বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ | Bir Shrestho Hamidur Rahman Monument 03/05/2021


PC: রেদোয়ানুল কবির


স্বাধীনতা যুদ্ধের সর্বোচ্চ খেতাবধারী বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের(বিজিবি) ধলই সীমান্ত ফাঁড়ির পাশে ধলই চা বাগানের ভিতর সমাধিটির অবস্থান। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতি রক্ষার্থে এই স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করা হয়।

 

ঝিনাইদহের সন্তান হামিদুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সিপাহী। কমলগঞ্জ উপজেলায় ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর পাক সেনাদের সাথে ধলই সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে যোগ দিয়েছেন ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য সিপাহী হামিদুর রহমান। সকালে দলের অধিনায়কের নির্দেশে হামিদুর রহমান ধলই বিওপি-তে পাকিস্থানীদের ঘাটি দখলের জন্য অগ্রসর হন। হালকা একটি মেশিনগান নিয়ে জীবন বাজি রেখে হামিদুর রহমান একাই দুইটি পাকিস্থানি যুদ্ধ ট্যাঙ্ক ধ্বংস করেন। এতে শত্রুঘাটির অধিনায়ক এবং বেশ কয়েকজন সৈন্য নিহত হয়। একসময় যুদ্ধরত অবস্থায় এই বীর সন্তান শত্রুদের পাল্টা আক্রমনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তাঁর আত্মত্যাগের ফলে মুক্তিবাহিনী কয়েকদিনের প্রচণ্ড লড়াইয়ের পর ধলই সীমান্ত ফাঁড়ি দখল করতে সমর্থ হয়। অসম সাহসিকতার জন্য তাকে মরণোত্তর বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয়। সহযোদ্ধারা হামিদুর রহমানের মৃতদেহ সীমান্তের ওপারে নিয়ে ভারতের আমবাসা গ্রামের একটি মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করেন।

 

দীর্ঘ ৩৬ বছর পর ২০০৫ সালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আমবাসা গ্রাম থেকে তাঁর দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। ২০০৭ সালের ১১ ডিসেম্বর ঢাকার মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁর দেহাবশেষ সমাহিত করা হয়। অসীম সাহসিকতার জন্য সিপাহী হামিদুর রহমানকে মরণোত্তর বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয়। এই মহান বীরের প্রতি সম্মান জানিয়ে শ্রীমঙ্গলের থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে ধলই চা বাগানের একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। আর ঝিনাইদহে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের গ্রামে কলেজ মাঠে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতি বছর ২৮ অক্টোবর হামিদুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে মৌলভীবাজারের স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে অসংখ্য পর্যটক ও দর্শনার্থী এই বীরশ্রেষ্ঠের স্মৃতিসৌধতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন।

 

কিভাবে যাবেন?

বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধে যেতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা থেকে সরাসরি সড়ক ও রেলপথে শ্রীমঙ্গল আসা যায়। ঢাকার ফকিরাপুর কিংবা সায়দাবাদ থেকে হানিফ, শ্যামলী, এনা ও সিলেট পরিবহন সহ বিভিন্ন পরিবহণের বাসে শ্রীমঙ্গল পৌঁছাতে পারবেন। এছাড়া কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে সিলেটগামী জয়ন্তিকা, উপবন বা পারাবাত এক্সপ্রেস ট্রেনেও শ্রীমঙ্গল যাওয়া যায়। শ্রীমঙ্গল শহর হতে স্থানীয় পরিবহনে (সিএনজি, বাস) চড়ে কমলগঞ্জ অথবা কামালগঞ্জ এসে নিয়ে হামিদুর রহমানের স্মৃতি সৌধে যেতে পারবেন।

 

কোথায় খাবেন?

শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত হোটেল সাতকড়া, কুটুম বাড়ী, গ্র্যান্ড তাজ ও পানসী রেস্টুরেন্টের বেশ সুনাম রয়েছে। এছাড়া নীল কন্ঠ কেবিনের বিখ্যাত সাত রঙের চায়ের স্বাদ নিতে পারেন।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?