ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী | Bhawal Raj Shamshanswari 12/01/2022


PC:


PC:Nahid Al Hasan

গাজীপুরের জয়দেবপুরে অবস্থিত ভাওয়াল রাজবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে মৃতপ্রায় চিলাই নদের দক্ষিণ তীরে ৫ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত ভাওয়াল রাজশ্মশানেশ্বরী (Bhawal Raj Shamshanswari)। এটি ছিল ভাওয়াল রাজপরিবারের সদস্যদের শবদাহের স্থান। পরিবারের মৃত সদস্যদের নামে নামফলক ও সৌধ এছাড়াও শ্মশান চত্বরে মোগল স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত ৬ স্তম্ভবিশিষ্ট একটি শিবমন্দির রয়েছে। কালী নারায়ণের শাসনামলে ভাওয়াল রাজবাড়ী এবং ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী নির্মাণ করা হয়। প্রচলিত আছে, ভারতের বিখ্যাত স্থপতি কামাক্ষ্যা রায় এই শ্মশানেশ্বরীর নকশা করেন। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের প্রত্ন ঐতিহ্যের অংশ।

 

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ভাওয়াল এলাকার জমিদারদের পূর্বপুরুষ বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলার বজ্রযোগিনী গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। এই গ্রামেরই বাসিন্দা বলরাম রায় ১৮ শতকের চল্লিশ দশকে গাজীপুরের ভাওয়াল পরগনার জমিদার দৌলত গাজীর দেওয়ান হিসেবে কাজ করতেন। দৌলত গাজীর অনুপস্থিতিতে দীর্ঘদিন খাজনা প্রদান বাকি পড়ে যাওয়ায় ভাওয়াল জমিদারি নিলামে ওঠে। মুর্শিদকুলী খানের সঙ্গে সখ্য থাকায় বলরাম রায় কৌশলে এই জমিদারি হস্তগত করে ফেলতে সক্ষম হন। রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে মুর্শিদকুলী খান মুসলমান জমিদারদের স্থলে পূর্ববঙ্গে হিন্দু জমিদারদের নিযুক্ত করতেন।

 

বলরাম রায়ের মৃত্যুর(১৭৪৩) পর তার সুযোগ্য পুত্র কৃষ্ণরায় জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব পান। তিনি ভাওয়াল জমিদারিকে স্থায়ীরূপ দেন। কৃষ্ণ রায়ের মৃত্যুর(১৭৫০) পর তার পুত্র জয়দেব রায় ভাওয়াল জমিদারির উত্তরাধিকার নির্বাচিত হন এবং দক্ষতার সঙ্গে জমিদারি পরিচালনা করেন। তার নামানুসারেই ভাওয়াল এলাকার নামকরণ হয় জয়দেবপুর। জয়দেব রায় ১৭৫৬ সালে মারা গেলে পরবর্তীতে ভাওয়াল জমিদারি এস্টেট পরিচালনার দায়িত্ব লাভ করেন তার ছেলে ইন্দ্রনারায়ণ রায়। ইন্দ্রনারায়ণ রায়ের মৃত্যুর পর ধারাবাহিকভাবে তাদের উত্তরাধিকারীরা ভাওয়াল জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। ১৮৫৬ সালে উত্তরাধিকারীদের একজন গোলক নারায়ণের মৃত্যুর পর তার পুত্র কালী নারায়ণ রায় জমিদারি পরিচালনার ভার গ্রহণ করেন। বস্তুত তার সময়ই ভাওয়াল জমিদারির ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটে। কৃতিত্বের সঙ্গে জমিদারি পরিচালনার জন্য ব্রিটিশ সরকার কালী নারায়ণ রায়কে বংশানুক্রমে ব্যবহারের জন্য রায় চৌধুরী এবং রাজা উপাধি প্রদান করেন।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে গাজীপুরগামী বাসে শিববাড়ী পৌঁছে রিকশায় চড়ে ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী যাওয়া যায়।

 

 

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?