ভাসু বিহার | Vasu Bihar 21/01/2022


PC:


বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানগড় থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে বিহার গ্রামে প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ভাসু বিহার (Vasu Bihar) অবস্থিত। বগুড়ার স্থানীয় বাসিন্দারা নাগর নদীর পশ্চিমের এই জায়গাটিকে নরপতির ধাপ হিসেবে চিনেন। ভাসু বিহার থেকে গুপ্তযুগের দুইটি আয়তাকার বৌদ্ধ বিহার ও ক্রুশাকৃতি মন্দির আবিষ্কৃত হয়েছে। ব্রিটিশ আমলেও ভাসুবিহারকে স্থানীয় মানুষরা ‘ভুশ্বুবিহার’ নামে অভিহিত করেন।

 

মাটি চাপা পড়ে থাকা উঁচু টিলা আকৃতির এই এলাকা এক সময় ছিল বৌদ্ধ বিহার। চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং’য়ের বিবরণে ভাসু বিহারের উল্লেখ আছে। ৬৩৯-৬৪৫ খৃষ্টাব্দে তিনি এ জায়গা পরিদর্শন করেন বলে জানা যায়। ইতিহাস বলে, সে সময়ে তিনি বিহারের সাতশত ভিক্ষুকে পড়ালেখা করতে দেখেছিলেন। তার ভ্রমণবিবরণীতে তিনি এটাকে ‘পো-শি-পো’ বা বিশ্ববিহার নামে উল্লেখ করেছেন। এসব তথ্যের উপর ভিত্তি করেই স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম ভাসুবিহারকে বৌদ্ধ বিহার হিসেবে সনাক্ত করেন। সর্বপ্রথম এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ শুরু হয় ১৯৭৩-৭৪ সালে।

 

টানা তিন বছর খননের ফলে দুটি মধ্যম আকৃতির সংঘারাম এবং একটি মন্দিরের স্থাপত্তিক কাঠামো সহ প্রচুর প্রত্নবস্তু পাওয়া যায়। ছোট সংঘারামটির আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৪৯ মিটার এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৪৬ মিটার। এর চার বাহুতে ভিক্ষুদের ২৬টি কক্ষ রয়েছে। কক্ষগুলির সামনে চারদিকে ঘোরানো বারান্দা এবং পূর্ব বাহুর মাঝখানে প্রবেশ পথ আছে। বড় সংঘারামটি ছোটটির মতই দেখতে তবে এর আয়তন ও কক্ষ সংখ্যা বেশি। বড় আকারের একটি খোলা অংশকে ঘিরে এসব ছোট আকারের বৌদ্ধভিক্ষুদের আবাসকক্ষ। দেখে মনে হয়, খোলা বড় অংশটি ছিল মিলনায়তন। যে মন্দিরের কাঠামো পাওয়া গেছে তার মাঝখানে বর্গাকার মণ্ডপ এবং চারপাশে ধাপে ধাপে উন্নিত প্রদক্ষিণ পথ আছে। এখানে প্রায় ৮০০ প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ব্রোঞ্জ নির্মিত ধ্যানমগ্ন বুদ্ধমূর্তি, রৌপ্য মুদ্রা, পোড়া মাটির ফলক, পোড়া মাটির সীল মোহর, ধুপদানী, পিরিচ, মাটির পাত্র, অলঙ্কৃত ইট ইত্যাদি। নানান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুযায়ী এই প্রত্নস্থলের সময়কাল খৃস্টীয় ৭ম-৯ম শতক।

 

কিভাবে যাবেন?

বগুড়া থেকে ভাসু বিহারের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। বগুড়া শহর থেকে সিএনজি বা অটো রিকশায় গোকুল মেধ রোড দিয়ে বীরশ্রেষ্ঠ স্কোয়ারে ঢুকে ভাসু বিহার যাওয়া যায়।

 

কোথায় থাকবেন?

বগুড়ায় অবস্থিত আবাসিক হোটেলের মধ্যে মম ইন, হোটেল নাজ গার্ডেন, পর্যটন মোটেল, সেফওয়ে মোটেল, সেঞ্ছুরি মোটেল, মোটেল ক্যাসেল উল্লেখযোগ্য।

 

কোথায় খাবেন?

বগুড়া শহরে সাথী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, মায়ের দোয়া হোটেল, অতিথি গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, চাপ কর্নার ও হোটেল সাফিনার মতো বেশকিছু রেস্টুরেন্ট আছে। তবে অবশ্যই বগুড়া শহরের বিখ্যাত দইয়ের স্বাদ নিতে ভুল করবেন না।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?