টেংরাগিরি ইকোপার্ক | Tengra Giri Eco Park 04/05/2021


PC:


PC :নাদিম খান

বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলা থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে সোনাকাটা ইউনিয়নে সুন্দরবনের একাংশের বিশাল বনভূমি নিয়ে গড়ে উঠেছে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য টেংরাগিরি ইকোপার্ক। প্রায় ৪০৪৮ হেক্টর জায়গাজুড়ে পূর্ব পশ্চিমে ৯ কিলোমিটার ও উত্তর দক্ষিণে ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত টেংরাগিরি বনের বিস্তৃতি। বনের পূর্ব দিকে রয়েছে কুয়াকাটা, পশ্চিমে সুন্দরবন আর হরিণবাড়িয়া, উত্তরে রাখাইন এবং দক্ষিণে উন্মুক্ত বঙ্গোপসাগর। বনের ভিতরের ইট বিছানো পথ ধরে হাটতে হাটতে দূর সাগরের মাছ ধরা ট্রলারের শব্দ কানে পৌছতে না পৌছতেই, এক সময় বনের গাছ পালার মাঝ দিয়ে দেখা যাবে ধু ধু সাগরের জলরাশি ও দুই কিলোমিটার দীর্ঘ নিরিবিলি সোনাকাটা বীচ।

 

১৯৬০ সালের ১২ জুলাই সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষণাকৃত এই বনাঞ্চলটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ফাতরার বন/পাথরঘাটার বন/হরিণঘাটার বন ইত্যাদি নামে পরিচিত হলেও ১৯৬৭ সালে বনাঞ্চলটিকে টেংরাগিরি বন হিসেবে নামকরণ করা হয়। সুন্দরবনের পর এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় বনাঞ্চল, যা দিনে দুইবার জোয়ার ভাটায় প্লাবিত হয়। লবনাক্ত ও মিষ্টি মাটির অপূর্ব মিশ্রণের কারণে এই বনে রয়েছে বিলুপ্তি প্রজাতির অসংখ্য সারি সারি গাছ, পশু পাখি ও সরীসৃপ প্রাণী। টেংরাগিরির সবুজ ঘন ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল, লাল কাঁকড়াদের অবাধ বিচরণ, পাখির কলকাকলি ও শেষ বিকেলের দিগন্ত রেখায় সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য যেকোনো পর্যটকদের মুগ্ধ করার মতো। আর সে জন্যেই যান্ত্রিক কোলাহল এড়িয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাগরের বিশালতার মাঝে হারিয়ে যেতে অনেকে ভ্রমণ পিপাসুরা দূর দূরান্ত থেকে এখানে ছুটে আসে।

 

প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এই বনটি কেওড়া, গরাণ, সিংরা, হেতাল, গণি, গেওয়া, ওড়াসহ বিভিন্ন শ্বাসমূলীয় গাছ-গাছালি দেখতে পাবেন। কয়েকটি ছোট ছোট খাল বনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে যেখানে আপনি ট্রলার সংরক্ষণ করতে পারেন এবং গভীর বন এবং জীব বৈচিত্রের অপূর্ব রূপগুলি দেখতে যেতে পারেন। বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের আওতায় টেংরাগিরি ফরেস্ট রিজার্ভের সখিনা বিটে ইকো পার্কটি স্থাপন করা হয়েছে। এই ইকোপার্কে একটি কুমির প্রজনন কেন্দ্র রয়েছে যেখানে ৩ টি কুমির রয়েছে। তিনটি কুমিরের নামকরণ করা হয়েছে বনের নাম অনুসারে যথা- টেংরা, গিরি এবং সখিনা। বর্তমানে এই বনকে শকুনের নিরাপদ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে সড়ক ও নৌপথে বরগুনা যাওয়া যায়। ঢাকার সায়েদাবাদ কিংবা গাবতলী থেকে বাসে চড়ে বরগুনার তালতলী পৌঁছে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে সোনাকাটা ইকোপার্ক যেতে পারবেন। এছাড়া নৌপথে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল হতে পটুয়াখালী রুটের লঞ্চে বরগুনা যাওয়া যায়। এরপর বরগুনা থেকে বাসে আমতলী এসে মোটরবাইক অথবা ইজিবাইকে সোনাকাটা যেতে পারবেন। এছাড়া কুয়াকাটা থেকে লোকাল ট্রলারে বা রিজার্ভ নিয়ে টেংরাগিরি ইকোপার্ক/ফাতরার বনে যাওয়ার ব্যবস্থা আছে।

 

কোথায় খাবেন?

বনের পাশে ফকিরের হাট নামে একটা বাজার আছে সেখানের খাবারের দোকান গুলোতে ভাত, মাছ, মুরগির মাংস ভুনা পাওয়া যায়।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?