেই গড়ে উঠেছে লাউচাপড়া অবকাশ কেন্দ্র।

 

সীমান্তঘেঁষা বকশীগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছবিরমতো গারো পাহাড়ের সারি আর বনভূমি। গারো আদিবাসীদের পাহাড়ি গ্রাম, বনভূমি, পাহাড়-টিলা। পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে অজস্র ছোট-বড় স্বচ্ছ ঝরনা ধারা, পাখির কলকাকলী আর দিগন্তবিস্তৃত সবুজ সব মিলিয়ে নিসর্গ সুন্দরের অপূর্ব এক বিশাল ক্যানভাস। প্রকৃতি, আলো-হাওয়া, সুন্দরের টানে যারা বেড়াতে ভালোবাসেন- তারা নির্দ্বিধিায় চলে আসতে পারেন এখানে। ওপাশে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরা জেলা আর এ পাশে বাংলাদেশের জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলা। সেখানে আবার রয়েছে মস্তবড় এক ওয়াচ টাওয়ার। প্রায় ২৫০টি সিঁড়ি ধাপ অতিক্রম করে উপরে উঠলে চারিদিকে সবুজ ছাড়া কিছুই আর চোখে পড়েনা। দূরে দেখা যায় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আকাশ ছোঁয়া সব পাহাড়। চারিদিকটা কেমন যেন ছবির মতো মনে হয়।

 

এই পাহাড়ি জঙ্গলে আছে নানা জাতের পশু পাখি। ধান পাকার মৌশুমে আবার মেঘালয় থেকে চলে আসে বুনো হাতির দল। কাঠ ঠোকরা, হলদে পাখি, কালিম পাখি আরো কত ধরণের পাখি চোখে পড়বে এখানে এলে। লাউচাপড়ার এ পাহাড় বেড়িয়ে ক্লান্ত হলে নিচে নেমে একটু বসতে পারেন লেকের ধারে। সবুজ ঘাসের মাঝে কৃত্রিম এ লেকটি বেশ সুন্দর। লেকের পাশে কোন গাছের ছায়ায় বসে কাটাতে পারেন কিছুটা সময়। এ সময়টাতে গেলে বেড়িয়ে আনন্দ পাবেন। কেননা পিকনিক মৌসুমে এখানে থাকে পিকনিক পার্টির ভীড়।

 

পিকনিট স্পটের প্রায় ১৫০ ফুট উঁচু পাহাড়ের উপর আরও ৬০ ফুট উঁচু একটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। এই ওয়াচ টাওয়ারের উপর থেকে সারি সারি সবুজ পাহাড়, মেঘের লুকোচুরি খেলা এবং অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। জোছনা রাতে পাহাড়ে বসে অবগাহন করতে পারেন চরাচর ব্যাপী আলোকিত জ্যোৎস্না। পাহাড়ের খাঁজে-ভাঁজে অবস্থিত লাউচাপড়া, দিঘলাকোনা, বালুঝুড়ি, সাতানীপাড়া, পলাশতলা, মেঘাদল, শুকনাথপাড়া, গারোপাড়া, বালিজোড়া, সোমনাথপাড়া, বাবলাকোনা গ্রামের গারো, কোচ, হাজং আদিবাসী পরিবারের জীবন-যাপনে মুগ্ধ হতে পারেন। আর লাউচাপড়া পিকনিক স্পটে শিশুদের জন্য রয়েছে দোলনা, স্লিপার সহ বেশকিছু রাইড এবং গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। পার্কে প্রবেশ করতে দশ টাকা দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে হয়।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে ড্রীমল্যান্ড পরিবহন বা আপনার সুবিধামত বাসে চড়ে শেরপুর এসে সেখান থেকে অন্য বাসে বকশীগঞ্জ চলে আসুন। বকশীগঞ্জ থেকে রিকশা বা ভ্যানে করে সহজে লাউচাপড়া পিকনিক স্পট যাওয়া যায়।

 

কোথায় থাকবেন?

পর্যটকদের কথা ভেবে জামালপুর জেলা পরিষদ ১৯৯৬ সালে ২৬ একর জায়গা জুড়ে গারো পাহাড়ের চূড়ায় নির্মাণ করেছে পিকনিক স্পট ‘ক্ষণিকা’। এখানে রাতে থাকার জন্য রয়েছে জেলা পরিষদের ডাকবাংলো। এখানে থাকতে গেলে আগে থেকে অনুমতি নিয়ে আসতে হবে।

 

এছাড়া ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে উঠেছে বিলাসবহুল রিসোর্ট ‘বনফুল রিসোর্ট’। এখানে আপনি আধুনিক সব সুযোগ সুবিধাই পাবেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। এই রিসোর্টে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ ছাড়াও রয়েছে সাধারণ কক্ষ। রিসোর্টে নিজস্ব বাবুর্চি দিয়ে রয়েছে রান্নার ব্যবস্থা।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?