মাধবকুণ্ড লেক ও জলপ্রপাত | Madhabkunda Lake and Waterfall 03/05/2021


PC: Jubair


ছুটির উপলক্ষ পেলেই ভ্রমণ প্রেমীরা সেল্ফ ট্রিট হিসেবে নিজেকে নিয়ে যায় নতুন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। নতুন পথ, নতুন গন্তব্য- সে এক ঘোর লাগানো রোমাঞ্চকর অনুভূতি। তাই ছুটির দিনগুলোতে নতুন ভ্রমণ গন্তব্যের স্বাদ নিতে ঘুরে আসতে পারেন শ্রীমঙ্গলে মাধবপুর লেক থেকে। প্রকৃতির অপরূপ লীলা নিকেতন মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত। প্রায় ২০০ ফুট উঁচু পাহাড়ের উপর থেকে জলরাশি এর গা বেয়ে অবিরাম ধারায় সাঁ সাঁ শব্দে নিচে পড়ছে। অবিরাম পতনের ফলে নিচে সৃষ্টি হয়েছে কুণ্ডের। আর কুণ্ডের প্রবাহমান স্রোতধারা শান্তির বারিধারার মতো মাধবছড়া দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

 

মাধবকুণ্ডের নামকরণ সম্পর্কে লোকশ্রুতি আছে যে, শ্রীহট্টের রাজা গঙ্গাধ্বজ ওরফে গোবর্ধন পাথারিয়া পাহাড়ে একটি বিশ্রামাগার নির্মাণ শুরু করলে সেখানে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় মাটির নিচে একজন সন্ন্যাসীকে দেখতে পান। তখন তিনি ওই সন্ন্যাসীর পদবন্দনা ও স্তূতি করলে সন্ন্যাসী তাকে নানা উপদেশসহ মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশ তিথিতে তাকে এ কুণ্ডে বিসর্জন দিতে নির্দেশ দেন। সন্ন্যাসী বিসর্জিত হওয়া মাত্র তিনবার মাধব, মাধব মাধব নামে দৈববাণী হয়। সম্ভবত এ থেকেই মাধবকুণ্ড নামের উৎপত্তি। আবার কারও কারও মতে, মহাদেব বা শিবের পূর্বনাম মাধব এবং এর নামানুসারে তার আবির্ভাব স্থানের নাম মাধবকুণ্ড।

 

ছবির মত সুন্দর সারি সারি চা গাছ বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে উঁচু উঁচু টিলা, গাঢ় সবুজ পাহাড় আর মাথার উপর সুনীল আকাশ। লেকের স্বচ্ছ নীলাভ জলে আকাশের প্রতিবিম্ব আর ফুটে থাকা অসংখ্য শাপলা শালুকের অলংকরণ যেন শিল্পীর কল্পনার রঙে আঁকা কোনো নিখুঁত ছবি। ১৩৪২ সালে বিষ্ণুদাস সন্ন্যাসী মাধবকুণ্ডের পশ্চিমাংশে কমলা বাগান তৈরি করেন, সেই কমলা বাগান আজও আছে। মূল জলপ্রপাতের বাম পাশে প্রায় ২০০ গজ দূরে আরও একটি পরিকুণ্ড নামের জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে। সেখান থেকেও অনবরত পানি পড়ছে। এ কুণ্ডের পাশেই স্থাপন করা হয়েছে শিবমন্দির। যে পাহাড়টির গা বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে এ পাহাড়টি সম্পূর্ণ পাথরের। এর বৃহৎ অংশজুড়ে রয়েছে ছড়া। ছড়ার উপরের অংশের নাম গঙ্গামারা ছড়া আর নিচের অংশের নাম মাধবছড়া। পাহাড়ের উপর থেকে পাথরের ওপর দিয়ে ছুটে আসা পানির স্রোত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে হঠাৎ খাড়াভাবে উঁচু পাহাড় থেকে একেবারে নিচে পড়ে যায়। 

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে মাধবপুর লেকের দূরত্ব প্রায় ২০৭ কিলোমিটার এবং মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। মাধবপুর লেক দেখতে যেতে হলে প্রথমে শ্রীমঙ্গল আসতে হবে। এরপর ব্যক্তিগত গাড়ি, বাস অথবা সিএনজি করে কমলগঞ্জের ভানুগাছ চৌমোহনা হয়ে মাধবপুর লেক যেতে পারবেন। এছাড়া শ্রীমঙ্গল চা বাগানের কাছ থেকে সিএনজি ভাড়া নিয়েও মাধবপুর লেকে যাওয়া যায়।

 

কোথায় খাবেন?

মাধবপুর লেকের আশে পাশে খাবারের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই তাই প্রয়োজনে নিজ দায়িত্বে কিছু হালকা খাবার সাথে নিতে পারেন। এছাড়া শ্রীমঙ্গল শহরে ফিরে খেতে হবে। শ্রীমঙ্গলে নানা ধরণের রেস্তোরা আছে। যাদের মধ্যে পানশী ও পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট অনেক জনপ্রিয়। এই রেস্টুরেন্টগুলোতে ভর্তা ভাজিসহ নানা পদের খাবার খেতে পারবেন ১০০-৫০০ টাকায়।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?