ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
আপনি যদি প্রকৃতি প্রেমী ও পাখি প্রেমী হয়ে থাকেন তবে চায়ের স্বর্গরাজ্য শ্রীমঙ্গলের বাইক্কা বিল অপেক্ষা করছে আপনারই জন্য। দিগন্ত জোড়া নীল হাওড়-বাওড়, বিল এর চিরায়ত সৌন্দর্য বাঙলার প্রকৃতিতে দিয়েছে শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির রূপ। গোধূলি বেলায় বিলের আকাশে উড়ে চলা পাখির দলের সৌন্দর্য প্রকৃতি প্রেমীদের নিমিষেই করে তোলে আনমনা। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে হাইল হাওরের পূর্ব পাশেই প্রায় ১০০ হেক্টর জলাভূমি নিয়ে অপরূপ সৌন্দর্যের এই বাইক্কা বিল।
বিলটিতে ‘ইউএসএইড’র অর্থায়নে প্রকল্পের মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে মাছ ও পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রম। মাছের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তোলা এই বাইক্কা বিলটিতে আইড়, কৈ, মেনি, ফলি ও পাবদাসহ আরও অনেক প্রজাতির মাছ বংশ বৃদ্ধি করে পুরো হাওরে ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে, ভূমি মন্ত্রণালয় বাইক্কা বিলকে একটি স্থায়ী মৎস্য অভয়াশ্রম হিসেবে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এ বিল শুধু মাছের জন্যই নয়, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর জন্য একটি চমৎকার নিরাপদ আবাসস্থলে পরিণত হয়।
শীতের আগমনী বার্তার শুরুতেই বাইক্কা বিলে ১৬০ প্রজাতির বিভিন্ন অতিথি ও দেশীয় পাখিরা আসতে শুরু করে। শীতে বেড়াতে গেলে বিলের শুরুতেই দেখতে পাবেন দলে দলে পার্পল সোয়াম্প হেন বা কালেম। পাশেই হয়ত দেখবেন গ্রেট কর্মোরান্ট বা বড় পানকৌড়ি, আর ছোট পানকৌড়ি। গলাটা সাপের মতই লম্বা বলে আরেকটি পাখির নাম সাপ পাখি, ইংরেজিতে বলা হয় ওরিয়েন্টাল ডার্টার। দেখতে অনেকটা পানকৌড়ির মত এরা। কচুরিপানার ভেতরে একটু দৃষ্টি দিলেই চোখে পড়বে ডাহুক, জল মোরগ, দল পিপি কিংবা নেউ পিপি। একটু দূরে নজর দিলেই দেখতে পাবেন বক কিংবা পার্পল হেরন কেমন করে ঠোঁটের ছিপে মাছ ধরছে। এছাড়াও দেখতে পাবেন শঙ্খচিল, ভুবন চিল, মেটেমাথা টিটি, কালকূট, জলপিপি, পালাসী কুড়া ঈগল, গুটি ঈগল, ল্যাঞ্জা হাঁস, মরচেরং ভূতি হাঁস, গিরিয়া হাঁস ইত্যাদি।
পর্যটকদের সুবিধার্থে পাখি দেখার জন্য বিলে পানির উপরে তৈরি করা হয়েছে তিনতলা বিশিষ্ট একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। এখানে সংরক্ষিত রয়েছে পাখি ও মাছের বিভিন্ন তথ্য। অতিথি পাখি কোন পথ ধরে আমাদের দেশে ছুটে আসে, তারও বর্ণনা আছে। এ টাওয়ার থেকে শক্তিশালী দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে বিলের পাখি কাছ থেকে দেখতে পাবেন। প্রচণ্ড গরমে টাওয়ারে বসলে নরম বাতাস শরীরে শীতল পরশ বুলিয়ে দিয়ে যাবে নিমিষেই। ওয়াচ টাওয়ারের উপরে বসে সূর্য ডোবা দেখতে পারবেন। কি সুন্দর করে সূর্যটা আস্তে আস্তে টুপ করে বিলের পানির মধ্যে পড়ে যায়।
শিক্ষা-গবেষণা ও চিত্র-বিনোদনের জন্য এই হাইল-হাওরের বাইক্কা বিল এখন অনন্য বিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিলের পানিতে ফোটা হাজারো পানা, শাপলা, পদ্ম আর নীলপদ্ম শোভিত মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক শোভা দেখে পর্যটক ও প্রকৃতিপিপাসুরা বিমোহিত হন। ২০০৩ সালের ১ জুলাই ভূমি মন্ত্রণালয় বাইক্কা বিলকে স্থায়ী মৎস্য অভয়াশ্রম হিসেবে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এই বিল শুধু মাছের জন্যই নয়, পাখি ও অন্যান্য প্রাণীর জন্য একটি চমৎকার নিরাপদ আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে পর্যটক সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পাহাড়-অরণ্য, চা বাগান ও প্রাচীন নিদর্শনের পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের আরেক সম্ভাবনাময় স্থান এই হাইল-হাওর। এই হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরূপ। বিশেষ করে হাইল হাওরের বাইক্কা বিলের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের দারুণভাবে আকর্ষণ করে।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে ট্রেন ও বাসে চড়ে শ্রীমঙ্গলে যাওয়া যায়। শ্রীমঙ্গল হতে ইজিবাইক, অটো রিকশা কিংবা মাইক্রো ভাড়া করে সহজে বাইক্কা বিল ঘুরে আসতে পারবেন।
কোথায় খাবেন?
শ্রীমঙ্গল শহরের গ্র্যান্ড তাজ, হাবিব হোটেল, কুটুম বাড়ী ও শ্রীমঙ্গল ইনের খাবার বেশ জনপ্রিয়। তবে বাইক্কা বিলের যাওয়ার সময় সাথে শুকনো খাবার নিয়ে যেতে পারেন। অবশ্যই শ্রীমঙ্গলের বিখ্যাত সাত রঙের চায়ের স্বাদ নিতে ভুলবেন না।