তিন গম্বুজ মসজিদ | Three Gombuj Mosque 21/01/2022


PC:


চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ফিরোজপুরে মোঘল আমলের অন্যতম প্রাচীন স্থাপনা তিন গম্বুজ মসজিদ (Three Gombuj Mosque) অবস্থিত। মধ্যযুগের প্রখ্যাত ইসলাম প্রচারক শাহ্‌ সৈয়দ নেয়ামতউল্লাহ্‌কে উদ্দেশ্য করে বঙ্গ সুলতান শাহ্‌ সুজা এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত এই ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাটি শাহ্‌ নেয়ামত উল্লাহ্‌ মসজিদ হিসেবেও সুপরিচিত।

 

হযরত শাহ্‌ সৈয়দ নেয়ামত উল্লাহ (রহঃ), বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বংশধর এবং একাধারে পুরুষাক্রমিক ওলী, আলেম ও আধ্যাত্মিক গুরু ছিলেন। ষোড়শ শতকের শ্রেষ্ঠ আওলিয়াগণের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন। কথিত আছে, তিনি ছিলেন প্রচন্ড ভ্রমণ পাগল মানুষ। সুলতান শাহ সুজার রাজত্বকালে (১৬৩৯-১৬৬০ খ্রিঃ) তিনি দিল্লী প্রদেশের করোনিয়ার নামক স্থান থেকে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে নানা স্থান ভ্রমন করে রাজমহলে এসে উপস্থিত হন। তার আগমনবার্তা জানতে পেরে শাহ সুজা তাকে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে অভ্যর্থনা জানান এবং তার নিকট বায়াত গ্রহণ করেন। পরে শাহ সুজা গৌড়ের উপকন্ঠে (শিবগঞ্জ উপজেলার) ফিরোজপুরে শাহ নিয়ামত উল্লাহ এর জন্য স্থায়ীভাবে আস্তানা স্থাপন করে দেন। পরে তিনি সেখানে একটি ৩ গমবুজ মসজিদ নির্মান করেন এখনও তা অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। এতদঞ্চলে তিনি ৩৩ বছর সুনামের সঙ্গে ইসলাম প্রচার করে ফিরোজপুরেই ১০৭৫ হিজরী (১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে) মতান্তরে ১০৮০ হিজরীতে (১৬৬৯ খ্রিস্টাব্দে) সমাধিস্থ হন।

 

আয়তাকৃতি তিন গম্বুজ মসজিদে বিশাল একটি মসজিদ ঘর, ৩টি মেহরাব এবং সামনের দিকে ৩টি প্রবেশ পথ রয়েছে। ৩টি প্রবেশ পথের মাঝখানের দরজাটি অপেক্ষাকৃত বৃহদাকৃতির। মসজিদের কাছে শাহ্‌ নেয়ামত উল্লাহ্‌র সমাধি এবং সুলতান শাহ্‌ সুজা কর্তৃক নির্মিত মোঘল আমলের একটি দ্বিতল ইমারত রয়েছে। ১১৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩৮ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট সুলতান শাহ্‌ সুজার ইমারতটি “তাহাখানা” নামে পরিচিত। তিন গম্বুজ মসজিদ, প্রাসাদ এবং শাহ্‌ নেয়ামত উল্লাহ্‌র সমাধি তাহাখানা কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত। বর্গাকার নকশা পরিকল্পনায় নির্মিত এবং অভ্যন্তরীণ সমাধি কক্ষের চতুর্দিকে প্রশস্ত বারান্দা আছে। পূর্ব-পশ্চিম এবং দক্ষিণে ৩টি করে খিলানযুক্ত মোট ১২টি খিলানপথ রয়েছে। ক্যানিংহাম-এর নামকরণ করেছিলেন বারদুয়ারী। প্রত্যেক দেয়ালে তিনটি করে প্রবেশ পথ সন্নিবেশিত হওয়াতে এ মাজার শরীফকে বারদুয়ারী বলা হয়।

 

কিভাবে যাবেন?

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহর থেকে সিএনজি বা অটোরিকশায় প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছোট সোনা মসজিদ পেরিয়ে আরো আধা কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই তাহাখানা কমপ্লেক্সে অবস্থিত তিন গম্বুজ মসজিদ দেখতে পাবেন।

 

কোথায় থাকবেন?

চাঁপাইনবাবগঞ্জে হোটেল রাজ, হোটেল আল নাহিদ, হোটেল স্বপ্নপুরী, হোটেল রংধনু, হোটেল নাজমা ও হোটেল স্কাই ভিউয়ের মতো বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়া জেলা পরিষদের ডাক বাংলো এবং সার্কিট হাউজে অনুমতি নিয়ে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।

 

কোথায় খাবেন?

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে সারুয়ার হোটেল, ভাই ভাই হোটেল, শরিফা হোটেল মতো বেশ কিছু খাবারের রেস্তোরা আছে। আর সুযোগ হলে শিবগঞ্জের আদি চমচম খেয়ে দেখতে পারেন।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?