গোকুল মেধ | Gokul Medh 21/01/2022


PC:


গোকুল মেধ (Gokul Medh) বগুড়া সদর থানাধীন গোকুল গ্রামে খননকৃত একটি প্রত্নস্থল। গোকুল গ্রামটি মহাস্থানগড় থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। প্রত্নস্থলটি এদেশের জনপ্রিয় লোকগাঁথার নায়ক-নায়িকা বেহুলা-লক্ষ্মিন্দরের বাসর ঘর বলে জনসাধারণের কাছে পরিচিত। এ স্থানটিকে লক্ষ্মিন্দরের মেধও বলা হয়ে থাকে। ১৯৩৪-৩৬ সালে এন.জি মজুমদার কর্তৃক উৎখননের ফলে এখানে একটি বিশাল মন্দিরের বা স্তূপের ভিত্তি উন্মোচিত হয়েছে। এ ভিত্তিটি স্তরে স্তরে উঁচু করে কুঠুরি নির্মাণ রীতিতে নির্মিত।

 

বেহুলার বাসরঘরে ১৭২টি কুঠুরি বিভিন্ন তলে মাটি দিয়ে ভরাট করে নিচ থেকে উপরের দিকে ক্রমহ্রাসমান করে এমন ভাবে সাজানো হয়েছিল যাতে এগুলি কোনো সুউচ্চ মন্দির বা স্তূপের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহূত হতে পারে। এ রূপ স্তরে স্ত্তরে উঁচু করা বহুতল বিশিষ্ট সমান্তরাল ঠেস দেওয়ালযুক্ত ভিতের উপর প্রকৃত স্থাপত্য নির্মাণ রীতি প্রাচীন বাংলাদেশের একটি তাৎপর্যপূর্ণ স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য। এ মন্দিরের সঙ্গে পরবর্তী গুপ্তযুগের (ছয়-সাত শতক) কতগুলি পোড়ামাটির ফলক পাওয়া গেছে। সেন যুগে (১১শ- ১২শ শতক) এখানে বারান্দাযুক্ত একটি বর্গাকৃতির মন্দির নির্মিত হয়েছিল। এ মন্দিরে বহু গর্তযুক্ত একটি ছোট প্রস্তর খন্ডের সঙ্গে ষাঁড়ের প্রতিকৃতি উৎকীর্ণ একটি সোনার পাত পাওয়া গেছে। এ থেকে ধারণা করা হয় যে, এটি একটি শীব মন্দির ছিলো।

 

বেহুলার বাসরঘর একটি অকল্পনীয় মনুমেন্ট। বর্তমান গবেষকদের মতে, এ মনুমেন্ট ৮০৯ থেকে ৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেবপাল নির্মিত একটি বৈদ্যমঠ। এ স্তূপটিই বাসরঘর নয়। এ স্তূপটির পশ্চিমার্ধে আছে বাসরঘরের প্রবাদ স্মৃতিচিহ্ন। পূর্বার্ধে রয়েছে ২৪ কোণ বিশিষ্ট চৌবাচ্চা সদৃশ একটি বাথরুম। ওই বাথরুমের মধ্যে ছিল ৮ ফুট গভীর একটি কূপ। কথিত আছে কূপটিতে বেহুলা লক্ষিনদর মধুনিশি যাপনের পর কূপে রক্ষিত জলে স্নান করে তাতে শুদ্ধতা লাভ করতে সক্ষম হতেন। বগুড়ার মহাস্থানগড় দেখে ফিরবার পথে আপনি বেহুলার বাসরঘর দেখে ফিরতে পারবেন।

 

কিভাবে যাবেন?

মহাস্থানগড় বাস স্ট্যান্ড থেকে গোকুল গ্রামের দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার। তাই ঢাকা থেকে বগুড়া শহর কিংবা মহাস্থানগড় বাস স্ট্যান্ড এসে সেখান থেকে সিএনজি বা অটো রিকশাযোগে বেহুলার বাসরঘর খ্যাত গোকুল মেধ যাওয়া যায়।

 

কোথায় থাকবেন?

বগুড়ায় রাত্রি যাপনের জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল ও মোটেল রয়েছে। ভাল মানের হোটেলের মধ্যে পর্যটন মোটেল, নাজ গার্ডেন, নর্থওয়ে মোটেল, সেফওয়ে মোটেল, মোটেল ক্যাসল এমএইচ, সেঞ্চুরি মোটেল, হোটেল সিস্তা, হোটেল আকবরিয়া, রেডচিলিস চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট এন্ড আবাসিক হোটেল উল্লেখযোগ্য। সাধারণ মানের হোটেলের মধ্যে হোটেল আল আমিন, হোটেল রয়াল প্যালেস, হোটেল সান ভিউ, হোটেল রাজমনি, হোটেল হানি ডে, হোটেল আজিজ উল্লেখ্য।

 

কোথায় খাবেন?

বগুড়া শহরে সাথী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, মায়ের দোয়া হোটেল, অতিথি গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, চাপ কর্নার ও হোটেল সাফিনার মতো বেশকিছু ভাল মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। আর অবশ্যই বগুড়ার বিখ্যাত দই খেতে ভুলবেন না।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?