ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
PC: Khalid Rahman
কবিগুরু ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ বিশ্ব সাহিত্যাঙ্গনে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতই আলোকিত এক নাম। কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের খোরেশদপুর গ্রামে অবস্থিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক বাড়িটিই শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি (Shilaidaha Rabindra Kuthibari) নামে পরিচিত। প্রায় ৩৩ বিঘা আয়তনের রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির মূল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে আড়াই বিঘা জমিতে।
পদ্মা নদীর কোল ঘেঁষে গ্রামটির পূর্ব নাম খোরশেদপুর। রবীন্দ্রনাথের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮০৭ সালে এ অঞ্চলের জমিদারি পান। পরবর্তিতে ১৮৮৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে জমিদার হয়ে আসেন। এখানে তিনি ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারী পরিচালনা করেন। ৩ তলা বিশিষ্ট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িতে সর্বমোট ১৮ টি কক্ষ আছে। ভবনের তৃতীয় তলায় ছিল কবির লেখার ঘর। এখানে বসেই তিনি রচনা করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, গীতাঞ্জলি ইত্যাদি। এখানে রবীন্দ্রনাথের সাথে দেখা করতে এসেছেন জগদীশ চন্দ্র বসু, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, প্রমথ চৌধুরীসহ আরো অনেকে।
১৯৫৮ সাল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িটি গৌরবময় স্মৃতিরূপে সংরক্ষিত আছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কুঠিবাড়িটির গুরুত্ব অনুধাবন করে কবির বিভিন্ন শিল্পকর্ম সংগ্রহপূর্বক একে একটি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। পুরো ভবনটি এখন জাদুঘর হিসেবে দর্শকদের জন্যে উম্মুক্ত। জাদুঘরের নীচ ও দ্বিতীয় তলায় ১৬টি কক্ষেই কবি রবীন্দ্রনাথ, শিল্পী রবীন্দ্রনাথ, জমিদার রবীন্দ্রনাথ, কৃষক বন্ধু রবীন্দ্রনাথ অর্থাৎ নানা বয়সের বিচিত্র ভঙ্গির রবীন্দ্রনাথের ছবি । বাল্যকাল থেকে মৃতু্শয্যার ছবি পর্যন্ত সংরক্ষিত আছে । তাছাড়াও রয়েছে শিল্পকর্ম এবং তাঁর ব্যবহার্য আসবাবপত্র দিয়ে পরিপাটি দিয়ে সাজানো। কবি ভবনে ব্যবহার্য জিনিসপত্রগুলোর মধ্যে আরো আছে চঞ্চলা ও চপলা নামের দুটো স্পিডবোট, পল্টুন, ৮বেহারা পালকি, কাঠের চেয়ার, টি টেবিল, সোফাসেট, আরাম চেয়ার, পালংক ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস।
গ্রীষ্মকালীন সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি জাদুঘর প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। আর শীতকালীন সময়ে প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে প্রতিদিন বেলা ১ টা থেকে ১ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জাদুঘর সাময়িক বিরতিতে বন্ধ থাকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি জাদুঘরটি সপ্তাহের প্রতি রবিবার পূর্ণ দিন বন্ধ থাকে এবং সোমবার বেলা ২ টা থেকে খোলা থাকে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি জাদুঘর প্রবেশ টিকেটের মূল্য জনপ্রতি ১৫ টাকা এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রবেশ টিকেটের মূল্যে ৫ টাকা। সার্কভুক্ত দেশের দর্শনার্থীদের ৫০ টাকা এবং অন্যান্য সকল বিদেশী পর্যটদের জন্য টিকেটের মূল্য ১০০ টাকা।
কিভাবে যাবেন?
কুষ্টিয়া থেকে অটো রিক্সা, সিএনজি, ইজি বাইক কিংবা অন্যান্য পরিবহনে সহজেই শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে যাওয়া যায়।
ট্রেন এ যেতে চাইলে সুন্দরবন এক্সপ্রেস অথবা চিত্রা এক্সপ্রেসে যেতে পারবেন। সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকালে ছেড়ে যায় অ্যান্ড চিত্রা এক্সপ্রেস সন্ধ্যায় কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। ট্রেনে গেলে আপনাকে পোড়াদহ বা ভেড়ামারা স্টেশনে নামতে হবে। ভেড়ামারা বা পোড়াদহ থেকে বাস বা সিএনজি তে করে কুষ্টিয়া শহরে আসতে হবে। কুষ্টিয়া থেকে অটো রিক্সা বা সিএনজিতে চড়ে সহজেই শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
কুষ্টিয়া শহরে মোটামুটি মানের বেশ কিছু আবাসিক হোটেল আছে। আপনার পছন্দমত যে কোন হোটেল ঠিক করে নিতে পারবেন। একটু ভাল মানের মধ্যে রয়েছে হোটেল রিভার ভিউ, হোটেল নূর ইন্টারন্যাশনাল। এছাড়া মজমপুর ও এন এস রোডে বেশ কিছু মধ্যম মানের হোটেল রয়েছে।
কোথায় খাবেন?
খাওয়া দাওয়ার জন্যে বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল রেস্টুরেন্ট আছে। কোর্ট স্টেশন এলাকার হোটেল শফি তে খেয়ে দেখতে পারেন। এছাড়া জাহাঙ্গীর হোটেল, শিল্পী হোটেল, খাওয়া-দাওয়া হোটেল গুলোতে খেতে পারেন। আর কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা ও কুলফি মালাই অবশ্যই খাবেন।