মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা | Mir Mosharraf Hossain Bastubita 18/01/2022


PC:


কুষ্টিয়ার লাহিনীপাড়া গ্রামে একসময়ের জনপ্রিয় উপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা (Mir Mosharraf Hossain Bastubita) অবস্থিত। প্রতিদিন এখানে আসেন শত শত দেশী-বিদেশী পর্যটক।

 

১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মীর মশাররফ হোসেন। তার পিতা মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ছিলেন জমিদার। নিজগৃহে মুনুশীর নিকট আরবি ও ফারসি শেখার মাধ্যমে মশাররফ হোসেনের হাতেখড়ি হয়। পরে পাঠশালায় গিয়ে তিনি বাংলাভাষা শেখেন। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয় কুষ্টিয়া স্কুলে। পরে তিনি কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়ন করে কলকাতার কালীঘাট স্কুলে ভর্তি হোন কিন্তু তিনি লেখাপড়ায় আর বেশি দূর অগ্রসর হননি।

 

কর্ম জীবনের শুরুতে মশাররফ হোসেন পিতার জমিদারি দেখাশুনা করেন। পরে তিনি ফরিদপুর নবাব এস্টেটের ম্যানেজারের চাকরি নেন এবং ১৮৮৫ সালে দেলদুয়ার এস্টেটের ম্যানেজার হন। এক সময় এ চাকরি ছেড়ে তিনি লাহিনীপাড়ায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং পরে ভাগ্যান্বেষণে কলকাতায় গিয়ে ১৯০৩-১৯০৯ সাল পর্যন্ত অবস্থান করেন। মোশাররফ হোসেন ছাত্রাবস্থায় সংবাদ প্রভাকর ও কুমারখালীর গ্রামবার্তা প্রকাশিকার মফস্বল সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন। এখানেই তার সাহিত্য জীবনের শুরু। গ্রামবার্তার সম্পাদক কাঙাল হরিণাথ ছিলেন তার সাহিত্য গুরু। পরবর্তীকালে তার দ্বিতীয়া স্ত্রী বিবি কুলসুমও এক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখেন।

 

ঊনিশ শতকের বঙ্কিমযুগের অন্যতম প্রধান গদ্যশিল্পী ও বাঙালী মুসলমান সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ মীর মশাররফ হোসেনের মোট গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ৩৭টি। বিশুদ্ধ বাংলায় একে একে তিনি লিখে গেছেন বিভিন্ন কালজয়ী গদ্য, পদ্য, প্রবন্ধ, নাটক এবং উপন্যাস। তৎকালীন সময়ে ‘জমিদার দর্পন’ নাটকের জন্য তিনি শ্রেষ্ট নাট্যকারের মর্যাদা লাভ করেন। লাহিনীপাড়ায় কবির জন্মস্থানকে ঘিরে বর্তমানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি লাইব্রেরী, জাদুঘর ও অডিটরিয়াম রয়েছে।

 

কিভাবে যাবেন?

কুষ্টিয়া জেলা শহরের যেকোন জায়গা হতে রিক্সা বা ইজিবাইকে চড়ে সৈয়দ মাসুদ রুমি সেতুর টোল ঘাটের পাশে লাহিনীপাড়া মোড় নামক স্থানে অবস্থিত মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটায় যেতে পারবেন।

 

ট্রেনে যেতে চাইলে সুন্দরবন এক্সপ্রেস অথবা চিত্রা এক্সপ্রেসে যেতে পারবেন। সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকালে এবং চিত্রা এক্সপ্রেস সন্ধ্যায় কমলাপুর রেল স্টেশন হতে ছাড়ে। ট্রেনে গেলে আপনাকে পোড়াদহ বা ভেড়ামারা স্টেশনে নামতে হবে। ভেড়ামারা বা পোড়াদহ থেকে বাস বা সিএনজি তে করে কুষ্টিয়া শহরে আসতে হবে।

 

কোথায় থাকবেন?

কুষ্টিয়া শহরে মোটামুটি মানের আবাসিক হোটেলে রাতে থাকতে পারবেন। একটু ভাল মানের হোটেলের মধ্যে রয়েছে হোটেল রিভার ভিউ ও হোটেল নূর ইন্টারন্যাশনাল। এছাড়া মজমপুর ও এন এস রোডে বেশ কিছু মধ্যম মানের হোটেল রয়েছে।

 

কোথায় খাবেন?

কুষ্টিয়ার কোর্ট স্টেশন এলাকার হোটেল শফি-তে খেয়ে দেখতে পারেন। এছাড়া জাহাঙ্গীর হোটেল, শিল্পী হোটেল, খাওয়া-দাওয়া হোটেলে ভাল মানের খাবার পাওয়া যায়। আর কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা ও কুলফি মালাই অবশ্যই খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?