ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
১৯৩৬ সালে ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল জেলার চন্ডীকপুরের মহেষখোলা গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ জন্মগ্রহণ করেন৷ নূর মোহাম্মদের পিতার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মাতার নাম জেন্নাতুন্নেসা৷ কৃষক বাবার সন্তান নূর মোহাম্মদের গান থিয়েটারের মত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অনেক আগ্রহ ছিল৷ ১৯৫৯ সালের ১৪ মার্চ তিনি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে যোগদান করেন। ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই নূর মোহাম্মদকে দিনাজপুর থেকে যশোর সেক্টরে বদলির পর তিনি ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান। এরপর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ৮নং সেক্টর হতে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
৭১- এর ৫ সেপ্টেম্বর সুতিপুরে নিজস্ব প্রতিরক্ষার সামনে যশোর জেলার গোয়ালহাটি গ্রামে নূর মোহাম্মদকে অধিনায়ক করে পাঁচ জনের সমন্বয়ে গঠিত একটি স্ট্যান্ডিং পেট্রোল পাঠানো হয়। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে হঠাৎ পাকিস্তানী সেনাবাহিনী পেট্রোলটি তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। পেছনে মুক্তিযোদ্ধাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষা থেকে পাল্টা গুলিবর্ষণ করা হয়। তবু পেট্রোলটি উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। এক সময়ে সিপাহী নান্নু মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে নূর মোহাম্মদ নান্নু মিয়াকে কাঁধে তুলে নেন এবং হাতের এল. এম.জি দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করলে শত্রুপক্ষ পশ্চাৎপসরণ করতে বাধ্য হয়। হঠাৎ করেই শত্রুর মর্টারের একটি গোলা এসে লাগে তাঁর ডান কাঁধে। ধরাশয়ী হওয়া মাত্র আহত নান্নু মিয়াকে বাঁচানোর জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেন। হাতের এল.এম.জি সিপাহী মোস্তফাকে দিয়ে নান্নু মিয়াকে নিয়ে যেতে বললেন এবং মোস্তফার রাইফেল চেয়ে নিলেন যতক্ষণ না তাঁরা নিরাপদ দূরুত্বে সরে যেতে সক্ষম হন ততক্ষণে ঐ রাইফেল দিয়ে শত্রুসৈন্য ঠেকিয়ে রাখবেন এবং শত্রুর মনোযোগ তাঁর দিকেই কেন্দ্রীভুত করে রাখবেন। অন্য সঙ্গীরা তাদের সাথে অনুরোধ করলেন যাওয়ার জন্যে। কিন্তু তাঁকে বহন করে নিয়ে যেতে গেলে সবাই মারা পড়বে এই আশঙ্কায় তিনি রণক্ষেত্র ত্যাগ করতে রাজি হলেন না।
বাকিদের অধিনায়োকোচিত আদেশ দিলেন তাঁকে রেখে চলে যেতে। এদিকে সমানে গুলি ছুড়তে লাগলেন রক্তাক্ত নূর মোহাম্মদ। একদিকে পাকিস্তানী সশস্ত্রবাহিনী, সঙ্গে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রশস্ত্র, অন্যদিকে মাত্র অর্ধমৃত সৈনিক (ই.পি.আর.) সম্বল একটি রাইফেল ও সীমিত গুলি। এই অসম অবিশ্বাস্য যুদ্ধে তিনি শত্রুপক্ষের এমন ক্ষতিসাধন করেন যে তারা এই মৃত্যুপথযাত্রী যোদ্ধাকে বেয়নেট দিয়ে বিকৃত করে চোখ দুটো উপড়ে ফেলে। পরে প্রতিরক্ষার সৈনিকরা এসে পাশের একটি ঝাড় থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে। এই বীরসেনানীকে পরবর্তীতে যশোরের কাশিপুর গ্রামে সমাহিত করা হয়।
কিভাবে যাবেন?
রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক, রেল এবং আকাশপথে যশোর যেতে পারবেন। আর যশোর জেলা সদর থেকে বাস, প্রাইভেট কার কিংবা অটোতে চড়ে শার্শা উপজেলাস্থ ডিহি ইউনিয়নের পৌঁছে রিকশা যোগে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের মাজারে যাওয়া যায়। ভেঙ্গে যেতে চাইলে শার্শা রোড এ কামারবাড়ি স্ট্যান্ড থেকে লেগুনা দিয়ে কাশিপুর নামের জায়গা যেতে হবে। কাশিপুর স্ট্যান্ড থেকে একটু সামনে এগিয়ে হাতের বাম পাশে দুই মিনিট এগিয়ে গেলেই সমাধি দেখতে পাবেন।
ঢাকা থেকে বাসে যশোর : রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক, রেল এবং আকাশপথে যশোর যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ঢাকার কল্যাণপুর, গাবতলী এবং কলাবাগান থেকে সোহাগ, গ্রিন লাইন, শ্যামলী এবং ঈগল পরিবহণের বেশকিছু এসি ও নন-এসি বাস যশোরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। মানভেদে যশোরগামী নন-এসি বাসে ভাড়া ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা।
ঢাকা থেকে ট্রেনে যশোর : ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশান থেকে শনিবার বাদে সপ্তাহের ৬ দিন সকাল ৬ টা ২০ মিনিটে আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন যশোর অভিমুখে যাত্রা করে। চিত্রা এক্সপ্রেস নামক আর একটি আন্তঃনগর ট্রেন সোমবার ব্যতীত সপ্তাহের ৬ দিন সন্ধ্যা ৭ টার সময় যশোরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এসব ট্রেনে শ্রেণিভেদে টিকেটের মূল্য ৩৫০ থেকে ১২৬০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
কোথায় খাবেন?
যশোরের বিখ্যাত জামতলার মিষ্টি, খেজুরের গুড়ের প্যারা সন্দেশ ও ভিজা পিঠা অবশ্যই খেয়ে দেখুন। এছাড়া চার খাম্বার মোড়ের ‘জনি কাবাব’ থেকে কাবাব, ফ্রাই, চাপ বা লুচি খেতে পারেন। সময় সুযোগ থাকলে ধর্মতলার মালাই চা এবং চুক নগরের বিখ্যাত চুই ঝাল খাবার টেস্ট করতে পারেন।