নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি | Naodanga Zamindar Bari 23/01/2022


PC:


কালের সাক্ষী হয়ে থাকা নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি (Naodanga Zamindar Bari) কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত প্রায় দেড় শত বছরের পুরনো জমিদার বাড়ি। অবিভক্ত ভারতবর্ষে অনেক আগে নাওডাঙ্গা পরগনার জমিদার বাহাদুর প্রমদারঞ্জন বক্সী এটি নির্মাণ করেন।

 

বক্সীর শাসন আমলে এই পরগনার অধীন ছিল কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিদ্যাবাগিশ, শিমুলবাড়ী, তালুক শিমুলবাড়ী, কবির মামুদ প্রভৃতি। প্রমদারঞ্জন বক্সীর ছিল তিন ছেলে। বীরেশ্বর প্রসাদ বক্সী, বিশ্বেশ্বর প্রসাদ বক্সী ও বিপুলেশ্বর প্রসাদ বক্সী। মেয়ে ছিল পুটু। বিয়ে হয় রংপুর জেলার মীরবাগের জমিদারের সঙ্গে। এর মধ্যে প্রথম ছেলে বীরেশ্বর প্রসাদ বক্সীকে পরে জমিদারের দায়িত্বভার দেওয়া হয়। তিনি পাশ্চাত্যে পড়ালেখা করে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে কলকাতায় আইন পেশায় কর্মময় জীবন শুরু করেন। তিনি একজন বিচারক ছিলেন। সে সময় একটি মাইনর স্কুল ও প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলেন তিনি।

 

পরবর্তীতে তার দ্বিতীয় ছেলে বিশ্বেস্বর প্রসাদ বক্সীর হাতে জমিদারির ভার ন্যস্ত করে জমিদার প্রমদা রঞ্জন অবসর নেন। তৃতীয় ছেলে বিপুলেশ্বর প্রসাদ বক্সী ছিলেন প্রকৌশলী। কথিত আছে, পরবর্তী জমিদার জমিদারির ভার নেওয়ার আগে তৎকালীন সময়ে পর পর তিনবার প্রবেশিকা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। তার বাবা জমিদার প্রমদারঞ্জন বক্সী তার ছেলেকে বলেন, ‘তোমার ভাগ্য খারাপ। অনেক ভাগ্যগুণে তুমি আমার সন্তান হিসেবে জন্ম নিয়েছ। বাকিরা যেহেতু পড়ালেখা শিখে অন্য কিছু হতে চায় সেহেতু তোমাকেই আমি আমার জমিদারির ভার দিতে চাই।’ পরে তাকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়। 

 

১৩০৪ সনের ভূমিকম্পের পর অন্য দুই ভাই কোচবিহার রাজ্যে স্থায়ী বসবাসের জন্য একটি বাড়ি কেনেন। অনেক অনুনয়-বিনয় করে বাবাকে সেখানে পরে নিয়ে যান। ভারতের ওই নতুন বাড়িতে শিব প্রসাদ বক্সী শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর জমিদার শিব প্রসাদ বক্সী সবকিছু ছেড়ে তিনিও চলে যান ভারতে। সীমান্তঘেঁষা ফুলবাড়ী উপজেলায় ক্ষয়িষ্ণু অবয়ব নিয়ে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি।

 

কিভাবে যাবেন?

কুড়িগ্রাম থেকে ফুলবাড়ি উপজেলা সদরে এসে সেখান থেকে সহজেই ৮ কিলোমিটার দূরে নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি দেখতে এতে পারবেন।

 

কোথায় থাকবেন?

কুড়িগ্রামে বেশকিছু বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। কুড়িগ্রামের ঘোষপাড়া এবং কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের কাছে কয়েকটি ভাল মানের হোটেল রয়েছে। কুড়িগ্রামের আবাসিক হোটেলের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হোটেল হচ্ছে হোটেল আকাশ, মেসার্স হোটেল ডিকে, মেসার্স হোটেল স্মৃতি, মেসার্স হোটেল মেহেদী, মেসার্স হোটেল আরজি, মেসার্স হোটেল নিবেদিকা, মেসার্স হোটেল অর্ণব প্যালেস, মেসার্স হোটেল বসুন্ধরা, মেসার্স মিতা রেস্ট হাউস।

 

কোথায় খাবেন?

কুড়িগ্রামের মাছের খ্যাতি আছে দুনিয়াজোড়া তাই এখানে এসে বিভিন্ন রকম মাছ টেস্ট করে দেখতে পারেন। এছাড়া খাবারের জন্য কুড়িগ্রামে সাধারণ মানের খাবার হোটেল রয়েছে।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?