গলাকাটা মসজিদ | Golakata Mosque 08/09/2021


PC:


PC : Kazi Rashed Abdallah

ঝিনাইদহের বারোবাজার দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থান। এখানে রয়েছে সুলতানি আমলের ৫০০ থেকে ৮০০ বছরের পুরনো অসংখ্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ঝিনাইদহ জেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে বারোবাজার ইউনিয়নে ঐতিহাসিক গলাকাটা মসজিদ অবস্থিত। কালিগঞ্জে মাটি খনন করে প্রাপ্ত ১৯টি সুলতানি আমলের মসজিদের মধ্যে এই মসজিদ অন্যতম। নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মাটির ঢিবি খনন করে গলাকাটা মসজিদের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার ও সংস্কার করেন।

 

ধারণা করা হয়, ১৬শ শতকে খান জাহান আলীর আমলে এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ২১ ফুট লম্বা ও ১৮ ফুট চওড়া মসজিদটি বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর ১৯৯২-৯৩ সালে খনন করে। খনন করার সময় শাহ সুলতান মাহমুদ ইবনে হুসাইনের আমলের (৮০০ হিজরি) আরবি ও ফারসিতে লেখা কয়েকটি পাথর এখানে পাওয়া যায়। সেগুলো দেখে অনুমান করা হয়, মসজিদটি সুলতানি শাসনামলের তৈরি। একসময় এ জনপদে বাস করতেন প্রাচীন রাজারা।

 

মসজিদের ছাদে রয়েছে ছয়টি গম্বুজ। ভেতরে রয়েছে দুটি কষ্টিপাথরের মিনার। মসজিদটি খনন করার সময় একটি হাতে লেখা কোরআন শরিফ ও একটি তলোয়ার পাওয়া যায়। সেগুলো মসজিদের ভেতরেই সংরক্ষিত আছে। চারটি ছয় কোণাকৃতি বড় মোটা পিলারের ওপর মূল মসজিদটি দাঁড়িয়ে আছে। পিলারগুলো ২৫ ফুট করে লম্বা। মসজিদের দেয়াল পাঁচ ফুট চওড়া। ভিতরে পশ্চিমের দেয়ালে ৩টি মেহরাব আছে এতে পোড়ামাটির কারুকাজ, ফুল, লতাপাতা, ঘন্টা, চেইন ইত্যাদির নকশা আছে। সামনের দিকে তিনটি দরজা রয়েছে। এ ছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ পাশে দুটি করে প্রবেশপথ ছিল। এগুলো ইটের জাল করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি দরজার ওপরে রয়েছে সুচালো খিলান।

 

মসজিদের পাশে রয়েছে গলাকাটা দিঘি। সেখান থেকেই এই মসজিদকে গলাকাটা দিঘি মসজিদ বা গলাকাটা মসজিদ বলা হয়। খান জাহান আলী (রহ.)-এর সমসাময়িক এই দিঘি বলে জনশ্রুতি আছে। এই দিঘি চারদিকের পারসহ ১২ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত। আবার স্থানীয়রা বলেন, বারোবাজারে একজন অত্যাচারী রাজা ছিলেন। তিনি প্রজাদের বলি দিয়ে এই দিঘির মধ্যে ফেলে দিতেন। এ কারণেই এর নাম হয় গলাকাটা দিঘি। অনেকে মনে করে, দিঘির ওপর দিয়ে রাতে গলা কাটা ঘোড়া চলত। তাই মানুষ এর নাম দিয়েছে গলাকাটা দিঘি। এর থেকে মসজিদেরও নাম হয় গলাকাটা মসজিদ। ঐতিহাসিক মসজিদটি একনজর দেখার জন্য প্রতিনিয়ত মানুষের ভিড় লেগেই থাকে।

 

কিভাবে যাবেন?

ঝিনাইদহ থেকে বাস বা সিএনজি চড়ে কালীগঞ্জ হয়ে বারোবাজার থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে হাকিমপুর-বারোবাজার রাস্তার পাশে অবস্থিত গলাকাটা মসজিদে দেখতে যেতে পারবেন। এছাড়া যশোর থেকে ঝিনাইদহ মহাসড়ক দিয়ে ১৬ কিলোমিটার উত্তরে বারোবাজারে পৌঁছানো যায়।

 

কোথায় খাবেন?

ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরের কাছে ভালো মানের কয়েকটি খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?