ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
ঢাকার অদুরে গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামে ৪০ বিঘা জায়গার উপর প্রয়াত কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ কর্তৃক নির্মিত বাগানবাড়ী যা নুহাশ পল্লী (Nuhash Polli) নামে খ্যাত। এটি নুহাশ চলচিত্রের শুটিংস্পট ও পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র। ১৯৮৭ সালে ২২ বিঘা জমিতে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়ন শুরু করেন। হুমায়ূন পুত্র নুহাশের নামানুসারে নুহাশ পল্লী নামকরণ করা হয়।
নুহাশ পল্লীতে (Nuhash Polli) প্রবেশ পথের পরই হাতের বাঁ-পাশে শেফালি গাছের ছায়ায় নামাজের ঘর। এর পাশেই তিনটি পুরনো লিচুগাছ নিয়ে একটি ছোট্ট বাগান। লিচু বাগানের উত্তর পাশে জাম বাগান আর দক্ষিণে আম বাগান। এই প্রান্তরের বাম পাশের লিচু বাগানে শায়িত আছেন গল্পের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ। নুহাশ পল্লীর প্রবেশ পথ ধরে এগিয়ে গেলেই স্থানীয় স্থপতি আসাদুজ্জামান খানের ‘মা ও শিশু’ নামক ভাস্কর্যটি দেখেতে পাবেন। শিশুদের বিনোদনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ভুত ও ব্যাঙের আকারের ভাস্কর্য। এর পাশেই তৈরী করা হয়েছে আঁকাবাঁকা সুইমিং পুল। ভারতের প্রখ্যাত লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ এই সুইমিং পুলেই সাঁতার কেটেছিলেন।
সুইমিং পুল পেরিয়ে সামনে এগিয়ে গেলেই একে একে দেখতে পাওয়া যায় হুমায়ূন আহমেদের কটেজ, দাবা খেলার ঘর এবং বিশাল টিনশেডের বারান্দাসহ ‘বৃষ্টিবিলাস’ কটেজ। এই কটেজের বারান্দাতে বসেই হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি ও পূর্নিমা দেখতে পছন্দ করতেন। ঠিক উল্টো দিকেই রয়েছে তাঁর বিখ্যাত ট্রি হাউজ। নুহাশ পল্লীতে রয়েছে একটি ঔষধি গাছের বাগান। সব মিলিয়ে মনের মতো করেই ছেলের নামে রাখা নুহাশ পল্লীকে এক স্বপ্নজগত করে তুলেছেন হুমায়ূন আহমেদ। তাই আড়াইশ প্রজাতির সবুজ গাছের সেই নন্দন কাননে বারবারই ছুটে গেছেন তিনি। এছাড়া তিনি এখানে খেজুর গাছ এবং চা গাছ লাগিয়েছিলেন যা এখনও আছে। তিনি অতিথিদের বিভিন্ন গাছের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেন এবং একটি বিশেষ সুগন্ধিযুক্ত গাছের পাতার স্বাদ গ্রহনের আমন্ত্রন জানাতেন।
ঔষধি গাছের বাগানের পেছনে রয়েছে টিন এবং কাদামাটি দিয়ে তৈরি করা শুটিং স্পট। আর বাগানের সামনের দিকে রয়েছে মৎস্য কন্যা ও রাক্ষসের মূর্তি। এর পাশে কনক্রিট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ডাইনোসারের মূর্তি। নুহাশ পল্লীর সর্ব উত্তরে রয়েছে লীলাবতী দিঘি। এই দিঘির মাঝখানে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম দ্বীপ যা একটি কাঠের সেতুর সাথে যুক্ত। লীলাবতি দিঘির পাশেই রয়েছে ‘ভুতবিলাস’ নামক আরো একটি ভবন। জীবদ্দশায় সর্বশেষ নুহাশ পল্লীতে আসার পর হুমায়ুন আহমেদ ভুত বিলাসের উদ্বোধন করেছিলেন। তিনি মনে করতেন মধ্যরাতে ভুতবিলাসের বারান্দায় বসে থাকলে ভুতের দেখা পাওয়া যাবে। এছাড়াও সাজানো গুছানো নুহাশ পল্লীতে একটি দিন কাটানোর ক্ষণে ক্ষণেই আপনি সমস্ত নুহাশ পল্লীতে কবির অস্তিত্ব অনুভব করবেন।
কিভাবে যাবেন?
নুহাশ পল্লীতে যেতে প্রথমে গাজীপুরের হোতাপাড়া বাস স্ট্যান্ডে আসতে হবে। ঢাকা থেকে প্রভাতি, বনশ্রী ইত্যাদি বেশ কিছু বাস সার্ভিস চলাচল করে। ঢাকা থেকে হোতাপাড়া যেতে বাসে চড়ার স্থানভেদে ভাড়া লাগবে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। হোতাপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে টেম্পো, রিকশা অথবা সিএনজিতে করে নুহাশ পল্লী যাওয়া যায়। টেম্পোর ভাড়া লাগবে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। রিকশা ভাড়া লাগবে ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং সিএনজি ভাড়া লাগবে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। চাইলে নিজের ব্যাক্তিগত গাড়ি নিয়েও বেড়াতে যেতে পারবেন নুহাশ পল্লী।