আজিম চৌধুরীর জমিদার বাড়ি | Ajim Chowdhuri Zamindar Bari 20/01/2022


PC:


বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের আনাচে কানাচে জমিদার বাড়ির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এই সকল জমিদার বারিগুলো ইতিহাস বুকে আগলে ধরে দাড়িয়ে আছে। পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার আজিম চৌধুরীর জমিদার বাড়ি (Ajim Chowdhuri Zamindar Bari) তাদের মধ্যে অন্যতম।

 

২৫০ বৎসর আগে এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন জমিদার রহিম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি ছিলেন সেসময়ের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। তিনি জমিদার বাড়িটির প্রতিষ্ঠাতা হলেও বাড়িটি পরিচিতি পায় তার সন্তান আজিম চৌধুরীর নামে। বর্তমানে এই জমিদার বাড়িটি আজিম চৌধুরীর জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত। জমিদার বাড়িটি আজিম চৌধুরীর নামে হওয়ার কারণ হল, তিনি যখন এই জমিদার বাড়ির জমিদারি পান তখনই এই জমিদার বাড়িটি ব্যাপক ভাবে বিস্তার লাভ করে এবং সকলের মাঝে পরিচিতি পায়।

 

বাড়িতে প্রবেশের প্রথম গেটে ২টি আধুনিক স্বয়ংক্রিয় কামান স্থাপন করার পাশাপাশি সর্বদা দু’টি বিশাল আকৃতির হাতি দণ্ডায়মান রাখা হতো। হাতি দুটি জমিদার বাড়ির নিরাপত্তা প্রহরীর কাজে ব্যবহার করা ছাড়াও জমিদার আজিম চৌধুরীর ভ্রমণ কাজেও ব্যবহৃত হতো। ১২০ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত অত্যাধুনিক স্থাপত্যশৈলীর এই বাড়িটির ছিল ১১টি নিরাপত্তা গেট। পুরো বাড়িটি ছিল নান্দনিক কারুকার্য মণ্ডিত। ভবনগুলো ছিল বহু কক্ষের, প্রতিটি কক্ষই ছিল বহু দরজা বিশিষ্ট। কক্ষ গুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা ছিল। এছাড়াও এই জমিদারবাড়িতে ছিল কাছারি ঘর, পাতিশাল-ঘোড়াশাল। সেই সাথে নিরাপত্তার জন্য বাড়িটির চারপাশ ঘিরে খনন করা হয়েছিল বিশাল নিরাপত্তা দীঘি। অভ্যন্তরে জমিদার পরিবারের বিবিদের গোসলের জন্য খনন করা হয়েছিল একটি পুকুর এবং জমিদার দরবারে কর্মরত-কর্মকর্তা কর্মচারীদের গোসলের জন্য বাড়ির বাইরে খনন করা হয়েছিল একটি বিশাল পুকুর।

 

জমিদার আজিম চৌধুরী তার জমিদারির সময় ৩টি নীল কুঠি স্থাপন করেন দুলাই গ্রামে। গ্রামের কৃষকদের কৃষি কাজে উৎসাহিত করার জন্যই এই জমিদারবাড়িটি স্থাপন করেন। নামাজ আদায়ের জন্য নির্মাণ করেছিলেন একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ। লোক মুখে জানা যায় তিনি অত্যন্ত আদর্শবান জমিদার ছিলেন। তার সুখ্যাতি ছিল গোটা বাংলা জুড়ে। বর্তমানে এই জমিদার বাড়িটি প্রায় ধ্বংসের মুখে। জমিদার বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ করছেন আজিম চৌধুরীর বংশধররা। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর এটি আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পরে। পরে জমিদার বাড়ির বংশধররা দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই জমিদার বাড়িটি ১৯৯৪ সালে ফিরে পান। 

 

কিভাবে যাবেন?

পাবনা হতে ১৯ কি.মি. দুরে সিএনজি/নিজ পরিবহন যোগে সুজানগর যাওয়া যায়। সুজানগর উপজেলা থেকে সিএনজি যোগে পোড়াডাঙ্গা বাজার হয়ে চিনাখড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে পূর্ব দিকে পাবনা নগরবারী মহাসড়কের পার্শে দুলাই বাজারের ৫০০ মিটার দক্ষিন দিকে রিক্সা/ভ্যান যোগে জমিদার বাড়ী যাওয়া যায়।

 

কোথায় থাকবেন?

পাবনা জেলা সদরে রাত্রিযাপনের জন্য হোটেল প্রবাসী ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল মুন, লাকি হোটেল, হোটেল রোহান, হোটেল পার্ক বোর্ডিং ও হোটেল ছায়ানীড় প্রভৃতি আবাসিক হোটেল রয়েছে।

 

কোথায় খাবেন?

পাবনা আব্দুল হামিদ রোডে বেশ কিছু খাবার হোটেল রয়েছে এর মধ্যে স্বাগতম হোটেল এন্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, ছায়ানীড়, মিড নাইট মুন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?