তুলসি লাহিড়ীর জমিদারবাড়ি | Tulsi Lahiri Zamindar Bari 23/01/2022


PC:


বৌদ্ধ, হিন্দু, মোঘল, পাঠান আমলসহ ইংরেজ শাসনামলের স্মৃতি বিজড়িত আমাদের এই গাইবান্ধা জেলা বিভিন্ন শাসনামলে নানা সংগ্রাম-বিদ্রোহ এ অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছে। তাই এই অঞ্চলে বিভিন্ন সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে নলডাঙ্গার জমিদারবাড়ি (Tulsi Lahiri Zamindar Bari) অন্যতম।

 

উপমহাদেশের প্রখ্যত নাট্যকার নাট্যশিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও চলচ্চিত্র অভিনেতা তুলসী লাহিড়ীর স্মৃতি-বিজড়িত সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গার জমিদারবাড়ি এ জেলার অতীত গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস বহন করে চলেছে। তুলসী লাহিড়ী (১৮৯৭-১৯৫৯ খ্রি:) নলডাঙ্গায় এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বি.এ. ও বি.এল. পাস করে তিনি প্রথমে রংপুর শহরে ও পরে কলকাতায় আলিপুর কোর্টে ওকালতি করেন। এ সময় তাঁর রচিত দুটি গান জমিরউদ্দিন খাঁ রেকর্ড করলে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি পরিচিত হন। এর ফলে হিজ মাষ্টার্স ভয়েস ও মেগাফোন গ্রামোফোন কোম্পানীতে তিনি সঙ্গীত পরিচালকের পদ লাভ করেন। এক সময়ে তিনি আইন ব্যবসা ত্যাগ করে চলচ্চিত্র ও নাট্যাভিনয়ে যোগ দেন এবং ক্রমে মঞ্চাভিনেতা, চিত্রাভিনেতা, গীতিকার, নাট্যকার ও চিত্রপরিচালক হিসেবে দেশবরেণ্য হন। তুলসী লাহিড়ী যখন চিত্রজগতে প্রবেশ করেন তখন ছিলো চলচ্চিত্রের নির্বাক যুগ। ক্রমে সবাক যুগের প্রচলন হয় এবং তিনি পঞ্চাশটির ও বেশি ছবিতে অভিনয় করেন। তখন থেকেই বাড়িটি তুলসি লাহিড়ীর জমিদারবাড়ি নামে পরিচিত।

 

১৩৩৪ বঙ্গাব্দে নির্মিত শ্রীশ্রী শৈলেশ্বর মন্দিরের শিলালিপি থেকে নলডাঙ্গা জমিদার বংশের পূর্বপুরুষ সুরেন্দ্র দেবশর্মা ও শ্রীমতী শৈলবালা দেবীশর্মার নাম পাওয়া যায়। এ দম্পতির সন্তান তুলসি লাহিড়ী। এ জমিদারবাড়িতে রয়েছে শ্রীশ্রী শৈলেশ্বর মন্দির। ভারতের কাশি থেকে আনা পাথরের তৈরি করা এ মন্দির। জমিদারবাড়ির প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শনগুলোর মধ্যে ১২৮০ সালে তৈরি ভগ্নপ্রায় কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ ও শ্বেতপাথরের বিষুষ্ণ মন্দির রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ৫ একর ১৭ শতাংশ আয়তনের বিশাল পুকুর। এখানে থেকেই লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা, ডাউয়াবাড়ি, বগুড়ার শেরপুর ও পশ্চিম দিনাজপুরের বিভিন্ন অঞ্চলের জমিদারি কার্যক্রম তদারকি করতেন তুলসি লাহিড়ী। তুলসি লাহিড়ী ৬২ বছর বয়সে ১৯৫৯ সালে কলকাতায় পরলোকগমন করেন।

 

সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে গাইবান্ধার এইসব গৌরবোজ্জল প্রত্নসম্পদ, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক। ঐতিহাসিক-এ নিদর্শনগুলোকে এখনই সযত্নে সংরক্ষণ করা না হলে একসময় সেসব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে চিরকালের মতো।

 

কিভাবে যাবেন?

লাহিড়ী বাড়ীতে যাওয়ার জন্য গাইবান্ধা জেলা থেকে ট্রেন, সিএনজি, অটোরিক্সিা, মটর সাইকেল প্রাইভেট কার দিয়ে যাওয়া যায়। 

 

কোথায় থাকবেন?

গাইবান্ধায় রাত যাপনের জন্যে আছে গাইবান্ধা সার্কিট হাউজ, এসকেএস ইন হোটেল ও গণ উন্নয়ন কেন্দ্র। এরমধ্যে কলেজ রোডে অবস্থিত এসকেএস ইন হোটেলের মান সবচেয়ে ভাল। রুমের সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী ভাড়া ৩৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?