শঙ্করপাশা শাহী মসজিদ | Shankarpasha Shahi Jame Masjid 03/05/2021


PC: ফজলুল জাহিদ পাভেল


সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার নাম শুনলেই প্রথমে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও চা বাগানের সবুজ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনে আসে। যা বরাবরই পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। তবে এই সবুজ সৌন্দর্যের বাইরে হবিগঞ্জ জেলায় প্রাচীন স্থাপত্যও রয়েছে। এবং এই প্রাচীন স্থাপত্যের উদাহরণগুলির মধ্যে একটি হলো শঙ্করপাশা শাহী মসজিদ।

 

শঙ্করপাশা শাহী মসজিদ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার উচাইল ও রাজিউড়া গ্রামের মধ্যবর্তী গ্রাম শঙ্করপাশা গ্রামে প্রায় ছয় একর জায়গা জুড়ে নির্মিত একটি প্রাচীন স্থাপত্য। ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ১৫১৩ সালে বিখ্যাত সুফি দরবেশ শাহ মজলিস আমিন (রা.) এই মসজিদের নির্মাণ শুরু করেলেও পরবর্তীতে মুসলিম স্বনামধন্য শাসনকর্তা সুলতান আলাউদ্দিন হোসাইন শাহের আমলে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। টেরাকোটার নকশাকৃত চমৎকার নির্মাণশৈলীর এই মসজিদ কালের বিবর্তনে এক সময় বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছিল। উক্ত এলাকায় জনবসতি গড়ে উঠলে চাষাবাদের প্রয়োজনে এই মসজিদটি আবিষ্কৃত হয়।

 

পাহাড়ের চূড়ায় উচ্চমানের পোড়া ইট দিয়ে নির্মিত মসজিদটির নির্মাণ শৈলীটি দর্শনার্থীদের সহজেই মুগ্ধ করে। দেয়ালের বাইরের দিকে বিভিন্ন নকশা এবং শিলালিপি রয়েছে। যা প্রাচীনতার ঐতিহ্য বহন করে। উন্নতমানের পোড়া ইট কেটে কেটে লাগানো হয়েছে এর ভবনে। এর গায়ে কোনও প্রলেপ নেই। দেয়ালের বাইরের অংশে পোড়া ইটের ওপর বিভিন্ন নকশা এবং অলঙ্করণ করা আছে। যা এটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এই মসজিদে একটি শিলালিপি আছে। যা সুলতানি আমলের সাক্ষী বহন করে চলছে। মসজিদটি লাল বর্ণের কারণে লাল মসজিদ হিসাবেও সুপরিচিত। আবার টিলার ওপরে অবস্থিত বলে অনেকে ‘টিলা মসজিদ’ও বলেন। দুটো নাম মিলিয়ে অনেকে ‘লাল টিলা’ মসজিদও ডেকে থাকেন। তবে এই দুটি নামের সংমিশ্রণের কারণে মসজিদটি স্থানীয়দের কাছে লাল টিলা মসজিদ নামেও পরিচিত।

 

এক চালা ভবনের মসজিদটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ একই মাপের, যা ২১ ফুট ৬ ইঞ্চি। বারান্দা তিন ফুটের থেকে সামান্য বেশি। মোট চারটি গম্বুজ, দরজা-জানালা প্রায় ১৫টি এবং দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় পাঁচ ফুট। আর পশ্চিম দিকের দেয়ালের পুরুত্ব এর প্রায় দ্বিগুণ। বর্তমানে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ক্রমেই মসজিদটির সৌন্দর্য ম্লান হচ্ছে। বিশেষ দিনগুলোতে মসজিদে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লির সমাগম ঘটে।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে সড়ক বা রেলপথে হবিগঞ্জ জেলায় যেতে পারবেন। হবিগঞ্জ শহর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে শংকরপাশা মসজিদের অবস্থান। হবিগঞ্জ শায়েস্তাগঞ্জ মোড় থেকে বাস কিংবা সিএনজি নিয়ে রাজিউড়া ইউনিয়নের শংকরপাশা মসজিদ পৌঁছাতে পারবেন।

 

কোথায় খাবেন?

হবিগঞ্জ থেকে রাজিউড়া যাবার পথে পানসি, প্রাইম ও ভাই ভাই রেস্টুরেন্টের মতো খাবারের হোটেল রয়েছে। আর হবিগঞ্জে আড্ডা প্লাটিনাম, ফুড প্যালেস, হাংগ্রি, নূরানি রেস্টুরেন্ট, রয়েল ফুড ইত্যাদি রেস্টুরেন্টে বাঙ্গালী, চাইনিজ ও ফাস্টফুড সহ বিভিন্ন ধরণের খাবার পাওয়া যায়।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?