মীর্জানগর হাম্মামখানা | Mirzanagar Hammamkhana 08/09/2021


PC:


হাম্মামখানা সাধারণ কোনো স্নানঘর নয়। রাজা-বাদশাদের ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হতো এসব স্নানঘর। এসবে স্টিম বাথ থেকে শুরু করে পানি গরম করার ব্যবস্থাও ছিল। আরাম আয়েশের অনেক সুবিধাই ছিল এসব হাম্মামখানায়। মোগল বা প্রাক-মোগল সময়কালে এখানে বেশ কিছু হাম্মাম তৈরি করা হয়েছিল। সেসবের মধ্যে এখনো টিকে থাকা মীর্জানগর হাম্মামখানা। কেশবপুর উপজেলা সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে কপোতাক্ষ ও বুড়িভদ্রা নদীর ত্রিমোহিনীতে মীর্জা সফসিকানের বসবাসের এলাকাটির নাম রাখা হয় মীর্জানগর। মীর্জানগরের নবাববাড়িতে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন হাম্মামখানা, যা মীর্জানগর হাম্মামখানা  নামে পরিচিত।

 

বিভিন্ন ঐতিহাসিকগণদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলে নুরলা খাঁ অত্র এলাকার ফৌজদার নিযুক্ত হন। তিনি বুড়িভদ্রা নদীর তীরে পরিখা খনন করে মতিঝিল নামে দূর্গ নির্মাণ করেন। ১০ ফুট উঁচু প্রাচীরবেষ্টিত দূর্গের এক অংশে হাম্মামখানা স্থাপন করা হয়। মোগল স্থাপত্যশৈলীর অনুকরণে তৈরী হাম্মামখানায় ৪টি কক্ষ ও একটি কূপ রয়েছে। ৪ গম্বুজ বিশিষ্ট হাম্মামখানার পশ্চিম ও পূর্ব দিক দুইটি করে কক্ষ রয়েছে। তবে পূর্ব দিকের কক্ষগুলো চৌবাচ্চা হিসেবে ব্যবহার করা হতো। একমাত্র প্রবেশপথটি পশ্চিম দেয়ালে অবস্থিত এবং এর সঙ্গে সংযুক্ত ১৭ ফুট তিন ইঞ্চি মাপের বর্গাকৃতির কক্ষটি সম্ভবত প্রসাধন কক্ষ। কক্ষের চারপাশের প্রতিটি দেয়ালে রয়েছে একটি করে কুলুঙ্গি। প্রসাধন কক্ষ থেকে খিলানযুক্ত ধনুকাকার পথ দিয়ে সোজা অপর আরেকটি বর্গাকৃতি কক্ষে প্রবেশ করা যায়। এটি সম্ভবত পোশাক বদলানোর কাজে ব্যবহার করা হতো। হাম্মামখানার দক্ষিণ দিকে একটি চৌবাচ্চা ও সুড়ঙ্গ আছে। এটিকে তোশাখানা হিসাবে মনে করা হয়।

 

১৯৯৬ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এটিকে পুরাকীর্তি ঘোষণা করে। দেশের দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকরা এখানে হাম্মামখানা পরিদর্শনে আসেন। রক্ষণাবেক্ষণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না থাকায় এটি দেখে পর্যটকরা হতাশ হন। তাই এলাকার মানুষের দাবি, মীর্জানগর হাম্মামখানাটি সরকারিভাবে রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হোক।

 

কিভাবে যাবেন?

যশোর জেলা থেকে কেশবপুর উপজেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৩২ কিলোমিটার। স্থানীয় যেকোন পরিবহণ অথবা বাসে চড়ে যশোর থেকে কেশবপুর হয়ে ৭ কিলোমিটার দূরে মির্জানগর হাম্মামখানা যেতে পারবেন।

 

কোথায় খাবেন?

যশোরের বিখ্যাত জামতলার মিষ্টি, খেজুরের গুড়ের প্যারা সন্দেশ ও ভিজা পিঠা অবশ্যই খেয়ে দেখুন। এছাড়া চার খাম্বার মোড়ের ‘জনি কাবাব’ থেকে কাবাব, ফ্রাই, চাপ বা লুচি খেতে পারেন। সময় সুযোগ থাকলে ধর্মতলার মালাই চা এবং চুক নগরের বিখ্যাত চুই ঝাল খাবার টেস্ট করতে পারেন।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?