ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের মদনেরপাড়া গ্রামে ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার (Friendship Center) নামক এই ভবনের প্রতি মানুষের ভালোলাগার পিছনে এর নির্মাণ শৈলী প্রধান কারন। মাটির নিচে নির্মিত এ ভবন উপর থেকে দেখতে অনেকটা প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারের মতো। এর নির্মাণ শৈলীর অনুপ্রেরণাও প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার মহাস্থানগড় থেকে পাওয়া। ভবনের ছাদ আর ভূপৃষ্ঠ একই লেভেলে, তাই দূর থেকে ভবনটি দেখা যায় না। ছাদে সবুজ ঘাসের আচ্ছাদন যেটি ছাদ ও গ্রাউন্ডের নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করেছে।
সম্পূর্ণ মাটির নিচে অবস্থিত এই ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার তার নান্দ্যনিক নির্মাণশৈলীর জন্য ইতিমধ্যে দেশ বিদেশের বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছে। মহাস্থানগড় বৌদ্ধ বিহারের অনুপ্রেরণায় নির্মিত ভবনের স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী। এ স্থাপনাটি ২০১৪-১৬ সালের শ্রেষ্ঠ স্থাপনা হিসেবে ‘আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার’ পুরস্কারের জন্য বিশ্বব্যাপী চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়া ১৯টি স্থাপত্যের একটি হিসেবে নির্বাচিত হয়। ভূমি সমতলে ভবনের ছাদের অবস্থান, আর ছাদের উপর শোভাবর্ধন করে আছে চোখ জুড়ানো সবুজ ঘাস।
২০০২ সালে প্রান্তিক ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবন যাপনের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ফ্রেন্ডশিপ নামের এই সংস্থাটি যাত্রা শুরু করে। ২০১২ সালের ১৮ নভেম্বর গাইবান্ধা-বালাসী সড়ক ঘেঁষে ফুলছড়ি উপজেলার মদনেরপাড়া গ্রামে প্রায় ৮ বিঘা জমির মাটির নিচে ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারটি গড়ে তোলা হয়। ৩২ হাজার বর্গফুট ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারে ২টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে, থাকার জন্য ২৪টি কক্ষ, উন্নত খাবার ব্যবস্থার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ খেলাধুলা, বই পড়ার জন্য লাইব্রেরি ব্যবস্থা আছে। আছে ইন্টারনেট সুবিধা, উন্নতমানের শব্দযন্ত্র, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। এখানকার জমিতে চাষ করা হয় বিষমুক্ত সবজি। তাদের নির্মিত ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারে সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্টিকে নানাবিধ প্রশিক্ষণে মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলা হয়।
ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার নির্মাণে প্রায় দুই বছর সময় লেগেছে এবং এই ভবন নির্মাণে খরচ হয়েছে আনুমানিক আট কোটি টাকা। ভবনের জন্য নির্ধারিত জমি খুবই নিচু হওয়াই পানি আটকাতে চারিদিকে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁধের কারণে মাটি ভরাট করতে হয়নি। ভবন নির্মাণ হয়েছে সাশ্রয়ী। প্রশিক্ষণ সেন্টার হওয়ায় প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য নিরিবিলি ও শান্ত একটি পরিবেশ তৈরি এবং পর্যাপ্ত আলো আর বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভবনের ছাদে সবুজ ঘাসে ঢাকা ও কক্ষগুলো মাটির নিচে থাকায় প্রাকৃতিকভাবেই অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা থাকে। চারপাশের কক্ষগুলো ছাড়া অন্য ঘরের প্রাকৃতিক আলোর উৎস স্কাই লাইট। ভেন্টিলেসন ব্যবস্থাও প্রাকৃতিক। প্রতিটি ব্লকের উচ্চতা সমান, পুরো বিল্ডিংয়ে লাইট কোর্ট ও উন্মুক্ত চাতাল আলো-ছায়ার দারুণ সমাহার তৈরি করে। ভবন এলাকায় ৫টি ওয়াটার পুল আছে। পুরো ভবনে অভিন্ন ইট আর সিমেন্টের গাঁথুনি প্লাস্টার ব্যবহার হয়নি। ছাদে যাতে কোনো পানি জমে না থাকে সে জন্য পুরো ছাদজুড়ে চমৎকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা। কিছু কিছু স্থানে খুব যত্ন সহকারে ড্রেনকে দৃষ্টির আড়াল করা হয়েছে।
পুরো সেন্টারে দুটি ব্লক। বহিঃকার্যক্রমের জন্য ‘ক’ ব্লক, অফিস, ট্রেইনিং সেন্টার, লাইব্রেরি এবং আন্তঃকার্যক্রমের জন্য ‘খ’ ব্লক মূলত আবাসন। রুমের অবস্থান ও কার্যক্রম অনুসারে পুরো নির্মাণ এলাকা ২৪ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন- লাইব্রেরি, এডমিন রুম, রিসেপসন, পার্কিং ইত্যাদি।
মনে রাখতে হবে ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারটি জনসাধারণের জন্য উন্মোক্ত নয়। পূর্বানুমতি সাপেক্ষে এর ভেতরটা পরিদর্শন করা যেতে পারে।
কিভাবে যাবেন?
গাইবান্ধা শহর থেকে সিএনজি বা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে সরাসরি ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারের পৌঁছাতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
গাইবান্ধায় রাত যাপনের জন্যে আছে গাইবান্ধা সার্কিট হাউজ, এসকেএস ইন হোটেল ও গণ উন্নয়ন কেন্দ্র। এরমধ্যে কলেজ রোডে অবস্থিত এসকেএস ইন হোটেলের মান সবচেয়ে ভাল। রুমের সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী ভাড়া ৩৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা।