লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি | Lokkhon Saha Zamindar Bari 16/01/2022


PC:


শত বছরেরও বেশি পুরনো নরসিংদীর লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি (Lokkhon Saha Zamindar Bari)। ক্রমবর্ধমান আধুনিকতার ছোঁয়া এড়িয়েও আপন জৌলুসে এখনও দাঁড়িয়ে আছে এই প্রাচীন রাজ বাড়িটি। নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা বাজারে আজও দাঁড়িয়ে আছে জমিদার লক্ষণ সাহার রাজবাড়িটি। শতবর্ষী এই রাজ বাড়িটির কারুকার্যখচিত শৈল্পিক ছোঁয়া সহজেই পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

 

জমিদার লক্ষণ সাহা এই জমিদার বংশের মূল গোড়াপত্তনকারী। তবে কবে নাগাদ এই জমিদার বংশ এবং জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার সঠিক তথ্য জানা যায়নি। এই জমিদার বংশধররা অন্য জমিদারের আওতাভুক্ত ছোট জমিদার ছিলেন। তবে তাদের কখনো তারা যে জমিদারের আওতাভুক্ত ছিলেন তাদেরকে বা ব্রিটিশ সরকারকে খাজনা দিতে হয়নি। কারণ এই জমিদারী এলাকাটি ভারত উপমহাদেশের মধ্যে একমাত্র এলাকা ওয়াকফ হিসেবে ছিল। লক্ষণ সাহার ৩ ছেলের নাম পেরিমোহন সাহা, নিকুঞ্জ সাহা ও বঙ্কু সাহা। এদের মধ্যে ছোট ছেলে বঙ্কু সাহা ভারত ভাগের সময় ভারতে চলে যান। এরপর পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অল্প কিছুদিন আগে বড় ছেলে নিকুঞ্জ সাহাও ভারতে চলে যান। থেকে যান মেঝো ছেলে। তার ছিল এক পুত্র সন্তান। যার নাম ছিল বৌদ্ধ নারায়ণ সাহা। এই বৌদ্ধ নারায়ণ সাহাই পরবর্তীতে আহম্মদ আলী উকিলের কাছে উক্ত বাড়িটি বিক্রি করে দেন। তাই আহম্মদ আলী সাহেব পেশায় একজন উকিল হওয়াতে বর্তমানে অনেকে এই বাড়িটিকে উকিল বাড়ি নামেও চিনে।

 

হাতে সময় থাকলে লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ির কাছে অবস্থিত আরো ৩ টি জমিদার বাড়ি দেখে আসতে পারেন। বাড়িগুলোর মধ্যে আছে সুদান সাহার বাড়ি, বিশাল আয়তনের কুন্ডু সাহার জমিদার বাড়ি এবং নরসিংদীর মাধবদিতে রয়েছে বালাপুর বিধান সাহার জমিদার বাড়ি। শৈল্পিক কারুকার্য খচিত বালাপুর বিধান সাহার জমিদার বাড়িতে যেতে মাধবদী বাজার বা মাধবদি বাস স্ট্যান্ড থেকে অটো রিকশা নিয়ে সহজে ঘুরে আসতে পারবেন। জানা যায় বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহরে লক্ষণ সাহার বংশধরের একাংশ বসবাস করছেন।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকার গুলিস্তানের সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্সের সামনে থেকে মেঘালয় লাক্সারী বাসে পাঁচদোনা মোড় নেমে চাইলে পাঁচদোনা বাজারের কাছে পবিত্র কোরআনের বাংলা অনুবাদকারী গিরিশ চন্দ্র সেনের বাড়িটি ঘুরে আসতে পারেন। পাঁচদোনা মোড় থেকে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়ায় ডাংগা বাজার পৌঁছে রিক্সা কিংবা পায়ে হেঁটে অনায়াসে উকিলের বাড়ি বা লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়িতে চলে যেতে পারবেন।

 

টংগী কিংবা আবদুল্লাহপুর থেকে জমিদার বাড়ি দেখতে হলে বাস বা লেগুনায় চড়ে কালিগঞ্জ আসতে হবে। কালিগঞ্জ নদীর ঘাটে যে কাউকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নিতে পারেন ডাংগা যেতে হলে কোন দিকের নৌকায় চড়বেন। নদী পাড়ি দিয়ে ডাংগা যাওয়ার সিএনজি, রিকশা এবং অটো পাওয়া যায়। ঘাট থেকে ডাংগা বাজারের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার।

 

ঢাকার বনানী, মহাখালী কিংবা উত্তরা থেকে লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়িতে যেতে কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে ৩০০ ফিট দিয়ে কাঞ্চন ব্রিজ অতিক্রম করে মায়ার বাড়ির মোড়ে ডাংগা যাওয়ার অটোরিক্সা পাবেন। আর ডাংগা বাজার থেকে উকিলের বাড়ি বা লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ির দূরত্ব মাত্র ১ কিলোমিটার।

 

কোথায় খাবেন?

চাইলে ডাংগা বাজারে পৌঁছে দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে পারবেন। এছাড়া ডাংগা বাজারে দুপুর বেলা অর্থাৎ ১২ টা হতে ১ টা সময়ের মধ্যে আব্দুল হাই-য়ের আলুর চপ ও দই খেয়ে দেখতে পারেন।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?