ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
সিলেটের মাটিতে যেসব পীর, দরবেশ শায়িত আছেন এদের মধ্যে হযরত শাহজালাল (রঃ) অন্যতম, এজন্য তাঁকে ওলিকুল শিরোমণি বলা হয়। তাঁর পুরো নাম শায়খ শাহ জালাল কুনিয়াত মুজাররদ। ৭০৩ হিজরী মোতাবেক ১৩০৩ ইংরেজী সালে ৩২ বত্সর বয়সে ইসলাম ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে অধুনা বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এসেছিলেন বলে ধারনা করা হয়। হযরত শাহ জালাল (রঃ) সকল ধর্মের মানুষের কাছে সমাদৃত ছিলেন। তাই প্রতি বছর হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজার জিয়ারতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের ঢল দেখা করা যায়।
দরবেশী জীবনঃ
জন্ম গত ভাবে শাহ জালাল দরবেশ পরিবারে জন্ম নিয়েছেন। জানা যায়, তাঁর পিতা ছিলেন একজন ধর্মানুরাগী মোজাহিদ, ইয়্যামনে ধর্ম যুদ্ধে তিনি নিহত হন এবং তার মাতার দিক দিয়ে তিনি সৈয়দ বংশের প্রখ্যাত দরবেশ সৈয়দ জালাল সুরুখ বোখারীর দৌহিত্র ছিলেন।তদুপরি দরবেশ আহমদ কবির তাঁর মামা, যাঁকে শাহ জালালের শিক্ষা গুরু হিসেবে পাওয়া যায়, তিনিও তত্কালের একজন বিখ্যাত দরবেশ ছিলেন বলে উল্লেখ রয়েছে। আহমদ কবির যখন শাহ জালালের লালন পালনের ভার গ্রহণ করেন সেই ছোট বেলা থেকেই তাঁকে দরবেশী তর-তরিকায় জীবন যাপনের প্রণালি শিক্ষা দিয়েছন বলেও পাওয়া যায়।
গজার মাছঃ
হযরত শাহজালাল (রঃ) এর মাজারের উত্তরদিকে একটি পুকুর রয়েছে। আর এই পুকুরের শোভা বর্ধন করে আছে অসংখ্য গজার মাছ। কথিত আছে হযরত শাহজালাল (রঃ) সিলেট আসার সময় এ মাছ নিয়ে এসেছিলেন। মাজারের পাশেই একটি কূপ রয়েছে যেখানে সোনালী ও রুপালী রঙের মাছে দেখা যায়।
জালালী কবুতরঃ
জনশ্রুতি আছে হযরত শাহজালাল (র:) এর আধ্যাত্মিক ক্ষমতার কথা জানতে পেরে হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়া (র:) তাঁকে সাদরে গ্রহণ করেন এবং নিদর্শন স্বরূপ তাঁকে একজোড়া সুরমা রঙের কবুতর উপহার দেন যা বর্তমানে জালালী কবুতর নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত। মাজারের ঝাঁকেঝাঁকে কবুতর আগতদের বিনোদিত করে।
চিল্লাখানাঃ
মাজারের দক্ষিণে গ্রীলঘেরা তারকা খচিত মাত্র দু’ফুট চওড়া একটি ঘরটি রয়েছে। এটি হযরত শাহজালাল (রঃ) চিল্লাখানা হিসাবে ব্যবহার করতেন। লোকমুখে শুনা যায়, হযরত শাহজালাল (রঃ) এখানে প্রায় ২৩ বছর আরাধনা করে কাটিয়েছেন। দরগাহ মাদ্রাসা বিল্ডিংয়ের মধ্য দিয়ে বাঁ দিকে মুফতি নাজিমুদ্দিন আহমদের বাড়িতে হযরত শাহজালাল (রঃ) এর ব্যবহৃত তলোয়ার, খড়ম, প্লেট, বাটি ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিস দর্শনার্থীদের দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। মাজারের পূর্ব দিকে একতলা ঘরের ভেতরে বড় তিনটি ডেকচি রয়েছে। এগুলো ঢাকার মীর মুরাদ দান করেছেন বলে জানা যায়। মীর মুরাদ ঢাকার হোসেনী দালান তৈরী করেন। যদিও ডেকচিগুলোতে রান্নাবান্না হয় না, তবুও কথিত আছে প্রত্যেকটিতে সাতটি গরুর মাংস ও সাত মণ চাল এক সাথে রান্না করা যায়। প্লেট ও বাটি সংরক্ষিত আছে দরগাহ’র মোতওয়ালিস্নর বাড়িতে। এগুলো দেখতে প্রতিদিন উৎসুক মানুষের ভীড় জমে।
রাজস্বমুক্ত সিলেটঃ
হযরত শাহজালাল (র.) ছিলেন কামনাবাসনামুক্ত নির্লোভ সূফি সাধক। কথিত আছে, দিলস্নীর সম্রাট তাঁকে নবাবী প্রদান করে একটি সনদ পাঠান। হযরত শাহজালাল (র.) তা প্রত্যাখ্যান করেন এই বলে যে, তিনি সংসারবিরাগী ফকির, তাঁর নবাবীর প্রয়োজন নেই। এক পর্যায়ে সম্রাট তাঁকে সিলেটের জায়গীর গ্রহণ করতে অনুরোধ করেন। হযরত শাহজালাল (র.) তাতেও রাজি হননি।শেষে সম্রাট আলাউদ্দিন খিলজি হযরত শাহজালালের (র.) প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করে সিলেট শহরকে রাজস্বমুক্ত (কসবে) বলে ঘোষণা দেন। এ কারণে আজো সিলেট শহরের ভূমি রাজস্ব থেকে মুক্ত।
কিভাবে যাবেন?
সিলেট রেল স্টেশন অথবা কদমতলী বাস স্ট্যান্ড হতে সিএনজি, রিকশা বা অটোরিকশা দিয়ে সহজেই মাজারে যাওয়া যায়। রিকশায় গেলে সাধারণত ভাড়া লাগে ২০-২৫ টাকা আর সিএনজিতে গেলে ৮০-১০০ টাকা ভাড়া লাগবে।
কোথায় খাবেন?
সিলেটর জিন্দাবাজার এলাকার পানসী, পাঁচ ভাই কিংবা পালকি রেস্টুরেন্টের সুলভ মূল্যে পছন্দমত নানা রকম দেশী খাবার খেতে পারেন। এইসব রেস্টুরেন্টের বাহারী খাবার পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়া সিলেট শহরে বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্ট আছে, আপনার পছন্দ মত যে কোন জায়গায় খেয়ে নিতে পারেন।