
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021

ধুপপানি ঝর্ণা | Dhuppani…
16/04/2021
.jpg)
ঝরঝরি ট্রেইল | Jorjori…
02/05/2021
.jpg)
রিসাং ঝর্ণা | Risang…
20/03/2021
16/04/2021
16/04/2021
02/05/2021
20/03/2021
PC: Amit Rudro
খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে দীঘিনালা উপজেলার জামতলি পোমাংপাড়া হয়ে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তৈদুছড়া ঝর্ণা। স্থানীয়দের ভাষায় তৈদু অর্থ পানির দরজা বা জানালা। আর ছড়া মানে ঝর্ণা। তাই স্থানীয় ত্রিপুরা আদিবাসীরা এ ঝর্ণাটির নাম দিয়েছে ‘তৈদুছড়া’ । সে থেকেই ছড়াটির নাম তৈদুছড়া আর এলাকার নাম তৈদুপাড়া।
পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা উঁচু-নিঁচু মেঠ পথ পেরিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় ঝরণা ও অন্যতম জলপ্রপাত এ তৈদুছড়া ঝর্ণা দেখতে দীঘিনালা হতে সব মিলিয়ে তৈদুছড়া পর্যন্ত পৌছতে প্রায় চার ঘন্টা সময় লাগে। পথে ছোট বড় বেশকিছু ঝর্ণা ও পাহাডড়ের স্বর্গীয় রূপ মুগ্ধ করবে যে কাউকে। তবে তৈদুছড়া ঝর্ণার পানির ধারা একটু ব্যতিক্রম, পাহাড়ের গা বেঁয়ে সিঁড়ির মতো তৈরি হওয়া অসংখ্য পাথুরে ধাপ হতে জল গড়িয়ে ছোট একটি হ্রদের সাথে মিলিত হয়েছে। ঝর্ণার পাশেই প্রায় ৮০ ফুট উঁচু থেকে বয়ে যাওয়া থাংঝাং নামের আরেকটি ঝর্ণা। মূলত থাংঝাং ঝর্ণা হতে সৃষ্ট ঝিরির পানি থেকেই তৈদুছড়া ঝর্ণার উৎপত্তি হয়েছে। তৈদুছড়া ঝর্ণার ডানপাশ দিয়ে ঝিরি পথ পার হয়ে প্রায় ঘণ্টা খানিক হাঁটলেই থাংঝাং ঝর্ণা দেখতে পাবেন।
পাহাড়ের গাছের শিকড়, ঘাস, মাটি ধরে বেয়ে উঠতে হয়। কখনো গরমে প্রচণ্ড কষ্ট, আবার কখনো প্রচণ্ড পিচ্ছিল ঝিরিপথ। যেমনই পিচ্ছিল পথ তেমনই সুন্দর। কোথাও কোন মানুষ নেই, শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। হাঁটতে হাঁটতে দেখবেন ঝিরিপথের স্বচ্ছ পানিতে ছোট ছোট মাছ ছোটাছুটি করছে। পাহাড়ের ফাটল দিয়ে পরিষ্কার পানি বের হচ্ছে, বাঁশ চুইয়ে কলের মত পানি পরছে, চাইলে সেই পানি খেতে বা নিয়ে আসতে পারবেন বোতলে করে। কখনো সুরঙ্গের মত ঝিরিপথ বড় বড় পাথর আর গাছ দিয়ে ঢাকা, প্রায় অন্ধকার। কোথাও পাহাড়ি ঢলে বয়ে আনা মরা গাছ পরে ব্রিজ এর মত হয়ে আছে, তার উপর দিয়ে পার হতে হবে আপনাকে। আবার বড় বড় পাথর ডিঙিয়ে রাস্তা করে নিতে হবে আপনার। ঝিরিপথের কোথাও হাঁটু পানি কোথাও বুক সমান পানি আবার কোথাও অনেক গভীর। এখানে সারা বছরই পানি থাকে।
কিভাবে যাবেন?
যদি সীমানা পাড়া হয়ে তৈদুছড়া ঝর্ণা যেতে চান তবে খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা মোড় থেকে দীঘিনালাগামী বাস বা সিএনজি নিয়ে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে সীমানা পাড়া যাওয়ার রাস্তায় নামতে হবে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে ৩ কিলোমিটার গেলে সীমানা পাড়া পৌঁছে যাবেন। তবে শাপলা মোড় থেকে চান্দের গাড়ী নিলে সরাসরি সীমানা পাড়া যেতে পারবেন। সীমানা পাড়া থেকে গাইড নিয়ে ট্র্যাকিং করে তৈদুছড়া ঝর্ণা ও থাংঝাং ঝর্ণায় যেতে হয়।
আর যদি দীঘিনালা থেকে যেতে চান তবে খাগড়াছড়ির শাপলা মোড় থেকে বাস বা আপনার সুবিধাজনক যানবাহনে দীঘিনালা চলে আসুন। তারপর সেখান থেকে গাড়ী বা মোটর সাইকেলে জামতলী যেতে হবে। জামতলীর পোমাংপাড়া থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার রাস্তা ট্র্যাকিং করে তৈদুছড়া ঝর্ণা পৌঁছাতে পারবেন। দীঘিনালা হতে তৈদুছড়া পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যেতে ৪-৫ ঘণ্টা সময় লাগে। খাগড়াছড়ি থেকে সকাল ৭ টায় রওনা দিয়ে সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আসা যায়।
কোথায় থাকবেন?
দীঘিনালাতে আল আমিন, দীঘিনালা গেস্ট হাউজ ও হোটেল জুরানির মতো সাধারন মানের আবাসিক হোটেল আছে। তবে ভালো মানের হোটেলে থাকতে হলে আপনাকে খাগড়াছড়িতে ফিরে আসতে হবে। খাগড়াছড়ি শহরে রাত্রি যাপনের জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। হোটেলে ভেদে এক রাত অবস্থানের জন্য আপনাকে ৬০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা প্রদান করতে হবে। খাগড়াছড়ি শহরে ভালো মানের আবাসিক হোটেলের মধ্যে রয়েছে –
• হোটেল হিল প্যারাডিসে : খাগড়াছড়ি শহরে অবস্থিত এসি, নন এসি, ভিআইপি এসি ও গ্রুপ রুমের সুবিধা সহ শ্রেণী অনুযায়ী ভাড়া ১২০০ থেকে ৫০০০ টাকা।
• হোটেল গাইরিং : খাগড়াছড়ি শহরে অবস্থিত এসি, নন এসি, ভিআইপি এসি ও গ্রুপ রুমের সুবিধা সহ শ্রেণী অনুযায়ী ভাড়া ১২০০ থেকে ৫০০০ টাকা।
• অরণ্য বিলাস : শহরের নারিকেল বাগানে অবস্থিত এই হোটেলে টুইন বেড এসি ৩০০০ টাকা, কাপল এসি ২০০০ টাকা, টুইন নন এসি ২৫০০ টাকা এবং কাপল নন এসি ১৫০০ টাকা ভাড়া।
• হোটেল ইকোছড়ি ইন : এই হোটেলটি হলো তাদের জন্য যারা শহরের কোলাহল থেকে নিজেকে একটু সরিয়ে রাখতে চান। এই হোটেলটি খাগড়াছড়ি শহর থেকে ২.৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রুম ভেদে এখানে এক রাত অবস্থানের জন্য আপনাকে ১৫০০ টাকা থেকে ৩৬০০ টাকা প্রদান করতে হবে।
যদি খুবই কম খরচে থাকতে চান তাহলে নারিকেল বাগানের "গাংচিল আবাসিক হোটেলে" থাকতে পারেন। এই হোটেলটিতে ৬০০-১০০০ টাকায় থাকতে পারবেন।
কোথায় খাবেন?
দীঘিনালাতে ক্যাফে আমন্ত্রণ রেস্টুরেন্ট, সাদিয়া হোটেল ও দরবার হোটেলের মতো সাধারন মানের হোটেল পাবেন। খাগড়াছড়ির সিস্টেম রেস্তোরা, পেডা টিং টিং, গাং সাবারং, পাজন ও চিম্বাল রেস্টুরেন্টের খাবার বেশ জনপ্রিয়।