মানকালীর কুন্ড | Mankali's Kund 21/01/2022


PC:


মহাস্থানগড়ের ভেতর যে সমস্ত প্রাচীন সভ্যতার নির্দশন পাওয়া যায় তার মধ্যে মানকালী কুন্ড (Mankali's Kund) ঢিবি উল্লেখযোগ্য। এটি মহাস্থানগড়ের মজা পুকুরের পূর্ব পারে অবস্থিত। ১৯৬৫-৬৬ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্বাবধানে এখানে খননকাজ শরু হয় ও শেষ পর্যন্ত সুলতানী আমলের একটি মসজিদের ধ্বংসাবশেষসহ বেশ কিছু ছোট ছোট প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু আবিষ্কার করা হয়। এরপর তৎকালীন পাকিস্থান প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মহাস্থানগড়ের উঁচু ঢিলার উপর বিদ্যমান এই নিদর্শনকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে নথিভুক্ত করে।

 

মনকালীর ঢিবির পাশে একটি ছোট জলাশয় রয়েছে ও জলাশয়টি থেকে ঢিবিটি দেখতে উচুঁ মনে হওয়ায় একে কুন্ড বা (কূপ) নামে পরিচিত। দুটি মিলে এই স্থাপনাকে মনকালীর কুন্ডধাপ নামে ডাকা হয়। কিংবদন্তী অনুসারে, এই স্থানে প্রথমে একটি মন্দির নির্মাণ করেন রাজা মানসিংহ ও তার ভাই তানসিংহ। অন্যান্য কিংবদন্তী অনুসারে, এখানে মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন ঘোড়াঘাটের জমিদারগণ এছাড়াও এখানে পাওয়া জৈন প্রতিমা দেখে অনেকেই মনে করেন পূর্বে জৈন ধর্মগুরুদের আবাসস্থল ছিলো স্থানটি।

 

১৯৬৫ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে এখানে খনন কাজ শুরু করা হয়। মানকালীর কুণ্ডধাপ থেকে আবিষ্কৃত নিদর্শনগুলোর মধ্যে সুলতানী আমলের ২৬.২১ x ১৪.৫৪ মিটার আয়তনের একটি মসজিদের ধ্বংসাবশেষ, পাল যুগে নির্মিত একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ ও বেশ কিছু ছোট ছোট প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু রয়েছে। উত্তর-দক্ষিণে লম্বা মসজিদের দেওয়ালগুলো ১.২ মিটার থেকে ১.৫১ মিটার পর্যন্ত পুরু। মসজিদের পশ্চিম দেওয়া অর্ধাগোলাকারভাবে নির্মিত পাঁচটি মেহরাব রয়েছে ও মেহরাব বরাবর পূর্ব দেওয়ালে রয়েছে পাঁচটি দরজা। কেন্দ্রীয় মেহরাবটি নকশাকৃত ও অন্য সবগুলোর চেয়ে আকারে বড়। অভ্যন্তরে জ্যামিতিক আকারে নির্মিত মসজিদটি ২ সারি স্তম্ভে- লম্বালম্বিভাবে তিন খন্ডে ও আড়াআড়িভাবে পাঁচ খন্ডে বিভক্ত।

 

 

কেন্দ্রীয় মেহরাবসংলগ্ন উত্তর দিকে ছিলো ১.৭৭ ও ১.৫ মিটার আয়তনের একটি উঁচু মিনার বা ভাষণ মঞ্চ। এছাড়াও মসজিদের ভেতর ১.৫ মিটার থেকে ০.২২ মিটার উচুঁ তিনটি বেদির অস্তিত্ব রয়েছে সেগুলো অনুমানিক ঈমামের সাহায্যকারী মোকাব্বরের জন্য তৈরি করা হয়েছিলো। মসজিদের পূর্ব দেওয়াল সংলগ্ন পূর্বদিকে ৭.৫৭ মিটার প্রশস্থ একটি উন্মোক্ত অঙ্গন ছিলো বলে ধারণা করা হয়।

 

কিভাবে যাবেন?

বগুড়া শহর থেকে মানকালীর কুণ্ডধাপের দূরত্ব মাত্র ১২ কিলোমিটার। বগুড়া শহর পৌঁছে সিএনজি বা অটো রিকশা ভাড়া নিয়ে মানকালীর ঢিবি দেখতে যেতে পারবেন।

 

কোথায় থাকবেন?

বগুড়ায় রাত্রিযাপনের জন্য বিভিন্ন আবাসিক হোটেলের মধ্যে পর্যটন মোটেল, হোটেল নাজ গার্ডেন, মম ইন, সেঞ্চুরি মোটেল, হোটেল সিয়েস্তা, আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল ও নর্থওয়ে মোটেল উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সার্কিট হাউজ ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমীতে অনুমতি নিয়ে রাতে থাকতে পারবেন।

 

কোথায় খাবেন?

বগুড়া শহরে ভাল মানের হোটেল ও রেস্তোরার মধ্যে সাথী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, মায়ের দোয়া হোটেল, অতিথি গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, চাপ কর্নার ও হোটেল সাফিনা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বগুড়ার বিখ্যাত দইয়ের সুনাম রয়েছে বিশ্বজোড়া।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?