লালদীঘি নয় গম্বুজ মসজিদ | Laldighi Nine Dome Mosque 22/01/2022


PC:


লালদীঘি নয় গম্বুজ মসজিদ (Laldighi Nine Dome Mosque) রংপুর জেলার সদরপুর উপজেলা শহর থেকে মোট ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে গোপীনাথ ইউনিয়নের লালদীঘি নামক এলাকায় অবস্থিত। এটি রংপুরের একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। ভারতীয় উপমহাদেশে থাকাকালীন ব্রিটিশ শাসনামলে এই মসজিদটি আবিষ্কৃত হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় বাসীন্দাগণ মসজিদটি পরিষ্কার করে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে।

 

এটি একটি বর্গাকার বহু গম্বুজবিশিষ্ট ইমারত। বাইরে থেকে প্রতি বাহুর দৈর্ঘ্য ৯.৪৫ মি। এর পূর্ব দিকের সম্মুখভাগে রয়েছে তিনটি খিলানযুক্ত প্রবেশদ্বার। এরমধ্যে মাঝেরটি দুপাশের দুটির তুলনায় বড়। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালেও অনুরূপ তিনটি করে খিলানযুক্ত প্রবেশপথ রয়েছে। এর মধ্যে মাঝেরটি পার্শ্ববর্তী অন্য দুটির চেয়ে বড়। উচ্চতা ও প্রশস্ততায় উত্তর ও দক্ষিণ পাশের মধ্যবর্তী দরজা দুটি পূর্বদিকের কেন্দ্রীয় প্রবেশপথটির সমান। দুপাশের অন্য দুটি উন্মুক্ত অংশ জানালা ও ইটের তৈরী জালি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পূর্বদিকের তিনটি প্রবেশপথ বরাবর কিবলা দেওয়ালে রয়েছে তিনটি অর্ধ অষ্টকোণাকৃতির মিহরাব। মিহরাবের কুলুঙ্গির উপরের অর্ধগম্বুজ খিলান ছাদে এখন রয়েছে পূর্ণ প্রস্ফুটিত পদ্ম-নকশার অর্ধাংশ, আর মিহরাবের উপরে স্থাপিত ব্যান্ডে রয়েছে বদ্ধ পদ্মপাপড়ি নকশার সারি। কেন্দ্রীয় মিহরাবটি অপেক্ষাকৃত বড়।

 

পুরো ইমারতটির ভেতরের ও বাইরের দেওয়াল চুন সুরকির পলেস্তারা দিয়ে মসৃণভাবে আবৃত। কিবলা দেওয়াল ব্যতীত বাকি তিন দেওয়ালের বাইরের অংশ এই পলেস্তারা দিয়ে তৈরী ছোট ছোট আয়তাকার খোপ-নকশা দিয়ে অলঙ্কৃত। ইমারতের পুরো বিস্তার জুড়ে রয়েছে পলেস্তারার প্যাঁচানো নকশায় অলঙ্কৃত একটি অনুভূমিক কার্নিশের ব্যান্ড। আর এর বপ্র জুড়ে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন বদ্ধ পদ্মপাপড়ি নকশার সারি। গম্বুজসমূহের পিপার বাইরের অংশ এবং পার্শ্ববুরুজগুলির ওপরের ছত্রীর ভিত্তিও অনুরূপ পদ্মপাপড়ি নকশা দিয়ে অলঙ্কৃত করা হয়েছে।

 

মসজিদটির পূর্ব ফাসাদের কেন্দ্রীয় প্রবেশপথের উপর এক সময় একটি শিলালিপি ছিল। বর্তমানে সেটি হারিয়ে যাওয়ায় এ মসজিদের নির্মাণকাল সঠিকভাবে জানা যায় না। লালদিঘির আশেপাশে প্রচলিত জনশ্রুতি অনুযায়ী জনৈক দিলওয়ার খান এ মসজিদের নির্মাতা। এই দিলওয়ার খানের পরিচয় এখনও জানা যায় নি। তবে এই মসজিদের অনেক স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট্য মুগল আমলে নির্মিত কিশোরগঞ্জের গোরাই মসজিদ (আনুমানিক ১৩৮০), বাগেরহাটের চাকশ্রী মসজিদ (আনুমানিক সতেরো শতকের শেষভাগ), বগুড়ার ফররুখ সিয়ার মসজিদ (১৭১৮) প্রভৃতির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট্য বিচারে এই মসজিদের নির্মাণকাল সতেরো শতকের শেষভাগ অথবা আঠারো শতকের প্রথমভাগে নির্ধারণ করা যায়।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে বাসে রংপুর: রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর, মহাখালী, গাবতলী এবং কল্যাণপুর থেকে রংপুর যাওয়ার এসি ও নন-এসি বাস যাতায়াত করে। এদের মধ্যে গ্রিনলাইন, আলহামরা, মীম পরিবহণ, এসআর ট্রাভেলস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ঢাকা থেকে রংপুর যেতে বাসের মানভেদে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা ভাড়া লাগে।

 

ঢাকা থেকে ট্রেনে রংপুর: ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন সোমবার ছাড়া সপ্তাহের ৬ দিন সকাল ৯ টা ছেড়ে যায়। রংপুর যেতে ২০০ থেকে ৭০০ টাকা ট্রেন ভাড়া লাগে।

 

কোথায় থাকবেন?

রাত্রিযাপন করতে পারবেন রংপুরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে। রংপুরে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল নর্থভিউ, পর্যটন মোটেল, দি পার্ক হোটেল, হোটেল গোল্ডেন টাওয়ার, হোটেল তিলোত্তমা, হোটেল কাশপিয়া উল্লেখ্য।

 

কোথায় খাবেন?

বিভাগীয় শহর রংপুরে বিভিন্ন মানের হোটেল/রেস্টুরেন্ট থেকে নিজের উদরপূর্তিটুকূ সেরে নিতে পারবেন তবে আমের সিজনে রংপুর গেলে রংপুরের বিখ্যাত হাড়িভাঙ্গা আম খেতে ভুল করবেন না।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?