ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
ভরত রাজার দেউল দক্ষিণের জনপদ যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলা থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রায় ১৮০০ বছর আগে গুপ্ত যুগে এ বিশাল আকৃতির সপ্তকটি নির্মাণ করেছিলেন ভরত রাজা যা বর্তমানে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের প্রতীক। কালের সাক্ষী হিসেবে সগৌরবে এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ভরত ভায়নার দেউল যা স্থানীয়দের কাছে দীর্ঘদিন ধরে ভরতের দেউল বেশী পরিচিত।
ধারণা করা হয়, ভরতের দেউল প্রাচীন গুপ্ত যুগের খ্রিষ্টীয় ২য় শতকে নির্মিত হয়েছে। প্রায় ১৮০০ বছর আগে ভরত নামের তৎকালীন এক প্রভাবশালী রাজা ভদ্রা এই নদীর তীরবর্তী এলাকাসহ সুন্দরবনের অনেকাংশে রাজত্ব আদায় করেছিলেন। কালের আবর্তে তার স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তিনি ভদ্রা নদীর তীরে ভরত ভায়না নির্মাণ করেন যা পরবর্তিতে ভরতের দেউল বা ভরত রাজার দেউল নামে পরিচিতি পায়। ইতিহাস থেকে আরো জানা যায়, প্রত্নস্থানে খ্রিস্টীয় বিশ শতকের গোড়ার দিকে ১২ দশমিক ২২ মিটার উঁচু এবং ২৬৬ মিটার পরিধি বিশিষ্ট একটি ঢিবির অস্তিত্ব ছিল।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে সাত অর্থ বছরের বরাদ্দ পেয়ে এ দেউলে খননের কাজ চালায়। খননের ফলে দেউলটির পূর্ণ অবয়ব মানুষের দৃষ্টিতে আসে। কিন্তু খননের ফলে জানা যায় ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে এ দেউলের উপরিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খননে সমগ্র প্রাসাদটির ভিত থেকে শেষ পর্যন্ত মোট ৯৪টি কক্ষ পাওয়া যায়। চারপাশে চারটি উইং ওয়াল। এর মধ্যে ১২টি কক্ষ। বাকি ৮২টি কক্ষের সমন্বয়ে এ বৌদ্ধ স্তূপটি তৈরি। স্তূপটির চূড়ায় চারটি কক্ষ। এ কক্ষের দুই পাশে আরো আটটি ছোট ছোট কক্ষ রয়েছে। অধিকাংশ কক্ষগুলো মাটি দ্বারা পরিপূর্ণ। ধারণা করা হয় বৌদ্ধ সপ্তকের উপরিভাগে জাঁকজমকপূর্ণ একটি উপাসনালয় ছিল। প্রাসাদটির চারপাশে তিন মিটার চওড়া রাস্তা রয়েছে। উপাসনালয়ের চারপাশে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা প্রদক্ষিণ করে পূণ্য অর্জন করত। চারটি উইং দেয়ালে যে ঘরগুলো ছিল সম্ভবত সেগুলোতে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বসবাস করতেন বা অবসর সময় কাটাতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খননকার্য চলাকলীন যেসব পুরাকীর্তি ও জিনিসপত্র পাওয়া গেছে- তার মধ্যে পোড়া মাটির তৈরী নারীর মুখমন্ডল, নকশা করা ইট, মাটির ডাবর, পোড়ামাটির অলংকার এবং দেবদেবীদের টেরাকোটার ভগ্নাংশ উল্লেখযোগ্য। ভরতের দেউলে ব্যবহৃত টেরাকোটা ও ইটের আকার বাংলাদেশের অন্যান্য সকল প্রাচীন স্থাপনায় ব্যবহৃত টেরাকোটা ও ইটের মধ্যে সর্ববৃহৎ। স্থানীয় বাসীন্দাদের কাছে এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি ভরত রাজার দেউল নামে অধিক পরিচিত।
কীভাবে যাবেন?
যশোর জেলায় অবস্থান হলেও খুলনা থেকে ভরতের দেওল যাওয়া সহজ। বাস বা ট্রেনে খুলনা শহর পৌঁছে চুকনগরে চলে আসুন। সেখান থেকে ভ্যান অথবা মোটরসাইকেলে ভরতের দেউল দেখতে যেতে পারবেন। আবার অন্য পথে খুলনা হতে রিক্সা বা অটোতে চড়ে মহসিন মোড়ে আসতে হবে। মহসিন মোড় হতে শাহপুর বাজার এসে ভ্যানে চড়ে ভরতের দেউল যেতে পারবেন। মনে রাখা জরুরী ভ্যানচালকেরা জায়গাটিকে ‘ভরতের দেল’ নামে চেনে।
কোথায় খাবেন?
ভরতের দেউল দেখে চুকনগরের বিখ্যাত আব্বাসের হোটেলের খাসির মাংস খেয়ে দেখতে পারেন।