মধুপল্লী | Modhu palli 08/09/2021


PC:


ভ্রমণের কথা মাথায় এলেই চোখে ভেসে উঠে ঝর্ণা, সাগর, পাহাড়, হাওড় কিংবা গহীন অরণ্যের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। এ চিত্তাকর্ষক দৃশ্যের সঙ্গে যদি যোগ হয় ঐতিহাসিক কোনো ব্যক্তির নাম, তার শৈশব কাটানো পথঘাট, বসতবাড়ি ও তার কর্ম জীবনের নিদর্শন, তবে তো কথাই নেই। মনের খোরাক আর জ্ঞানের পিপাসা মেটাতে তাই ভ্রমণটা তাই হতে পারে যশোরের কেশবপুরের সাগরদাঁড়ি গ্রাম। যে গ্রামের নাম লেখা হয়েছে বইয়ের পাতায়। যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মেছিলেন বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তাঁর স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে সরকারী উদ্যোগে বাড়ি সংরক্ষণ করা হয়েছে, নাম দেয়া হয়েছে মধুপল্লী। যশোর শহর থেকে কবিবাড়ির দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার।

 

মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রপিতামহ রাম কিশোর দত্ত খুলনা জেলার গোপালপুর গ্র্রামের বাস করতেন। পরবর্তীতে মাইকেল মধুসূদন দত্তের পিতামহ রামনিধি দত্ত যশোরের সাগরদাঁড়ি গ্রামে স্থানান্তরিত হয়ে জমিদারি ক্রয় করে দেবালয় স্থাপন করেন। নদের তীরে কবির স্মৃতি বিজড়িত কাঠবাদাম গাছের গোড়া সান বাধানো। বয়সের ভারে মৃতপ্রায় বাদাম গাছ ও বিদায় ঘাট পর্যটকদের আকর্ষণ করে। কথিত আছে, ১৮৬২ সালে কবি যখন সপরিবারে সাগরদাঁড়িতে এসেছিলেন তখন ধর্মান্তরিত হওয়ার কারণে জ্ঞাতিরা তাঁকে বাড়িতে উঠতে দেয় নি। তখন কবি এই ঘাটের কাঠবাদাম গাছের তলায় তাঁবু খাটিয়ে ১৪ দিন অবস্থান করে কলকতায় চলে যান। এর পর তিনি আর দেশে ফেরেননি।

 

১৯৬৫ সালে ২৬ অক্টোবর তদানীন্তন সরকার বাড়িটি পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৬৮ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বাড়িটি সংস্কার করে এবং ১৯৯৬-২০০১ সালে এলাকাটি দেয়াল বেষ্টিত করে একটি কুটিরের আদলে গেট, একটি মঞ্চ, দুটি অভ্যর্থনা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এ সময় বাড়ির সমুদয় স্থাপনাকে পুনঃসংস্কার করে বর্তমান রূপ দেয়া হয়।

 

মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত এবং অক্টোবর থেকে মার্চ মাস প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। প্রতি সাপ্তাহের রবিবার এবং সকল সরকারী ছুটির দিনে মধুপল্লী সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা। আর বিদেশি পর্যটকদের প্রবেশে ১০০ টাকা ব্যয় করতে হয়। মধুপল্লীতে বাসে জন্য ১০০ টাকা, মাইক্রেবাস ও জীপের জন্য ৫০ টাকা এবং মোটর বাইকের জন্য ১০ টাকা পার্কিং খরচ প্রদান করতে হয়।

 

কিভাবে যাবেন?

মধুপল্লী যেতে হলে দেশের যেকোন প্রান্ত হতে যশোর জেলা শহরে এসে বাসে চড়ে কেশবপুর আসতে হবে। কেশবপুর থেকে রিকশা যোগে সাগরদাঁড়ি গ্রামের মধুপল্লী পৌঁছাতে পারবেন। যশোর জেলা শহর থেকে মধুপল্লীর দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার।

 

কোথায় খাবেন?

যশোরের বিখ্যাত জামতলার মিষ্টি, খেজুরের গুড়ের প্যারা সন্দেশ ও ভিজা পিঠা খেয়ে দেখতে পারেন। এছাড়া সময় সুযোগ থাকলে ধর্মতলার মালাই চা এবং চুক নগরের বিখ্যাত চুই ঝাল খাবারের স্বাদও নিতে পারেন।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?