চাঁচড়া শিব মন্দির | Chanchra Shiva Temple 08/09/2021


PC:


যশোরের সদর থানার চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে চাঁচড়া রাজবাড়ী অবস্থিত। চাঁচড়া শিব মন্দিরটি একটি ‘আট-চালা’ ধরনের মন্দির। ‘আট-চালা’ রীতি বাংলার মন্দির স্থাপত্যকলার বিশেষ এক ধরনের রীতি যেখানে বর্গাকার বা আয়তাকার গর্ভগৃহের ‘চৌ-চালা’ ছাদের উপরে আরেকটি ছোট ‘চৌ-চালা’ ছাদ নির্মান করা হয়। এই শিব মন্দিরটির সামনের দিকের তিনটি খিলান যুক্ত প্রবেশদ্বার আছে এবং পুরো মন্দিরের সন্মুখভাগ পোড়ামাটির ফলকে চমৎকার ভাবে অলংকৃত।

 

১৬৯৬ খ্রিষ্টাব্দে চাঁচড়ার রাজা মনোহর রায় এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন। পোড়ামাটির ফলকে নান্দ্যনিক ভাবে অলংকৃত মন্দিরের দৈর্ঘ্য ৯.৫ মিটার এবং প্রস্থ ৮.১৩ মিটার। চাঁচড়া শিবমন্দির তৈরীতে চুন, সুরকি ও বর্গাকৃতির ইট ব্যবহার করা হয়েছে। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক সতীশচন্দ্র মিত্রের ১৯১৪ সালে প্রকাশিত ‘যশোহর-খুলনার ইতিহাস’ নামক গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ডে ‘চাঁচড়া রাজবংশ’ অধ্যায়ে চাঁচড়ার শিবমন্দিরের কথা উল্লেখ আছে। প্রতি অমাবস্যা এবং পূর্ণিমায় এই মন্দিরে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এছাড়া শিবরাত্রি, দোল উৎসব, লোকনাথ বাবার পাদুকা উৎসবেও দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এসে যোগ দেন।

 

বর্তমানে চাঁচড়া শিবমন্দির বাংলাদেশ প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছে। ইউনেসকোর প্রত্নতাত্ত্বিক কোড অনুসরণ করে ২০০৮ সালে মন্দিরটির একবার সংস্কার করা হয়।

 

কিভাবে যাবেন?

যশোর সদরের ভৈরব চত্বর থেকে চাঁচড়া গ্রামের দূরত্ব মাত্র ৪ কিলোমিটার। যশোরের মনিহার সিনেমা হলের সামনে থেকে রিকশা বা ভ্যানে করে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে অবস্থিত চাঁচড়া শিবমন্দির দেখতে যেতে পারবেন।

 

ঢাকা থেকে বাসে যশোর
রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক, রেল এবং আকাশপথে যশোর যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ঢাকার কল্যাণপুর, গাবতলী এবং কলাবাগান থেকে সোহাগ, গ্রীণ লাইন, শ্যামলী এবং ঈগল পরিবহনের বেশকিছু এসি ও নন-এসি বাস যশোরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। মানভেদে যশোরগামী নন-এসি বাসে ভাড়া ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা।

 

ঢাকা থেকে ট্রেনে যশোর
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশান থেকে শনিবার ছাড়া সপ্তাহের ৬ দিন সকাল ৬ টা ২০ মিনিটে আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন যশোর অভিমুখে যাত্রা করে। এছাড়া চিত্রা এক্সপ্রেস নামক আর একটি আন্তঃনগর ট্রেন সোমবার ছাড়া সপ্তাহের অন্য ৬ দিন সন্ধ্যা ৭ টার সময় যশোরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এসব ট্রেনে শ্রেণিভেদে টিকেটের মূল্য শোভন ৩৫০, শোভন চেয়ার ৪২০, প্রথম শ্রেণি চেয়ার ৫৬০, প্রথম শ্রেণি বার্থ ৮৪০, স্নিগ্ধা এসি চেয়ার ৭০০ এবং এসি বার্থ ১২৬০ টাকা।

 

এছাড়া ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ডোমেস্টিক টার্মিনাল থেকে রিজেন্ট এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স ও নভো এয়ারের বিমান যশোরের উদ্দেশে নিয়মিত চলাচল করে।

 

কোথায় খাবেন?

যশোর আসলে এখানকার বিখ্যাত জামতলার মিষ্টি, খেজুরের গুড়ের প্যারা সন্দেশ ও ভিজা পিঠা মিস করা মোটেও উচিত হবে না। এছাড়া চার খাম্বার মোড়ের ‘জনি কাবাব’ থেকে কাবাব, ফ্রাই, চাপ বা লুচি খেতে পারেন। সেই সাথে ধর্মতলার মালাই চা এবং চুক নগরের বিখ্যাত চুই ঝাল খাবারের স্বাদ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করার কোন মানে নেই।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?