ভাটপাড়া নীলকুঠি | Bhatpara Neelkuthi 18/01/2022


PC:


ব্রিটিশ শাসনামলে এদেশে নীল চাষ পরিচালনার জন্য ইংরেজরা বিভিন্ন স্থানে কুঠি গড়ে তোলে যা নীলকুঠি নামে পরিচিত। মেহেরপুর জেলার গাংনি উপজেলা শহর হতে প্রায় সাত কিলোমিটার উত্তরদিকে ভাটপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণে কাজলা নদীর পূর্বতীরে এই ভাটপাড়া নীলকুঠির (Bhatpara Neelkuthi) অবস্থান। এর সামনে আমবাগান ও দক্ষিণ পশ্চিম পাশে নীল কুঠির কর্মকর্তাদের প্রার্থনার জন্য একটি চার্চের ভগ্নাংশ আছে।

 

১৭৯৬ সালে এখানে নীল চাষ শুরু হয়। এ সময় বিখ্যাত বর্গী দস্যু নেতা রঘুনাথ ঘোষালির সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে গোয়ালা চৌধুরী নিহত হলে মেহেরপুর অঞ্চল রানী ভবানীর জমিদারীভুক্ত হয়। রানী ভবানী নিহত হলে কাসিম বাজার অঞ্চলটি ক্রয় করেন হরিনাথ কুমার নন্দী। পরে হাত বদল হয়ে গোটা অঞ্চলটি মথুরানাথ মুখার্জির জমিদারীভুক্ত হয়। এক সময় মথুরানাথ মুখার্জির সঙ্গে কুখ্যাত নীলকর জেমস হিলের বিরোধ হয়। অথচ মথুরানাথের ছেলে চন্দ্র মোহনই বৃহৎ অঙ্কের টাকা নজরানা নিয়ে মেহেরপুরকে জেমস হিলের হাতে তুলে দেয়। বর্তমানে মূল ভবন ছাড়াও জেলখানা, মৃত্যুকূপ ও ঘোড়ার ঘরগুলো দাঁড়িয়ে আছে জরাজীর্ণ অবস্থায়।

 

১৮৫৯ সালে নির্মিত ভাটপাড়া নীলকুঠি তৈরীতে ইট, চুন-শুরকি, লোহার বীম এবং ইটের টালি ব্যবহার করা হয়েছে। কাজলা নদীর তীরে অবস্থিত ব্রিটিশ বেনিয়াদের নির্যাতনের সাক্ষী ভাটপাড়া নীলকুঠিরের দৈর্ঘ্য ৮০ ফুট এবং প্রস্থ ৭০ ফুট। প্রচলিত আছে, গভীর রাতে এখানে এসে দাঁড়ালে শোনা যায় নর্তকীদের নূপুরের আওয়াজ ও চাষিদের বুকফাটা আর্তনাদ। কালের সাক্ষী ভাটপাড়া কুঠিবাড়িতে আগে অনেক পর্যটক এলেও ধ্বংসাবশেষ দেখে হতাশ হয়েই ফিরতে হতো।

 

২০১৬ সালের শেষের দিকে কাজলা নদীর ধারের নীলকুঠি বাড়িটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। ২০১৭ সালের শুরুর দিকেই এর কাজ শুরু করা হয়।   ভাটপাড়া নীলকুঠিকে ঘিরে তৈরি ডিসি ইকোপার্কে আছে কৃত্রিম লেক, বিভিন্ন প্রাণীর ভাস্কর্য, ঝর্ণাধারা, খেলাধুলার সরঞ্জাম এবং ফুলের বাগান।

 

কিভাবে যাবেন?

মেহেরপুর জেলা সদর থেকে বাস, ইজিবাইক, নছিমন ইত্যাদিতে চড়ে সহজেই ১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভাটপাড়া নীলকুঠি বাড়িতে যেতে পারবেন।

 

কোথায় থাকবেন?

গাংনী উপজেলার পলাশীপড়া সমাজকল্যাণ সমিতির রেস্ট হাউজে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া রাত্রিযাপনের জন্য জেলা পরিষদের ডাকবাংলো, সার্কিট হাউজ, পৌর হল এবং ফিন টাওয়ারসহ বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে।

 

কোথায় খাবেন?

মেহেরপুরে খাবারের জন্য বেশকিছু হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। তবে অবশ্যই আমের মৌসুমে মেহেরপুরে গেলে পাকা আম খেতে ভুল করবেন না। এছাড়া মেহেরপুর শহরে “সাবিত্রী” নামের মিষ্টির স্বাদ চেখে দেখতে পারেন।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?