ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার দেওনাই নদীর পূর্বতীরে ধর্মপাল ইউনিয়নে গড় ধর্মপাল গ্রামে অবস্থিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের নাম ধর্মপালের গড় (Dhormopaler Garh)। ১৯৯০ সালে এখানে খনন কাজ শুরু করা হলে তা পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পুনঃখনন করলে ধর্মপাল গড় আবিষ্কৃত হয়।
লোকমুখে এ গড়ের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায় যে, পাল বংশের রাজা ধর্মপাল এখানে বাস করতেন। এখান হতে তিনি রাজ্য পরিচালনা করতেন। তারই নামানুসারে এ এলাকার নাম হয়েছে ধর্মপাল। এখানকার মানুষের ধারণা প্রায় ৫০০ কিংবা হাজার বছর আগে এ স্থাপনা নির্মাণ হয়েছিল। ঐতিহাসিকভাবে এ লোককথার সত্যতা মেলা ভার। তবে কথিত রয়েছে, গড় ধর্মপালের পূর্বদিকে একটি ছোটনদীর তীরে ধর্মপালের রাজ প্রাসাদ ছিল। ধর্মপালের গড় থেকে ১/২ মাইল উত্তর পশ্চিমে একটি মজে যাওয়া চন্দনপাঠ দিঘী রয়েছে। যার পূর্বপাড়ে বাধানো ঘাট ও একটি উচুঁ মাটির ঢিবি এবং ঢিবির ভিতরের প্রাচীরের ইট দেখে অনেকে এটাকে ধর্মপালের রাজবাড়ি মনে করে থাকেন।
ঐতিহাসিক সত্যতা অনুযায়ী প্রাচীন বাংলা যে কয়টি ভাগে ভাগ ছিল তারই কামরূপ অংশের একটি অঞ্চল হল নীলফামারী জেলা। বাংলার কামরূপ অঞ্চল কখনও পাল বংশের শাসনাধীন ছিল না। সে সূত্রে এ ঐতিহাসিক স্থাপনা পাল রাজা ধর্মপালের কিনা তা আজ প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। যদি পাল বংশের স্থাপনা হয় তবে এ স্থাপনার বয়স হবে প্রায় হাজার বছর। কেননা বাংলায় পাল বংশের সমাপ্তি ঘটে ১১৫৮ খ্রিষ্টাব্দে। আবার কিছু কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন। পাল বংশের শেষ দিকের রাজা হর্ষবর্ধন দেবের ছেলে ধর্মপাল হয়তো এ অঞ্চল দখলে নিতে যুদ্ধ বিগ্রহ করতে এসে এখানে দুর্গ গড়ে তুলেছেন। কেননা এ গড়ের অদুরেই রয়েছে ধর্মপাল এর শ্যালিকা ময়নামতির নামে ময়নামতির গড়। যদি এসব তথ্যর ঐতিহাসিক সত্যতা মেলে তাহলে এ স্থাপনা দশম কিংবা একাদশতম শতাব্দীতে তৈরি হয়েছে।
এ অঞ্চলটি প্রাচীনকাল হতে একটি সুখী সমুদ্ধ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী একটি অঞ্চল হিসাবে পরিচিত ছিল। তিস্তা, করতোয়া, দেওনাই, গুপ্তবাসী বিধৌত এ এলাকাটি তার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সুবিদিত সুখ্যাতির কারণে প্রাচীন রাজা বাদশাদের সৈন্য দৃষ্টির মধ্যেই ছিল। এ কারণেই এ অঞ্চলটিকে দখলে নিতে যে যার সুবিধামত প্রায়শই এ এলাকায় যুদ্ধ বিগ্রহ লাগাতো। প্রাচীন বাংলার সে ঐতিহাসিক মূল্য থেকে এ গড়টিকে একটি দুর্গ নগরী হিসাবে মনে করছে ইতিহাস বিদগন। এ গড়ের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ঐতিহাসিক নদী গুপ্তবাসী। বর্তমানে এ নদীর এক তীরে গড় ধর্মপাল নামের আবাসন প্রকল্প আর অপর তীরে বিখ্যাত সুফী সাধক গোড়ক কামাল পীর সাহেবের মাজার গড়ে উঠেছে।
কিভাবে যাবেন?
নীলফামারী জেলা শহর থেকে বাস/সিএনজিতে জলঢাকা উপজেলায় গিয়ে অটো রিক্সা নিয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গড়ের হাট হয়ে ধর্মপাল গড় দেখতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
নীলফামারী জেলার আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল প্রিমিয়ার, রনি ড্রিম, শিশির হোটেল, অবকাশ হোটেল, আর রহমান ও নাভানা রেস্ট হাউজ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
কোথায় খাবেন?
নীলফামারীতে তাজিন উদ্দিন গ্র্যান্ড হোটেল, দারুচিনি ক্যাফে, হোটেল টিপ টপ, হোটেল স্টার, হোটেল আকবরিয়া ও হোটেল রহমতিয়াসহ ভালমানের কিছু খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে।