ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
৫০০ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী এই মসজিদ, প্রাচীন বাংলার রাজধানী গৌড় নগরীর উপকণ্ঠে পিরোজপুর গ্রামে নির্মিত হয়েছিলো যা বর্তমানে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার অধীনে পড়েছে। ছোট সোনা মসজিদের (Choto Sona Mosque) প্রধান প্রবেশ পথের উপরে স্থাপিত শিলালিপি থেকে জানা যায়, ১৪৯৩ থেকে ১৫১৯ সালের মধ্যে সুলতান হুসাইন শাহর শাসনকালে জনৈক মনসুর ওয়ালী মুহম্মদ বিন আলী ছোট সোনা মসজিদটি নির্মাণ করেন।
মধ্যযুগের সুলতানি আমলের গৌড়নগরীর এক ঐতিহাসিক স্থাপনা এই ছোট সোনা মসজিদটিকে বলা হতো ‘গৌড়ের রত্ন’। প্রচলিত আছে, একসময় মসজিদের গম্বুজগুলো সোনা দিয়ে মোড়ানো ছিল এবং সে কারণেই মসজিদটি সোনা মসজিদ হিসাবে পরিচিতি পায়। আবার অনেকে মনে করেন, এই মসজিদটির বাইরের দিকে সোনালী রঙ এর আস্তরণ ছিলো, সূর্যের আলো পড়লে নাকি এ রঙ সোনার মত ঝলমল করতো। অন্যদিকে প্রাচীন গৌড়ে আরেকটি মসজিদ ছিলো যা সোনা মসজিদ নামে পরিচিত যেটি তৈরি করেছিলেন সুলতান নুসরত শাহ।
মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে ৮২ ফুট লম্বা ও পূর্ব-পশ্চিমে ৫২.৫ ফুট চওড়া। উচ্চতা ২০ ফুট। এর দেয়ালগুলো প্রায় ৬ ফুট পুরু। দেয়ালগুলো ইটের কিন্তু মসজিদের ভেতরে ও বাইরে এগুলো পাথর দিয়ে ঢাকা। মধ্যবর্তী তিনটি নামাজের স্থানে খিলান করা চার খণ্ড ছাদ তৈরি করে মাঝখানে এনে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার দুপাশের প্রতি অংশে আছে ছয়টি করে গোলাকার গম্বুজ। এই বারোটির পাশাপাশি চৌচালা গম্বুজ আছে তিনটি। মাঝখানে অবস্থিত এই চৌচালা গম্বুজগুলোর ভেতরের দিকে গোলাপ ফুলের মতো কারুকার্য করা।
মসজিদের চারদিকে চারটি বুরুজ (স্তম্ভ) রয়েছে। এগুলোর ভূমি অষ্টকোনাকৃতির। বুরুজগুলোতে ধাপে ধাপে বলয়ের কাজ আছে। বুরুজগুলোর উচ্চতা ছাদের কার্নিশ পর্যন্ত। মসজিদের সামনে পাঁচটি এবং ডানে ও বাঁয়ে দুই পাশে তিনটি করে দরজা রয়েছে। প্রতিটি দরজারই কিনারায় আছে বেশ চওড়া করে খোদাই করা কারুকাজ। উত্তর দেয়ালের সর্ব-পশ্চিমের দরজাটির জায়গার সিঁড়িটি উঠে গেছে মসজিদের অভ্যন্তরে উত্তর-পশ্চিম দিকে দোতলায় অবস্থিত একটি বিশেষ কামরায়। কামরাটি পাথরের স্তম্ভের উপর অবস্থিত। মসজিদের গঠন অনুসারে এটিকে জেনানা-মহল বলেই ধারণা করা হয়। তবে অনেকের মতে এটি জেনানা-মহল ছিল না, এটি ছিলো সুলতান বা শাসনকর্তার নিরাপদে নামাজ আদায়ের জন্য আলাদা একটি কক্ষ।
মসজিদের প্রধান প্রবেশদ্বার বরাবর পূর্বদিকের বাহিরের দেয়ালে স্থাপিত এবং বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে পুননির্মিত ফটকের দৈর্ঘ্য ৭.৬ মিটার ও প্রস্থ ২.৪ মিটার।এদের দুপাশে দুসারিতে তিনটি করে মোট ১২টি গম্বুজ রয়েছে। এরা অর্ধ-বৃত্তাকার গম্বুজ। এ মসজিদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, বাইরের যে কোনো পাশ থেকে তাকালে কেবল পাঁচটি গম্বুজ দেখা যায়, পেছনের গম্বুজগুলো দৃষ্টিগোচর হয় না। ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে মসজিদের তিনটি গম্বুজ ও পশ্চিম পাশের দেয়ালের কিছু অংশ বিধ্বস্ত হয়। ১৯০০ সালে ব্রিটিশ সরকার গম্বুজ ও দেয়ালটি সংস্কার করে। তবে পশ্চিম পাশের ইটের দেয়ালের বাইরের বেশির ভাগ অংশে পাথর স্থাপন করা হয়নি।
ছোট সোনা মসজিদ প্রাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধের দুই বীর সন্তানের কবর। মসজিদের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে সীমানাপ্রাচীরের ভেতরেই বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ও মুক্তিযুদ্ধে ৭ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক মুক্তিযোদ্ধা মেজর নাজমুল হকের কবর।
কিভাবে যাবেন?
রাজশাহী থেকে লোকাল বাসে চড়ে ৭০ টাকা ভাড়ায় কানসাট এসে, সেখান থেকে ১০ টাকা অটো ভাড়ায় ছোট সোনা মসজিদ প্রাঙ্গনেই এই বীরশ্রেষ্ঠের সমাধিস্থলে পৌঁছাতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
চাঁপাইনবাবগঞ্জে রাত্রিযাপনের জন্য শহরেই আছে থ্রি স্টার মানের স্কাই ভিউ ইন। এছাড়া কম খরচে থাকার জন্যে হোটেল রোজ, লাল বোর্ডিং, হোটেল আল নাহিদ, হোটেল স্বপ্ন পুরী, হোটেল রংধনুর মতো আবাসিক হোটেলগুলো উল্লেখযোগ্য।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে সারুয়ার হোটেল, ভাই ভাই হোটেল, শরিফা হোটেল মতো বেশ কিছু খাবারের রেস্তোরা আছে। আর সুযোগ হলে শিবগঞ্জের আদি চমচম খেয়ে দেখতে পারেন।